ইপেপার । আজ সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সোলার প্লান্ট

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:১৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ নভেম্বর ২০২২
  • / ১৭ বার পড়া হয়েছে

মিঠুন মাহমুদ:সময় মতো জমিতে পানি দেওয়া নিয়ে ভাবতে হচ্ছে না, জন (দিনমজুর) কামায় করে পানি নিতে হচ্ছে না কৃষকদের এবং খরচ হচ্ছে অনেক কম। নানাবিধ সুবিধা পাওয়ায় জীবননগরে কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সোলার প্লান্ট। মাঠজুড়ে স্থাপন করা হয়েছে বিকল্প বিদ্যুৎ সোলার প্লান্ট।

কৃষি প্রধান এই দেশর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চুয়াডাঙ্গা। এ জেলার জীবননগর উপজেলার বেশিরভাগ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এ উপজেলায় ধান, পাট, মুগ, কলাই, সিম, টমেটা, পেয়ারা, ড্রাগন, মাল্টাসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। সম্প্রতি সময়ে ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং সময়মতো বিদ্যুৎ না পাওয়ায় রীতি মতো স্থানীয় কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েন। ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে সীমান্ত ইউনিয়নের হরিহরনগর, মেদেনীপুর, হরিপুর গ্রামের মাঠে ৭টি সোলার প্লান্ট স্থাপন করে স্থানীয় একটি এনজিও সংস্থা। ৭টি সোলার প্লান্টের আওতায় ২ হাজার ১২০ বিঘা জমিতে ধান, পাটসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ হচ্ছে।

বিকল্প সৌর বিদ্যুৎ সোলার প্লান্টের সেচ প্রকল্পের অধীনে চাষ করে কৃষকরা অনেক লাভবান হচ্ছে। প্রতি বিঘা জমিতে পানি দিতে আগে খরচ হত ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। হয়রানির শিকার হতে হতো প্রান্তিক কৃষকদের। বর্তমান ১ বিঘা জমিতে পানি দিতে খরচ হয় মাত্র আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। বিদ্যুৎ এবং ডিজেল নিয়ে কোনো চিন্তা নেই এ ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের কৃষকদের। সময় মতো জমিতে পানি দেওয়া যায় এবং খরচও অনেক কম হওয়ায় অনেকেই এই সোলার প্লান্টের পানি নিয়ে সেচ দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলেও জানান স্থানীয় কৃষকরা।
সীমান্ত ইউনিয়নের হরিহরনগর গ্রামের আইপিএম ক্লাবের সদস্য মাহাবুব আলম বলেন, সোলার প্লান্ট এই এলাকাতে স্থাপন হয়ে কৃষকদের অনেক উপকার হয়েছে। কৃষকরা জমিতে না গেলেও সোলার প্লান্ট কোম্পানির নিয়োগকৃত শ্রমিকরা ঠিক সময় মতো জমিতে পানি দিয়ে দেয়। এতে একটি বাড়তি সুবিধা পায় কৃষকরা। আগে জমিতে পানি দিতে জন কামায় করতে হতো, এখন সেটা আর করতে হচ্ছে না।

একই গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আব্দুল হামিদ বলেন, ‘এক সময় জমিতে পানি দেওয়ার জন্য ডিজেলের জন্য অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে কৃষকদের। ঠিক মতো বিদ্যুৎ না পাওয়ায় কৃষকরা রীতিমত লোকসান গুনতে হতো। তবে এখন ডিজেল কিংবা বিদ্যুৎ নিয়ে আর কোনো চিন্তা নেই কৃষকদের। মাঠে সৌর বিদ্যুৎচালিত সোলার পাম্প স্থাপন হওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। এতে করে একদিকে যেমন চাষে খরচ হচ্ছে কম, অন্যদিকে মাঠজুড়ে ফলছে সোনার ফসল।’

জীবননগর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসিন আলী বলেন, ‘সোলার প্লান্টের অধীনে চাষ করে অল্প খরচে চাষীরা লাভবান হচ্ছে এবং সঠিক সময়ে জমিতে সেচ দিতে পারছে। সঠিক সময়ে জমিতে সেচ দিতে পারলে ফসল ভালো হয় এবং জমিও সুন্দর থাকে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সোলার প্লান্ট

