সমীকরণ প্রতিবেদন:
চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির এপ্রিল মাসের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান। সভার শুরুতেই কার্যবিবরণী ও আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক জেলার সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত রহমান।

সভাপতির বক্তব্যে চুয়াডাঙ্গায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘আইনশৃঙ্খলা যেহেতু চলমান প্রক্রিয়া, সেহেতু কর্তব্যরতদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে সবসময় সতর্ক থেকে সর্বাত্মক দায়িত্বশীল হতে হবে। পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন ও আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উৎসব শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশসহ আমাদের সকলকেই আন্তরিক হতে হবে। শহরে যানজট নিরসনে সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী যেই হোক, তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইন প্রয়োগ করা হবে।’

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘জমির উর্বরতা ধরে রাখতে মাটিকাটা রোধে সংশ্লিষ্ট সকলেই সজাগ রয়েছে। রাতের অন্ধকারে মাটি চুরি ও মাটি কাটা ঠেকাতে প্রয়োজনে রাতেও পুলিশের সহযোগিতায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। সম্প্রতি মোবাইল ফোন নম্বর ক্লোন করে প্রতারক চক্র অঞ্চল ভেদে বিভিন্ন ব্যক্তির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজী করছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে অনমনীয় পদক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে। হাসপাতালে সরকারি নিয়ম মেনে সকাল ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত যাতে মেডিকেল অফিসারেরা নিষ্ঠার সাথে দায়িত্বপালন করেন, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সচেষ্ট হওয়ার পাশাপাশি হাসপাতাল এলাকা দালালমুক্ত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।’

সভায় পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম (বিপিএম, সেবা), সিভিল সার্জান ডা. সাজ্জাৎ হাসান, বিজিবি প্রতিনিধি, পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ^াস, জেলার চার উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বিজ্ঞ পিপি অ্যাড. বেলাল হোসেন, স্পেশাল পিটি আবু তালেব বিশ^াস, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিট সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শওকত আলী, জেলা জাসদ সেক্রেটারি হাজি অ্যাড. আকসিজুল ইসলাম রতন, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি সরদার আল আমিন, চুয়াডাঙ্গা বাস-মিনি বাস মালিক সমিতির সভাপতি মঈন উদ্দীন মুক্ত, জেলা কাজি সমিতির সভাপতি কাজী শামসুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, মোবাইল ফোনে প্রতারক চক্র ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দিনাজপুর রংপুর, রাজবাড়ী ও ফরিদপুর এলাকার পেশাদার প্রতারকের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। ইতঃমধ্যেই গ্রেপ্তারের লক্ষে সংশ্লিষ্ট থানায় তথ্য প্রদান করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন তাঁর বক্তব্যে পবিত্র মাহে রমজানে রোজদারদের সুস্থতার লক্ষে সেহরির সময় গোস্ত পরিহার করে ইফতারিতে ভাজাপোড়ার বদলে ফল-ফলাদির দিকে আগ্রহী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বেশি বেশি করে পানি পান করা অতিব জরুরি। বর্তমানে করোনাভাইরাস সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। চুয়ডাঙ্গা অনেকটাই ভালো অবস্থায় রয়েছে। টিকাকরণও প্রত্যাশিত গতিতে এগিয়ে চলেছে। হাসপাতালে নতুন তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত হয়েছেন। চিকিৎসকদের হাসপাতালে দায়িত্ব পালনে তিনি দেখবেন। সহযোগিতা চাইলে সিভিল সার্জন কার্যালয় সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। জেলায় স্বাস্থ্য সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষে আমাদের সকলকেই আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন বলেন, ‘মশা নিধনের চেষ্টা করেও আমরা প্রত্যাশিত ফল পাচ্ছি না। তবুও পৌরবাসীর স্বস্তি দিতে মশক নিধন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।’