ইপেপার । আজ রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গার দোস্তে মেয়াদ উত্তীর্ণ কীটনাশক প্রয়োগে কপাল পুড়ল শিমচাষীর

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:২৭:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২২
  • / ১৯ বার পড়া হয়েছে

আরিফ হাসান, হিজলগাড়ী: চুয়াডাঙ্গা সদরের দোস্ত গ্রামে মেয়াদ উত্তীর্ণ কীটনাশক ওষুধ প্রয়োগে এক বিঘা জমির শিমখেত নষ্ট হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এক কৃষক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত কীটনাশক বিক্রেতার বিরুদ্ধে উপজেলা কৃষি অফিসে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষক।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নবগঠিত নেহালপুর ইউনিয়নের দোস্ত গ্রামের মোল্লাপাড়ার সলেমান ভুঁইয়ার ছেলে সাইদুর রহমান গত কয়েকদিন পূর্বে গ্রামের বসুতিপাড়ার ছানু মণ্ডলের ছেলে সঘোষিত কৃষি গবেষক জোব্বার আলীর কীটনাশকের দোকান থেকে বায়ার ক্রপসায়েন্স কোম্পানির ফলিকুর (১০০ মিলি) কীটনাশক ক্রয় করে নিজের এক বিঘা শিমের খেতে প্রয়োগ করেন। শিম খেতে উক্ত কীটনাশক প্রয়োগের ৩-৪ দিন পর থেকেই শিমের ফুল ও গাছের ডগা পুড়ে যেতে থাকে। এসময় তিনি দেখতে পান শিমের খেতে যে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে, তা মেয়াদ উত্তীর্ণ। বিষয়টি দোকানীকে জানালে তিনি বলেন, ‘শিম যখন নষ্ট হয়ে গেছে, আমি কিছু সার দিচ্ছি, সেগুলো জমিতে প্রয়োগ করো, আবার নতুন করে ঠিক হয়ে যাবে।’
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কৃষক জানান, অভিযুক্ত কীটনাশক ব্যবসায়ী জোব্বার আলী ইন্ডিয়ান ও বাংলাদেশী বিভিন্ন কীটনাশক মিশ্র করে নিজেই কীটনাশক তৈরি করে তা গ্রামের সহজ-সরল কৃষকদের মাঝে বিক্রি করে। যার ফলে গ্রামের অনেক কৃষক তার দোকান থেকে কীটনাশক ক্রয় করে ফসলে প্রয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া তিনি নিজেকে সাধারণ কৃষকদের কাছে কৃষি বিজ্ঞানী হিসেবেও পরিচয় দিয়ে থাকেন।

এ বিষয়ে বেগমপুর ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিকুর ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত শিমচাষী আমাকে বিষয়টি জানানোর পর আমি সরেজমিনে শিম খেত পরিদর্শন করেছি। শিম খেতে যে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়েছে, তার বোতলের গায়ে কোনো ডেট ও ব্যাচ নম্বর ছিল না। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক উপজেলা কৃষি অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তদন্তপূর্বক অভিযুক্ত দোকানীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত কীটনাশক বিক্রেতা জোব্বার আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিম চাষী সাইদুরকে বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য বলেছিলাম। এখন সে যেহেতু সাংবাদিকদের জানিয়েছে, তাই আমার এখন মিথ্যা কথা বলা ছাড়া উপায় নেই। কেউ আমার কাছে জিজ্ঞাসা করলে আমি বলব আমি তার কাছে কোনো কীটনাশক বিক্রি করিনি। আর আপনার (প্রতিবেদক) সাথে পরে যোগাযোগ করছি। আপাতত নিউজ করেন না।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গার দোস্তে মেয়াদ উত্তীর্ণ কীটনাশক প্রয়োগে কপাল পুড়ল শিমচাষীর

আপলোড টাইম : ০৭:২৭:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২২

আরিফ হাসান, হিজলগাড়ী: চুয়াডাঙ্গা সদরের দোস্ত গ্রামে মেয়াদ উত্তীর্ণ কীটনাশক ওষুধ প্রয়োগে এক বিঘা জমির শিমখেত নষ্ট হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এক কৃষক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত কীটনাশক বিক্রেতার বিরুদ্ধে উপজেলা কৃষি অফিসে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষক।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নবগঠিত নেহালপুর ইউনিয়নের দোস্ত গ্রামের মোল্লাপাড়ার সলেমান ভুঁইয়ার ছেলে সাইদুর রহমান গত কয়েকদিন পূর্বে গ্রামের বসুতিপাড়ার ছানু মণ্ডলের ছেলে সঘোষিত কৃষি গবেষক জোব্বার আলীর কীটনাশকের দোকান থেকে বায়ার ক্রপসায়েন্স কোম্পানির ফলিকুর (১০০ মিলি) কীটনাশক ক্রয় করে নিজের এক বিঘা শিমের খেতে প্রয়োগ করেন। শিম খেতে উক্ত কীটনাশক প্রয়োগের ৩-৪ দিন পর থেকেই শিমের ফুল ও গাছের ডগা পুড়ে যেতে থাকে। এসময় তিনি দেখতে পান শিমের খেতে যে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে, তা মেয়াদ উত্তীর্ণ। বিষয়টি দোকানীকে জানালে তিনি বলেন, ‘শিম যখন নষ্ট হয়ে গেছে, আমি কিছু সার দিচ্ছি, সেগুলো জমিতে প্রয়োগ করো, আবার নতুন করে ঠিক হয়ে যাবে।’
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কৃষক জানান, অভিযুক্ত কীটনাশক ব্যবসায়ী জোব্বার আলী ইন্ডিয়ান ও বাংলাদেশী বিভিন্ন কীটনাশক মিশ্র করে নিজেই কীটনাশক তৈরি করে তা গ্রামের সহজ-সরল কৃষকদের মাঝে বিক্রি করে। যার ফলে গ্রামের অনেক কৃষক তার দোকান থেকে কীটনাশক ক্রয় করে ফসলে প্রয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া তিনি নিজেকে সাধারণ কৃষকদের কাছে কৃষি বিজ্ঞানী হিসেবেও পরিচয় দিয়ে থাকেন।

এ বিষয়ে বেগমপুর ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিকুর ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত শিমচাষী আমাকে বিষয়টি জানানোর পর আমি সরেজমিনে শিম খেত পরিদর্শন করেছি। শিম খেতে যে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়েছে, তার বোতলের গায়ে কোনো ডেট ও ব্যাচ নম্বর ছিল না। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক উপজেলা কৃষি অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তদন্তপূর্বক অভিযুক্ত দোকানীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত কীটনাশক বিক্রেতা জোব্বার আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিম চাষী সাইদুরকে বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য বলেছিলাম। এখন সে যেহেতু সাংবাদিকদের জানিয়েছে, তাই আমার এখন মিথ্যা কথা বলা ছাড়া উপায় নেই। কেউ আমার কাছে জিজ্ঞাসা করলে আমি বলব আমি তার কাছে কোনো কীটনাশক বিক্রি করিনি। আর আপনার (প্রতিবেদক) সাথে পরে যোগাযোগ করছি। আপাতত নিউজ করেন না।’