আপলোড টাইম : ০৮:১৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ নভেম্বর ২০২২

মিঠুন মাহমুদ:সময় মতো জমিতে পানি দেওয়া নিয়ে ভাবতে হচ্ছে না, জন (দিনমজুর) কামায় করে পানি নিতে হচ্ছে না কৃষকদের এবং খরচ হচ্ছে অনেক কম। নানাবিধ সুবিধা পাওয়ায় জীবননগরে কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সোলার প্লান্ট। মাঠজুড়ে স্থাপন করা হয়েছে বিকল্প বিদ্যুৎ সোলার প্লান্ট।

কৃষি প্রধান এই দেশর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চুয়াডাঙ্গা। এ জেলার জীবননগর উপজেলার বেশিরভাগ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এ উপজেলায় ধান, পাট, মুগ, কলাই, সিম, টমেটা, পেয়ারা, ড্রাগন, মাল্টাসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। সম্প্রতি সময়ে ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং সময়মতো বিদ্যুৎ না পাওয়ায় রীতি মতো স্থানীয় কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েন। ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে সীমান্ত ইউনিয়নের হরিহরনগর, মেদেনীপুর, হরিপুর গ্রামের মাঠে ৭টি সোলার প্লান্ট স্থাপন করে স্থানীয় একটি এনজিও সংস্থা। ৭টি সোলার প্লান্টের আওতায় ২ হাজার ১২০ বিঘা জমিতে ধান, পাটসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ হচ্ছে।

বিকল্প সৌর বিদ্যুৎ সোলার প্লান্টের সেচ প্রকল্পের অধীনে চাষ করে কৃষকরা অনেক লাভবান হচ্ছে। প্রতি বিঘা জমিতে পানি দিতে আগে খরচ হত ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। হয়রানির শিকার হতে হতো প্রান্তিক কৃষকদের। বর্তমান ১ বিঘা জমিতে পানি দিতে খরচ হয় মাত্র আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। বিদ্যুৎ এবং ডিজেল নিয়ে কোনো চিন্তা নেই এ ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের কৃষকদের। সময় মতো জমিতে পানি দেওয়া যায় এবং খরচও অনেক কম হওয়ায় অনেকেই এই সোলার প্লান্টের পানি নিয়ে সেচ দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলেও জানান স্থানীয় কৃষকরা।
সীমান্ত ইউনিয়নের হরিহরনগর গ্রামের আইপিএম ক্লাবের সদস্য মাহাবুব আলম বলেন, সোলার প্লান্ট এই এলাকাতে স্থাপন হয়ে কৃষকদের অনেক উপকার হয়েছে। কৃষকরা জমিতে না গেলেও সোলার প্লান্ট কোম্পানির নিয়োগকৃত শ্রমিকরা ঠিক সময় মতো জমিতে পানি দিয়ে দেয়। এতে একটি বাড়তি সুবিধা পায় কৃষকরা। আগে জমিতে পানি দিতে জন কামায় করতে হতো, এখন সেটা আর করতে হচ্ছে না।

একই গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আব্দুল হামিদ বলেন, ‘এক সময় জমিতে পানি দেওয়ার জন্য ডিজেলের জন্য অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে কৃষকদের। ঠিক মতো বিদ্যুৎ না পাওয়ায় কৃষকরা রীতিমত লোকসান গুনতে হতো। তবে এখন ডিজেল কিংবা বিদ্যুৎ নিয়ে আর কোনো চিন্তা নেই কৃষকদের। মাঠে সৌর বিদ্যুৎচালিত সোলার পাম্প স্থাপন হওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। এতে করে একদিকে যেমন চাষে খরচ হচ্ছে কম, অন্যদিকে মাঠজুড়ে ফলছে সোনার ফসল।’

জীবননগর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসিন আলী বলেন, ‘সোলার প্লান্টের অধীনে চাষ করে অল্প খরচে চাষীরা লাভবান হচ্ছে এবং সঠিক সময়ে জমিতে সেচ দিতে পারছে। সঠিক সময়ে জমিতে সেচ দিতে পারলে ফসল ভালো হয় এবং জমিও সুন্দর থাকে।’