ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদির মৃত্যু

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪৯:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ২৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চুয়াডাঙ্গায় ৮ বছর পূর্বের ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হাশেম আলী (৩৮) নামের এক কয়েদির মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত কয়েদি হাশেম আলী দামুড়হুদা উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের বকুল হোসেনের ছেলে। চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের জেল সুপার (অ.দা.) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিএম তারিক উজ-জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ৮ বছর ২ মাস পূর্বে (২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর) হাসেম আলী তাঁর গ্রামের এক কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করেন। পরবর্তীতে ওই কিশোরী গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এসময় বিষয়টি লোকমুখে জানাজানি হয়ে যায়। পরের বছর ২০১৪ সালের ১২ আগস্ট ভুক্তভোগী ওই কিশোরী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাসেম আলীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। এসময় মামলাটি আমলে নিয়ে দামুড়হুদা থানা পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।

দামুড়হুদা মডেল থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন মামলাটির তদন্তভার পান। তদন্তকালে তিনি বাদী ও তাঁর শিশু কন্যার ডিএনএ টেস্ট পরীক্ষা করান। ২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মামলার একমাত্র আসামি হাসেম আলীকে অভিযুক্ত করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক ও আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট সেলিম উদ্দীন খান আলোচিত এ মামলাটি পরিচালনা করেন।

পরবর্তীতে চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক জিয়া হায়দার এ মামলায় তিনজনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। শেষে ২০১৯ সালের ৭ এপ্রিল আসামি হাসেম আলীর বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। ওই রায়ে আরও উল্লেখ করা হয় ওই কিশোরীর শিশুকন্যার বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তাঁর ভরণপোষণের দায়িত্বভার রাষ্ট্রের।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. এ এস এম ফাতেহ আকরাম বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ড গঠন করে নিহত কয়েদির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্ত রিপোর্টের মাধ্যমে জানানো হবে।’ চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের জেলার শওকত হোসেন মিয়া বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন হাসেম আলী। এসময় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে কারাগারে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে দ্রুত সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। এসময় কয়েদি হাসেম আলীকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টা ২০ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত কয়েদির মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ে দুপুরেই ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্ত পরবর্তী আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে দুপুরের পরেই মরদেহ দাফনের জন্য পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হয়।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদির মৃত্যু

আপলোড টাইম : ০৯:৪৯:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চুয়াডাঙ্গায় ৮ বছর পূর্বের ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হাশেম আলী (৩৮) নামের এক কয়েদির মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত কয়েদি হাশেম আলী দামুড়হুদা উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের বকুল হোসেনের ছেলে। চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের জেল সুপার (অ.দা.) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিএম তারিক উজ-জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ৮ বছর ২ মাস পূর্বে (২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর) হাসেম আলী তাঁর গ্রামের এক কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করেন। পরবর্তীতে ওই কিশোরী গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এসময় বিষয়টি লোকমুখে জানাজানি হয়ে যায়। পরের বছর ২০১৪ সালের ১২ আগস্ট ভুক্তভোগী ওই কিশোরী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাসেম আলীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। এসময় মামলাটি আমলে নিয়ে দামুড়হুদা থানা পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।

দামুড়হুদা মডেল থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন মামলাটির তদন্তভার পান। তদন্তকালে তিনি বাদী ও তাঁর শিশু কন্যার ডিএনএ টেস্ট পরীক্ষা করান। ২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মামলার একমাত্র আসামি হাসেম আলীকে অভিযুক্ত করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক ও আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট সেলিম উদ্দীন খান আলোচিত এ মামলাটি পরিচালনা করেন।

পরবর্তীতে চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক জিয়া হায়দার এ মামলায় তিনজনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। শেষে ২০১৯ সালের ৭ এপ্রিল আসামি হাসেম আলীর বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। ওই রায়ে আরও উল্লেখ করা হয় ওই কিশোরীর শিশুকন্যার বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তাঁর ভরণপোষণের দায়িত্বভার রাষ্ট্রের।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. এ এস এম ফাতেহ আকরাম বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ড গঠন করে নিহত কয়েদির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্ত রিপোর্টের মাধ্যমে জানানো হবে।’ চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের জেলার শওকত হোসেন মিয়া বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন হাসেম আলী। এসময় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে কারাগারে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে দ্রুত সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। এসময় কয়েদি হাসেম আলীকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টা ২০ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত কয়েদির মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ে দুপুরেই ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্ত পরবর্তী আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে দুপুরের পরেই মরদেহ দাফনের জন্য পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হয়।’