ইপেপার । আজ সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

আড়াই বছর ধরে দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ভারত যাতায়াত বন্ধ, বৈঠক থেকে আন্দোলনের ডাক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:৪৮:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর ২০২২
  • / ২৩ বার পড়া হয়েছে

দর্শনা অফিস: দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে দর্শনার জয়নগর সীমান্তে বাংলাদেশীদের ভিসা বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চুয়াডাঙ্গাসহ ১৫ জেলার পাসপোর্টধারী যাত্রী সাধারণকে। আজ-কাল করে কোনোভাবেই এ সীমান্তে ভিসা ব্যবস্থা চালু করছে না ভারতীয় দূতাবাস। দীর্ঘ অপেক্ষায় কোনো সুফল না পাওয়ায় অবশেষে ভুক্তভোগীদের সাথে নিয়ে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে দর্শনা নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে। ভিসা চালুর দাবিতে ১০ অক্টোবর মানববন্ধন ও পরের দিন প্রতীকী অনশন পালিত হবে। এতেও ফল না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে মাঠে নামতে পারে এলাকাবাসী।

জানা যায়, বাংলাদেশের যেকোনো সীমান্ত রুটের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার সাথে ঢাকার দূরত্ব দর্শনা দিয়ে সড়ক পথে কম এবং রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় এই রুটে যাত্রীদের চলাচল ছিল ব্যাপকভাবে। বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত অন্য রুটের মতো দর্শনা-গেদে কাস্টমস রুটও বন্ধ করে দেওয়া হয়। করোনায় বন্ধ থাকার পর স্থলপথে ভিসা প্রক্রিয়া পুনরায় চালু হলেও চুয়াডাঙ্গার দর্শনা ও ভারতের গেদে রুটে বাংলাদেশীদের ভিসা প্রদান আড়াই বছর যাবত স্থগিত রয়েছে।

অপর দিকে, ভারতের নাগরিকদের যেকোনো ভিসায় এ রুট ব্যবহারে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এ রুট দিয়ে যাতায়াত করা বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী যাত্রীরা। বাধ্য হয়ে তাদেরকে বেনাপোল কাস্টমস চেকপোস্ট দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে ২০২০ সালের ২৬ মার্চ বন্ধ হয় দর্শনা চেকপোস্টের কার্যক্রম। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শুধুমাত্র মেডিকেল ও বিজনেস ভিসায় দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ৫ ডিসেম্বর তাও বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। সে থেকে এখন পর্যন্ত দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ কারণে দেশের প্রথম ব্যস্ততম দর্শনা কাস্টমস চেকপোস্টের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।

দর্শনা এবং ভারতের গেদে স্থল রুটটি দু’দেশের যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় নিম্ন-মধ্যবিত্তরা এ রুটটি ব্যবহার করে থাকে। এতে যাত্রীদের খরচ ও সময় উভয়ই সাশ্রয় হয়। ইতঃমধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা লোকমোর্চার পক্ষ থেকে দর্শনা সীমান্ত পথে ভিসা চালুর দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন নেতৃবৃন্দ। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীদের দাবির প্রেক্ষিতে দর্শনা নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে রেলবাজার সরকারি বীজ গোডাউনের সামনে অনুষ্ঠিত হয়েছে বৈঠক। এ বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন দর্শনা নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব গোলাম ফারুক আরিফ।

আলোচনা করেন আওয়ামী লীগ নেতা হাজী জাহিদুল ইসলাম, দামুড়হুদা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আ. হান্নান ছোট, দর্শনা প্রেসক্লাবের সভাপতি আওয়াল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এস এম ওসমান, সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মনিরুজ্জামান ধীরু, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হানিফ মণ্ডল, ইকরামুল হক পিপুল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল মেহমুদ, আহসান হাবীব মামুন, সাংবাদিক নজরুল ইসলাম, ওয়াসিম রয়েল, ইমতিয়াজ রয়েল, আবিদ হাসান রিফাত, ইয়াছিন জুয়েল, দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি টিপু সুলতান, দামুড়হুদা উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি উত্তম রঞ্জন দেবনাথ, সাধারণ সস্পাদক অনন্ত সান্তরা মঙ্গল, উপজেলা প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বরুপ দাস, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ জুয়েল, জেলা যুবলীগ নেতা আব্দুস সালাম ভুট্টো, আওয়ামী লীগ নেতা বিল্লাল হোসেন, আজাদ, পৌর কাউন্সিলর মনির সরদার, পৌর ছাত্রলীগের সহসভাপতি আশরাফুল ইসলাম, দর্শনা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিদ পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জেল হোসেন তপু, ছাত্রলীগ নেতা অপু সরকার, রকি প্রমুখ।

বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে আগামি ১০ আক্টোবর বেলা ১১টায় দর্শনা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও পরদিন সকাল ১০টায় দর্শনা জয়নগর চেকপোস্টে প্রতীকী অনশন করা হবে। বৈঠক শেষে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগরের সাথে পৌর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সৌজন্য স্বাক্ষাৎ করেন আন্দোলনকারীরা। এসময় এমপি টগর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগে জানানো হবে বলে জানান। এছাড়া ভুক্তভোগী ও নাগরিক কমিটির এ আন্দোলনের সাথে একত্মাতা প্রকাশ করেছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

