ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

ছেলের দায়ের কোপে মায়ের মৃত্যু!

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৫:০৮:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২১
  • / ৪০ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় খাবার খাওয়ার সময় ধারালো দা দিয়ে জবেদা খাতুন (৪৫) নামের এক নারীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার দুপুরের সদর উপজেলার পদ্মবিলা ইউনিয়নে পিরোজখালী গ্রামে জবেদা খাতুনকে কুপিয়ে হত্যা করে তারই ছেলে মুকুল হোসেন (৩০)। প্রতিবেশিরা জবেদা খাতুনকে নিজ ঘরের মধ্যে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে  ছেলে মুকুলকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘাতক মুকুলকে আটক করে ও নিহতের লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। নিহত জবেদা খাতুন পিরোজখালী গ্রামের কাজিপাড়ার আহসান হাবীব ডাকুর স্ত্রী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছোটখাটো বিষয় নিয়ে প্রায়ই নিজের পিতা-মাতাকে মারধর করত মুকুল। এনিয়ে মাঝেমধ্যেই তাদের বাড়িতে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। এসব ঘটনায় গ্রামের লোকজন বখাটে মুকলকে শাসন করতে গেলে উল্টো মুকুলের মা-বাবা সেটার প্রতিবাদও করতো। কয়েক বছর আগে মুকুলের মা গর্ভবতী হয়। সে সময়ও বখাটে মুকুল নিজের মাকে গালিগালাজ করে পেটে লাথি মেরে তার গর্বের সন্তান নষ্ট করে দেয়।

স্থানীয়রা আরও জানায় নেশাগ্রস্থ বখাটে মুকুল এরপূর্বে দুটি বিয়ে করেছিলো। মাদক গ্রহণসহ মুকুলের বিভিন্ন অপকর্মের কারণে তাঁর দুই স্ত্রী সংসার ভেঙে তাকে ছেড়ে চলে যায়। তবে এই মুকুলের আগের পক্ষের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।

ঘাতক মুকুলের এক নিকটাত্মীয় জানান, ‘নিজের বাবা-মাকে মারধর করার কারণে বেশ কিছুুদন পূর্বে মুকুলের খালাতো ভাই মুকুলকে মারধর করেছিল। গতকাল ওই ঘটনার পরেও খালাতো ভাই বাড়িতে আসলে মুকুল বটি নিয়ে তাকেও মারতে যান। এসময় জবেদা খাতুন বটিটি কেড়ে নিলে খালাতো ভাই মুকলকে মারধর করে। পরে বিকেলে জবেদা খাতুন ভাত খেতে বসলে একটি ধারালো দা নিয়ে এসে নিজের মাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এসময় ঘটনাস্থলেই জবেদা খাতুনের মৃত্যু হয়। এদিকে ঘরের  মধ্যে জবেদা খাতুনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ঘাতক মুকুলের ছোট্ট ছেলে প্রতিবেশিদেরকে খবর দেয়। এসময় স্থানীয় ব্যক্তিরা মুকুলকে আটকে রেখে পুলিশকে খবর দেয়।

এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘বিকলে খবর পাই সদর থানাধীন পিরোজখালী গ্রামে নিজ মাকে হত্যা করেছে তারই আপন ছেলে। এই খবরের পর আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘাতক ছেলেকে আটক করা হয়েছে। একইসময়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, নেশাগ্রস্থ অবস্থায় কোনো বিষয় নিয়ে মায়ের সঙ্গে বিরোধ বাঁধে। তারই জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। এছাড়াও ঘাতক ছেলে মানসিকভাবে অসুস্থ কীনা? সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আগামীকাল (আজ) রোববার নিহতের লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ছেলের দায়ের কোপে মায়ের মৃত্যু!

আপলোড টাইম : ০৫:০৮:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২১

চুয়াডাঙ্গায় খাবার খাওয়ার সময় ধারালো দা দিয়ে জবেদা খাতুন (৪৫) নামের এক নারীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার দুপুরের সদর উপজেলার পদ্মবিলা ইউনিয়নে পিরোজখালী গ্রামে জবেদা খাতুনকে কুপিয়ে হত্যা করে তারই ছেলে মুকুল হোসেন (৩০)। প্রতিবেশিরা জবেদা খাতুনকে নিজ ঘরের মধ্যে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে  ছেলে মুকুলকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘাতক মুকুলকে আটক করে ও নিহতের লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। নিহত জবেদা খাতুন পিরোজখালী গ্রামের কাজিপাড়ার আহসান হাবীব ডাকুর স্ত্রী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছোটখাটো বিষয় নিয়ে প্রায়ই নিজের পিতা-মাতাকে মারধর করত মুকুল। এনিয়ে মাঝেমধ্যেই তাদের বাড়িতে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। এসব ঘটনায় গ্রামের লোকজন বখাটে মুকলকে শাসন করতে গেলে উল্টো মুকুলের মা-বাবা সেটার প্রতিবাদও করতো। কয়েক বছর আগে মুকুলের মা গর্ভবতী হয়। সে সময়ও বখাটে মুকুল নিজের মাকে গালিগালাজ করে পেটে লাথি মেরে তার গর্বের সন্তান নষ্ট করে দেয়।

স্থানীয়রা আরও জানায় নেশাগ্রস্থ বখাটে মুকুল এরপূর্বে দুটি বিয়ে করেছিলো। মাদক গ্রহণসহ মুকুলের বিভিন্ন অপকর্মের কারণে তাঁর দুই স্ত্রী সংসার ভেঙে তাকে ছেড়ে চলে যায়। তবে এই মুকুলের আগের পক্ষের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।

ঘাতক মুকুলের এক নিকটাত্মীয় জানান, ‘নিজের বাবা-মাকে মারধর করার কারণে বেশ কিছুুদন পূর্বে মুকুলের খালাতো ভাই মুকুলকে মারধর করেছিল। গতকাল ওই ঘটনার পরেও খালাতো ভাই বাড়িতে আসলে মুকুল বটি নিয়ে তাকেও মারতে যান। এসময় জবেদা খাতুন বটিটি কেড়ে নিলে খালাতো ভাই মুকলকে মারধর করে। পরে বিকেলে জবেদা খাতুন ভাত খেতে বসলে একটি ধারালো দা নিয়ে এসে নিজের মাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এসময় ঘটনাস্থলেই জবেদা খাতুনের মৃত্যু হয়। এদিকে ঘরের  মধ্যে জবেদা খাতুনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ঘাতক মুকুলের ছোট্ট ছেলে প্রতিবেশিদেরকে খবর দেয়। এসময় স্থানীয় ব্যক্তিরা মুকুলকে আটকে রেখে পুলিশকে খবর দেয়।

এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘বিকলে খবর পাই সদর থানাধীন পিরোজখালী গ্রামে নিজ মাকে হত্যা করেছে তারই আপন ছেলে। এই খবরের পর আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘাতক ছেলেকে আটক করা হয়েছে। একইসময়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, নেশাগ্রস্থ অবস্থায় কোনো বিষয় নিয়ে মায়ের সঙ্গে বিরোধ বাঁধে। তারই জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। এছাড়াও ঘাতক ছেলে মানসিকভাবে অসুস্থ কীনা? সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আগামীকাল (আজ) রোববার নিহতের লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হবে।’