ইপেপার । আজ সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় নানা আয়োজনে বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ-২০২২ উদ্যাপন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৩:৩৭:১৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০২২
  • / ১৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:‘সকলে মিলে এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধ করি’ প্রতিপাদ্যে চুয়াডাঙ্গায় নানা আয়োজনে বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ-২০২২ উদ্যাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদিক্ষণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাজিয়া আফরিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করছি। কারণ কোনো ধরণের চিকিৎসাপত্র কিংবা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছি। সামান্য অসুস্থতার কারণে এন্টিবায়োটিক গ্রহণ করছি। যেসব ওষুধগুলো ফার্মেসিতে বিক্রি নিষিদ্ধ, কিন্তু আমরা বিক্রি করছি। ড্রাগ অ্যাসোসিয়েশনের লাইসেন্স ছাড়া কোনো ফার্মেসি করার কথা না। ফার্মাসিস্ট ছাড়া অর্থাৎ ওষুধ সম্পর্কে যারা জানেন, তারা ছাড়া ওষুধ বিক্রি করা যাবে না। আমাদের জনবহুল এই দেশে অনেক ফার্মেসি প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের দক্ষ ফার্মাসিস্ট নেই। যে কারণে আমরা না বুঝেও এন্টিবায়োটিকের মতো ওষুধ বিক্রি করছি। আমাদের জন্য সামনে একটি ভয়াভহ পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে। করোনাকালে আমরা যেমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ছিলাম, ঠিক তেমনি অবস্থা বেঁচে থাকলে দেখবেন। আপনার জ্বর হয়েছে, কিন্তু জ্বর ভালো হবে না। কোনো ওষুধই কাজ করছে না। কারণ কী? কারণ হচ্ছে আপনি এত এন্টিবায়োটিক খেয়েছেন যা রেজিস্ট্যান্স হয়ে পরবর্তী কোনো মেডিসিন কাজ করার মতো শক্তি নেই।’ তিনি আরও বলেন, অনেক শিক্ষিত মানুষই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ সেবন করেন। অতিরিক্ত এন্টিবায়োটিক সেবনের ফলে আপনার শরীরে যদি ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়ে যায় এবং ওই ব্যাকটেরিয়ায় যদি আপনি আক্রান্ত হন, তাহলে আপনার মৃত্যু নিশ্চিত।’

আলোচনা সভার শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা ওষুধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক কে এম মুহসীনিন মাহবুব। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান, চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত রহমান।

এসময় আরও বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি মাসুদুর রহমান ও সাংবাদিক শাহ আলম সনি। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ‘এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বিশ্বব্যাপী ১০টি শীর্ষ স্বাস্থ্য হুমকির অন্যতম। প্রতিবছর এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহারের ফলে ১২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। ২০৫০ সালে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হবে এক কোটি মানুষ। ঐ সময়ে আর্থিক ক্ষতির মূল্যমান হবে ১০০ ট্রিলিয়ন ইউএস ডলার। তাই এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোধে প্রতিকার অপেক্ষা প্রতিরোধই উত্তম। এ লক্ষ্যে পরিচ্ছন্নতার স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। চিকিৎসক এবং ফার্মাসি পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি এবং কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খামার পর্যায়ে উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় নানা আয়োজনে বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ-২০২২ উদ্যাপন

আপলোড টাইম : ০৩:৩৭:১৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক:‘সকলে মিলে এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধ করি’ প্রতিপাদ্যে চুয়াডাঙ্গায় নানা আয়োজনে বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ-২০২২ উদ্যাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদিক্ষণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাজিয়া আফরিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করছি। কারণ কোনো ধরণের চিকিৎসাপত্র কিংবা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছি। সামান্য অসুস্থতার কারণে এন্টিবায়োটিক গ্রহণ করছি। যেসব ওষুধগুলো ফার্মেসিতে বিক্রি নিষিদ্ধ, কিন্তু আমরা বিক্রি করছি। ড্রাগ অ্যাসোসিয়েশনের লাইসেন্স ছাড়া কোনো ফার্মেসি করার কথা না। ফার্মাসিস্ট ছাড়া অর্থাৎ ওষুধ সম্পর্কে যারা জানেন, তারা ছাড়া ওষুধ বিক্রি করা যাবে না। আমাদের জনবহুল এই দেশে অনেক ফার্মেসি প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের দক্ষ ফার্মাসিস্ট নেই। যে কারণে আমরা না বুঝেও এন্টিবায়োটিকের মতো ওষুধ বিক্রি করছি। আমাদের জন্য সামনে একটি ভয়াভহ পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে। করোনাকালে আমরা যেমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ছিলাম, ঠিক তেমনি অবস্থা বেঁচে থাকলে দেখবেন। আপনার জ্বর হয়েছে, কিন্তু জ্বর ভালো হবে না। কোনো ওষুধই কাজ করছে না। কারণ কী? কারণ হচ্ছে আপনি এত এন্টিবায়োটিক খেয়েছেন যা রেজিস্ট্যান্স হয়ে পরবর্তী কোনো মেডিসিন কাজ করার মতো শক্তি নেই।’ তিনি আরও বলেন, অনেক শিক্ষিত মানুষই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ সেবন করেন। অতিরিক্ত এন্টিবায়োটিক সেবনের ফলে আপনার শরীরে যদি ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়ে যায় এবং ওই ব্যাকটেরিয়ায় যদি আপনি আক্রান্ত হন, তাহলে আপনার মৃত্যু নিশ্চিত।’

আলোচনা সভার শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা ওষুধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক কে এম মুহসীনিন মাহবুব। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান, চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত রহমান।

এসময় আরও বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি মাসুদুর রহমান ও সাংবাদিক শাহ আলম সনি। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ‘এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বিশ্বব্যাপী ১০টি শীর্ষ স্বাস্থ্য হুমকির অন্যতম। প্রতিবছর এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহারের ফলে ১২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। ২০৫০ সালে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হবে এক কোটি মানুষ। ঐ সময়ে আর্থিক ক্ষতির মূল্যমান হবে ১০০ ট্রিলিয়ন ইউএস ডলার। তাই এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোধে প্রতিকার অপেক্ষা প্রতিরোধই উত্তম। এ লক্ষ্যে পরিচ্ছন্নতার স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। চিকিৎসক এবং ফার্মাসি পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি এবং কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খামার পর্যায়ে উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে।’