আড়াই বছর ধরে দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ভারত যাতায়াত বন্ধ, বৈঠক থেকে আন্দোলনের ডাক

আপলোড টাইম : ০৪:৪৮:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর ২০২২

দর্শনা অফিস: দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে দর্শনার জয়নগর সীমান্তে বাংলাদেশীদের ভিসা বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চুয়াডাঙ্গাসহ ১৫ জেলার পাসপোর্টধারী যাত্রী সাধারণকে। আজ-কাল করে কোনোভাবেই এ সীমান্তে ভিসা ব্যবস্থা চালু করছে না ভারতীয় দূতাবাস। দীর্ঘ অপেক্ষায় কোনো সুফল না পাওয়ায় অবশেষে ভুক্তভোগীদের সাথে নিয়ে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে দর্শনা নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে। ভিসা চালুর দাবিতে ১০ অক্টোবর মানববন্ধন ও পরের দিন প্রতীকী অনশন পালিত হবে। এতেও ফল না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে মাঠে নামতে পারে এলাকাবাসী।

জানা যায়, বাংলাদেশের যেকোনো সীমান্ত রুটের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার সাথে ঢাকার দূরত্ব দর্শনা দিয়ে সড়ক পথে কম এবং রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় এই রুটে যাত্রীদের চলাচল ছিল ব্যাপকভাবে। বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত অন্য রুটের মতো দর্শনা-গেদে কাস্টমস রুটও বন্ধ করে দেওয়া হয়। করোনায় বন্ধ থাকার পর স্থলপথে ভিসা প্রক্রিয়া পুনরায় চালু হলেও চুয়াডাঙ্গার দর্শনা ও ভারতের গেদে রুটে বাংলাদেশীদের ভিসা প্রদান আড়াই বছর যাবত স্থগিত রয়েছে।

অপর দিকে, ভারতের নাগরিকদের যেকোনো ভিসায় এ রুট ব্যবহারে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এ রুট দিয়ে যাতায়াত করা বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী যাত্রীরা। বাধ্য হয়ে তাদেরকে বেনাপোল কাস্টমস চেকপোস্ট দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে ২০২০ সালের ২৬ মার্চ বন্ধ হয় দর্শনা চেকপোস্টের কার্যক্রম। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শুধুমাত্র মেডিকেল ও বিজনেস ভিসায় দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ৫ ডিসেম্বর তাও বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। সে থেকে এখন পর্যন্ত দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ কারণে দেশের প্রথম ব্যস্ততম দর্শনা কাস্টমস চেকপোস্টের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।

দর্শনা এবং ভারতের গেদে স্থল রুটটি দু’দেশের যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় নিম্ন-মধ্যবিত্তরা এ রুটটি ব্যবহার করে থাকে। এতে যাত্রীদের খরচ ও সময় উভয়ই সাশ্রয় হয়। ইতঃমধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা লোকমোর্চার পক্ষ থেকে দর্শনা সীমান্ত পথে ভিসা চালুর দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন নেতৃবৃন্দ। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীদের দাবির প্রেক্ষিতে দর্শনা নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে রেলবাজার সরকারি বীজ গোডাউনের সামনে অনুষ্ঠিত হয়েছে বৈঠক। এ বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন দর্শনা নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব গোলাম ফারুক আরিফ।

আলোচনা করেন আওয়ামী লীগ নেতা হাজী জাহিদুল ইসলাম, দামুড়হুদা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আ. হান্নান ছোট, দর্শনা প্রেসক্লাবের সভাপতি আওয়াল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এস এম ওসমান, সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মনিরুজ্জামান ধীরু, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হানিফ মণ্ডল, ইকরামুল হক পিপুল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল মেহমুদ, আহসান হাবীব মামুন, সাংবাদিক নজরুল ইসলাম, ওয়াসিম রয়েল, ইমতিয়াজ রয়েল, আবিদ হাসান রিফাত, ইয়াছিন জুয়েল, দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি টিপু সুলতান, দামুড়হুদা উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি উত্তম রঞ্জন দেবনাথ, সাধারণ সস্পাদক অনন্ত সান্তরা মঙ্গল, উপজেলা প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বরুপ দাস, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ জুয়েল, জেলা যুবলীগ নেতা আব্দুস সালাম ভুট্টো, আওয়ামী লীগ নেতা বিল্লাল হোসেন, আজাদ, পৌর কাউন্সিলর মনির সরদার, পৌর ছাত্রলীগের সহসভাপতি আশরাফুল ইসলাম, দর্শনা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিদ পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জেল হোসেন তপু, ছাত্রলীগ নেতা অপু সরকার, রকি প্রমুখ।

বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে আগামি ১০ আক্টোবর বেলা ১১টায় দর্শনা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও পরদিন সকাল ১০টায় দর্শনা জয়নগর চেকপোস্টে প্রতীকী অনশন করা হবে। বৈঠক শেষে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগরের সাথে পৌর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সৌজন্য স্বাক্ষাৎ করেন আন্দোলনকারীরা। এসময় এমপি টগর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগে জানানো হবে বলে জানান। এছাড়া ভুক্তভোগী ও নাগরিক কমিটির এ আন্দোলনের সাথে একত্মাতা প্রকাশ করেছেন।