ইপেপার । আজ সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ নির্বাচনে টাকা নিয়ে ভোট না দেওয়ায় ক্ষোভ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩৭:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ অক্টোবর ২০২২
  • / ২৮ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটাররা টাকা নিয়ে ভোট দেননি বলে অভিযোগ করেছেন সামসাদ রানু নামে এক নারী প্রার্থী। ওই পরাজিত নারী প্রার্থী টাকা ফেরত পেতে ফেসবুকে পোস্ট করলে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভোটাররা। জানা গেছে, মাত্র ৬ ভোট পেয়ে পরাজিত হন তিনি। সদ্য অনুষ্ঠিত চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য পদে ১ নম্বর ওয়ার্ডে (চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গা) হরিণ প্রতিকে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন জেলা কৃষক লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা সামসাদ রানু।

এদিকে, গতকাল তিনি ফেসবুকে এক পোস্টে নির্বাচনে টাকা দিয়েও ভোট না দেওয়ায় ভোটারদের প্রতি ক্ষোভ জানান তিনি। ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমি সামসাদ রানু রাঙ্গাভাবী ২৭ ইউনিয়ন পরিষদের সকল চেয়ারম্যানসহ মেম্বারদের নগদ (১০) দশ হাজার করে টাকা দিয়েছি। টাকা আমি দিতে চেয়েছিলাম না কিন্তু অবশেষে টাকা দিতে বাধ্য হয়েছিলাম। কারণ সবাই মাঠে টাকা দিয়েছে। এই চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা কত নিকৃষ্ট মনের মানুষ, কত নীচ মনের মানুষ, কতটা বেঈমান, কতটা নোংরা হলে এরা সবার কাছ থেকে টাকা নিতে পারে।

যাদের কোনো বিবেক নাই। এরা সমাজের কীট, এরা কীভাবে সমাজের ন্যায়-অন্যায় বিচার করবে, এরা তো নিজেরাই তো অপরাধী তাই না। এসব প্রতিনিধি সমাজের সবচেয়ে নিকৃষ্ট ভিক্ষুক!!! আমার পাশে চেয়ারম্যানরা সকল সদস্যদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে, এরা (৫০,০০০), (১,০০০০০) এরা কতটা নীচ মনের মানুষ, এরা সকল প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করেছে দশ হাজার, পঞ্চাশ হাজার ও এক লক্ষ টাকা করে। অথচ ভোট দেওয়ার অধিকার একটি করে, তিনজনকে দেবে তিনটা ভোট, কিন্তু টাকা নিয়েছে সকল প্রার্থীর কাছ থেকে। হায়রে সমাজের প্রতিনিধিরা, তোরা বঞ্চিত করলি সমাজের সবচেয়ে সৎ ও ভালো মানুষ টিকে!!!!’
এদিকে, নোট নিয়ে ভোট না দেওয়াসহ ভোট পরবর্তী টাকা উদ্ধারের এই অভিনব কৌশল জেলাজুড়ে টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও পরাজিত প্রার্থী ভোট পরবর্তী নোট উদ্ধারে জনমনে আলোড়ন তুলেছে। তবে ভোট বাণিজ্যের এ বিষয়টিকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন সচেতন মহল।

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া, খাদিমপুর, হারদী, বাড়াদী ও বেলগাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সাথে কথা হলে তারা এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করের। তারা প্রত্যেকেই এক বাক্যে বলেন, ওই নারী প্রার্থীর থেকে টাকা নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আমরা যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছি।

চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘ফেসবুক তো অফিসিয়ালি কোনো অভিযোগের স্থান না। আমাদের নিকট কেউ অফিসিয়ালি অভিযোগ দেন, তাহলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। আবার ওই প্রার্থীর কথা সত্য নাকি মিথ্যা, পরাজিত হয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন। তিনি নিজেই টাকা দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন তাহলে তিনিই প্রথম অপরাধ করেছেন। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

উল্লেখ্য, গত সোমবার (১৭ অক্টোবর) সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সংরক্ষিত সদস্য পদে ১ নম্বর ওয়ার্ডে (চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গা) প্রতিদ্বন্দ্বী বিথী খাতুন (টেবিলঘড়ি) ১১৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কাজল রেখা (বই) ১০১ ভোট পেয়েছেন। এছাড়াও মনিরা খাতুন (ফুটবল) ৯৩, সামশাদ রানু (হরিণ) ৬ ও হাসিনা খাতুন (মাইক) ১৪ ভোট পেয়েছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ নির্বাচনে টাকা নিয়ে ভোট না দেওয়ায় ক্ষোভ

