ইপেপার । আজ শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

কপোতক্ষ নদ পাড়ে গণকবরের সন্ধান

ঝিনাইদহ অফিস:
  • আপলোড টাইম : ১১:৩৬:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ মে ২০২২
  • / ৩৫ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহের মহেশপুর শহরের কলেজ বাসস্ট্যান্ডে একটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। মহেশপুরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কপোতক্ষ নদ খনন করতে গিয়ে একাধিক মানুষের মাথার খুলি ও শরীরের হাড় উঠে আসে। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। নদের তীরে দেহবাশেষ পাওয়ার খবরে মানুষ দলে দলে কপোতাক্ষ নদের পাড়ে ভিড় করছেন।

স্থানীয়রা জানান, কপোতক্ষ নদ খননের সময় মহেশপুর সরকারি কলেজ বাসস্ট্যান্ডের পাশে ব্রিজের নিচ থেকে মানুষের মাখার খুলি ও হাড় দেখতে পায় এলাকাবাসী। পরে স্থানীয়রা খুলি ও হাড়গুলো গুছিয়ে রাখে সেখানে। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, নদী খনন করার সময় ভেকুর মাথায় এগুলো উঠে আসে। বৃষ্টির পর মাথার খুলিগুলো বের হয়ে আসলে এলাকার যুবকরা গোসল করতে গিয়ে হাড় ও খুলিগুলো গুছিয়ে রাখে। গতকাল রোববার দুপুরে পর্যন্ত ওই অবস্থায় মানুষের মাথার খুলিগুলো পড়ে ছিল।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও বর্তমান সেক্টর কমান্ডারর্স ফোরামের সভাপতি কামালুজ্জামান বলেন, ‘মহেশপুরে একাধিক গণকবর আছে। আমরা সেগুলো সংরক্ষণের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে বলেছি।’ তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মহেশপুরের খালিশপুরে ১৮ পাঞ্জাব ব্যাটালিয়নের ক্যাম্প ছিল। তারা মহেশপুরের ভালাইপুর, হাসপাতালের পেছনে ও কলেজ মোড়ে কাঠের ব্রিজের নিচে বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ধরে এনে হত্যা করত। পরে তাদের গণকবর দিত। এটি সেই গণকবর। তিনি বলেন, মহেশপুর ডাকবাংলোতে রাজাকাররা থাকত। ডাকবাংলোর পাশেই রয়েছে কপোতক্ষ নদ ও কাঠের ব্রিজ। এই গণকবর সেখানেই আবিষ্কার হয়েছে। এতে সন্দেহাতীতভাবেই বলা যায়, পাকিস্তান আর্মি ও রাজাকারদের হত্যাযজ্ঞের শিকার এসব সাধারণ মানুষ। তিনি দ্রুত এখানে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে গণকবরগুলো সংরক্ষণের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নয়ন কুমার রাজবংশী বলেন, ‘আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সেখানে মাথার খুলি ও হাড় দেখেছি। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে এটি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের চিহ্ন। সরকারিভাবে আমরা এটা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করব।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

কপোতক্ষ নদ পাড়ে গণকবরের সন্ধান

আপলোড টাইম : ১১:৩৬:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ মে ২০২২

ঝিনাইদহের মহেশপুর শহরের কলেজ বাসস্ট্যান্ডে একটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। মহেশপুরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কপোতক্ষ নদ খনন করতে গিয়ে একাধিক মানুষের মাথার খুলি ও শরীরের হাড় উঠে আসে। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। নদের তীরে দেহবাশেষ পাওয়ার খবরে মানুষ দলে দলে কপোতাক্ষ নদের পাড়ে ভিড় করছেন।

স্থানীয়রা জানান, কপোতক্ষ নদ খননের সময় মহেশপুর সরকারি কলেজ বাসস্ট্যান্ডের পাশে ব্রিজের নিচ থেকে মানুষের মাখার খুলি ও হাড় দেখতে পায় এলাকাবাসী। পরে স্থানীয়রা খুলি ও হাড়গুলো গুছিয়ে রাখে সেখানে। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, নদী খনন করার সময় ভেকুর মাথায় এগুলো উঠে আসে। বৃষ্টির পর মাথার খুলিগুলো বের হয়ে আসলে এলাকার যুবকরা গোসল করতে গিয়ে হাড় ও খুলিগুলো গুছিয়ে রাখে। গতকাল রোববার দুপুরে পর্যন্ত ওই অবস্থায় মানুষের মাথার খুলিগুলো পড়ে ছিল।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও বর্তমান সেক্টর কমান্ডারর্স ফোরামের সভাপতি কামালুজ্জামান বলেন, ‘মহেশপুরে একাধিক গণকবর আছে। আমরা সেগুলো সংরক্ষণের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে বলেছি।’ তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মহেশপুরের খালিশপুরে ১৮ পাঞ্জাব ব্যাটালিয়নের ক্যাম্প ছিল। তারা মহেশপুরের ভালাইপুর, হাসপাতালের পেছনে ও কলেজ মোড়ে কাঠের ব্রিজের নিচে বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ধরে এনে হত্যা করত। পরে তাদের গণকবর দিত। এটি সেই গণকবর। তিনি বলেন, মহেশপুর ডাকবাংলোতে রাজাকাররা থাকত। ডাকবাংলোর পাশেই রয়েছে কপোতক্ষ নদ ও কাঠের ব্রিজ। এই গণকবর সেখানেই আবিষ্কার হয়েছে। এতে সন্দেহাতীতভাবেই বলা যায়, পাকিস্তান আর্মি ও রাজাকারদের হত্যাযজ্ঞের শিকার এসব সাধারণ মানুষ। তিনি দ্রুত এখানে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে গণকবরগুলো সংরক্ষণের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নয়ন কুমার রাজবংশী বলেন, ‘আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সেখানে মাথার খুলি ও হাড় দেখেছি। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে এটি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের চিহ্ন। সরকারিভাবে আমরা এটা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করব।’