ইপেপার । আজ রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় কিশোর-কিশোরীর আত্মহত্যা!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:২২:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ অগাস্ট ২০২২
  • / ১৯ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গার পৃথক স্থানে বিষপানে আমির হামজা সামাদ (১৩) নামের এক কিশোর মিনি খাতুন (১৫) নামের এক কিশোরীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাপসাতালে নেওয়ার পথে সামাদের মৃত্যু হয়। এদিকে, গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিনি খাতুনের মৃত্যু হয়। নিহত আমির হামজা সামাদ চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থানাধীন বড়শলুয়া গ্রামের ছাবড়িপাড়ার আতিয়ার রহমানের ছেলে বড় শলুয়া দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র এবং নিহত মিনি খাতুন চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়নের মিনাজপুর গ্রামের বাজারপাড়ার আফজাল হোসেনের মেয়ে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সামাদ হোসেন মাদ্রাসায় লেখাপড়া করত। মানুসিকভাবে অসুস্থ থাকায় পরিবারের সদস্যরা রাজশাহীসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে সামাদের চিকিৎসাও করিয়েছে। মাঝে মধ্যেই সে গাছের সঙ্গে মাথা ঠুকত। গত আগস্ট সকালে নিজ বাড়িতে থাকা ঘাসমারা বিষপান করে ফেলে। বিষয়টি জানতে পেরে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সামাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সদর হাসপাতাল থেকে সেদিনই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। একটু সুস্থ হলে রাজশাহী থেকে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাকে নিজ বাড়িতে নেয়। এদিকে, বাড়িতে নেওয়ার পর আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে গতকাল সকালে তাকে আবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুপুরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় সদর হাসপাতাল থেকে তাকে পুরনায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পরিবারের সদস্যরা সামাদকে নিয়ে রাজশাহী যাওয়ার পথে কুষ্টিয়ার হালসা এলাকায় পৌঁছালে তার মৃত্যু হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. উৎপলা বিশ্বাস বলেন, সকাল সাড়ে আটটার দিকে পরিবারের সদস্যরা সামাদকে জরুরি বিভাগে নেয়। সে বিষপানে অসুস্থ হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল বলে জানতে পারি। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে তাকে পুনরায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।

দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এইচ এম লুৎফুল কবির বলেন, পরিবারের সদস্যদের থেকে জানা যায় ছেলেটির মাথায় সমস্য ছিল। গত আগস্ট নিজ বাড়িতেই বিষপান করে। আজ (গতকাল) তার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে, তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়ায় লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপর দিকে, গতকাল সকালে বেলা দেড়টার দিকে নিজ বাড়িতেই বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে মিনি খাতুন। পরিবারের সদস্যরা জানায় মিনিও মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল। এরই মধ্যে সে বিষপান করে। দুপুরে পরিবারের সদস্যরা তার বিষপানের ঘটনা জানতে পেরে দ্রুত জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে সেখান থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়। এসময় সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মিনিকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে অবজারভেশনে রাখেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মিনির মৃত্যু হয়।

জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তাসনিম জ্যোতি জানান, মিনিকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা জরুরি নেয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে অবজারভেশনে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মিনির মৃত্যু হয়।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি, তদন্ত) স্বপন কুমার বলেন, জীবননগর থানাধীন মিনাজপুর গ্রামে বাবামায়ের ওপর অভিমান করে মিনি নামের এক কিশোরী বাড়িতে থাকা ঘাসমারা বিষপান করে। বেলা দেড়টার দিকে মিনির দাদী তাকে ডাকতে মিনির ঘরে গেলে তাকে শুয়ে থাকতে দেখে। এসময় মিনির মুখ থেকে বিষের গন্ধ পেয়ে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে জীবননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে সদর হাসপাতালে নেয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিনির মৃত্যু হয়। ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে, তবে অভিযোগ না থাকায় লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় কিশোর-কিশোরীর আত্মহত্যা!

আপলোড টাইম : ০৮:২২:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ অগাস্ট ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গার পৃথক স্থানে বিষপানে আমির হামজা সামাদ (১৩) নামের এক কিশোর মিনি খাতুন (১৫) নামের এক কিশোরীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাপসাতালে নেওয়ার পথে সামাদের মৃত্যু হয়। এদিকে, গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিনি খাতুনের মৃত্যু হয়। নিহত আমির হামজা সামাদ চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থানাধীন বড়শলুয়া গ্রামের ছাবড়িপাড়ার আতিয়ার রহমানের ছেলে বড় শলুয়া দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র এবং নিহত মিনি খাতুন চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়নের মিনাজপুর গ্রামের বাজারপাড়ার আফজাল হোসেনের মেয়ে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সামাদ হোসেন মাদ্রাসায় লেখাপড়া করত। মানুসিকভাবে অসুস্থ থাকায় পরিবারের সদস্যরা রাজশাহীসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে সামাদের চিকিৎসাও করিয়েছে। মাঝে মধ্যেই সে গাছের সঙ্গে মাথা ঠুকত। গত আগস্ট সকালে নিজ বাড়িতে থাকা ঘাসমারা বিষপান করে ফেলে। বিষয়টি জানতে পেরে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সামাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সদর হাসপাতাল থেকে সেদিনই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। একটু সুস্থ হলে রাজশাহী থেকে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাকে নিজ বাড়িতে নেয়। এদিকে, বাড়িতে নেওয়ার পর আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে গতকাল সকালে তাকে আবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুপুরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় সদর হাসপাতাল থেকে তাকে পুরনায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পরিবারের সদস্যরা সামাদকে নিয়ে রাজশাহী যাওয়ার পথে কুষ্টিয়ার হালসা এলাকায় পৌঁছালে তার মৃত্যু হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. উৎপলা বিশ্বাস বলেন, সকাল সাড়ে আটটার দিকে পরিবারের সদস্যরা সামাদকে জরুরি বিভাগে নেয়। সে বিষপানে অসুস্থ হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল বলে জানতে পারি। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে তাকে পুনরায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।

দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এইচ এম লুৎফুল কবির বলেন, পরিবারের সদস্যদের থেকে জানা যায় ছেলেটির মাথায় সমস্য ছিল। গত আগস্ট নিজ বাড়িতেই বিষপান করে। আজ (গতকাল) তার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে, তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়ায় লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপর দিকে, গতকাল সকালে বেলা দেড়টার দিকে নিজ বাড়িতেই বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে মিনি খাতুন। পরিবারের সদস্যরা জানায় মিনিও মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল। এরই মধ্যে সে বিষপান করে। দুপুরে পরিবারের সদস্যরা তার বিষপানের ঘটনা জানতে পেরে দ্রুত জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে সেখান থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়। এসময় সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মিনিকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে অবজারভেশনে রাখেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মিনির মৃত্যু হয়।

জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তাসনিম জ্যোতি জানান, মিনিকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা জরুরি নেয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে অবজারভেশনে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মিনির মৃত্যু হয়।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি, তদন্ত) স্বপন কুমার বলেন, জীবননগর থানাধীন মিনাজপুর গ্রামে বাবামায়ের ওপর অভিমান করে মিনি নামের এক কিশোরী বাড়িতে থাকা ঘাসমারা বিষপান করে। বেলা দেড়টার দিকে মিনির দাদী তাকে ডাকতে মিনির ঘরে গেলে তাকে শুয়ে থাকতে দেখে। এসময় মিনির মুখ থেকে বিষের গন্ধ পেয়ে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে জীবননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে সদর হাসপাতালে নেয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিনির মৃত্যু হয়। ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে, তবে অভিযোগ না থাকায় লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।