আপলোড টাইম : ০৯:৩৭:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ অক্টোবর ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটাররা টাকা নিয়ে ভোট দেননি বলে অভিযোগ করেছেন সামসাদ রানু নামে এক নারী প্রার্থী। ওই পরাজিত নারী প্রার্থী টাকা ফেরত পেতে ফেসবুকে পোস্ট করলে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভোটাররা। জানা গেছে, মাত্র ৬ ভোট পেয়ে পরাজিত হন তিনি। সদ্য অনুষ্ঠিত চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য পদে ১ নম্বর ওয়ার্ডে (চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গা) হরিণ প্রতিকে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন জেলা কৃষক লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা সামসাদ রানু।

এদিকে, গতকাল তিনি ফেসবুকে এক পোস্টে নির্বাচনে টাকা দিয়েও ভোট না দেওয়ায় ভোটারদের প্রতি ক্ষোভ জানান তিনি। ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমি সামসাদ রানু রাঙ্গাভাবী ২৭ ইউনিয়ন পরিষদের সকল চেয়ারম্যানসহ মেম্বারদের নগদ (১০) দশ হাজার করে টাকা দিয়েছি। টাকা আমি দিতে চেয়েছিলাম না কিন্তু অবশেষে টাকা দিতে বাধ্য হয়েছিলাম। কারণ সবাই মাঠে টাকা দিয়েছে। এই চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা কত নিকৃষ্ট মনের মানুষ, কত নীচ মনের মানুষ, কতটা বেঈমান, কতটা নোংরা হলে এরা সবার কাছ থেকে টাকা নিতে পারে।

যাদের কোনো বিবেক নাই। এরা সমাজের কীট, এরা কীভাবে সমাজের ন্যায়-অন্যায় বিচার করবে, এরা তো নিজেরাই তো অপরাধী তাই না। এসব প্রতিনিধি সমাজের সবচেয়ে নিকৃষ্ট ভিক্ষুক!!! আমার পাশে চেয়ারম্যানরা সকল সদস্যদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে, এরা (৫০,০০০), (১,০০০০০) এরা কতটা নীচ মনের মানুষ, এরা সকল প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করেছে দশ হাজার, পঞ্চাশ হাজার ও এক লক্ষ টাকা করে। অথচ ভোট দেওয়ার অধিকার একটি করে, তিনজনকে দেবে তিনটা ভোট, কিন্তু টাকা নিয়েছে সকল প্রার্থীর কাছ থেকে। হায়রে সমাজের প্রতিনিধিরা, তোরা বঞ্চিত করলি সমাজের সবচেয়ে সৎ ও ভালো মানুষ টিকে!!!!’
এদিকে, নোট নিয়ে ভোট না দেওয়াসহ ভোট পরবর্তী টাকা উদ্ধারের এই অভিনব কৌশল জেলাজুড়ে টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও পরাজিত প্রার্থী ভোট পরবর্তী নোট উদ্ধারে জনমনে আলোড়ন তুলেছে। তবে ভোট বাণিজ্যের এ বিষয়টিকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন সচেতন মহল।

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া, খাদিমপুর, হারদী, বাড়াদী ও বেলগাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সাথে কথা হলে তারা এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করের। তারা প্রত্যেকেই এক বাক্যে বলেন, ওই নারী প্রার্থীর থেকে টাকা নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আমরা যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছি।

চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘ফেসবুক তো অফিসিয়ালি কোনো অভিযোগের স্থান না। আমাদের নিকট কেউ অফিসিয়ালি অভিযোগ দেন, তাহলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। আবার ওই প্রার্থীর কথা সত্য নাকি মিথ্যা, পরাজিত হয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন। তিনি নিজেই টাকা দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন তাহলে তিনিই প্রথম অপরাধ করেছেন। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

উল্লেখ্য, গত সোমবার (১৭ অক্টোবর) সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সংরক্ষিত সদস্য পদে ১ নম্বর ওয়ার্ডে (চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গা) প্রতিদ্বন্দ্বী বিথী খাতুন (টেবিলঘড়ি) ১১৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কাজল রেখা (বই) ১০১ ভোট পেয়েছেন। এছাড়াও মনিরা খাতুন (ফুটবল) ৯৩, সামশাদ রানু (হরিণ) ৬ ও হাসিনা খাতুন (মাইক) ১৪ ভোট পেয়েছেন।