ইপেপার । আজ সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

আ.লীগ বা শেখ হাসিনা চিরদিনের জন্য কাউকে নেতৃত্ব দেয়নি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪২:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০২২
  • / ২১ বার পড়া হয়েছে

আলোচনা সভার শুরুতে কিছুটা বিশৃঙ্খলা ও চেয়ার ছোড়া-ছুড়ির ঘটনায় দুজন নেতাকর্মী আহত
* সদর উপজেলার নতুন সভাপতি আব্দুর রহমান ও মানিক সম্পাদক
* পৌর আ.লীগের নতুন সভাপতি হেলা ও কাদের সম্পাদক

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দীর্ঘ ১৮ বছর পর নতুন কমিটি পেল চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগ। রোববার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ২য় পর্বে কণ্ঠভোটে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমানকে সভাপতি ও আলী আহম্মেদ হাসানুজ্জামান মানিককে সাধারণ সম্পাদক করে সদর উপজেলা ও আলাউদ্দীন হেলাকে সভাপতি ও আব্দুল কাদেরকে সাধারণ সম্পাদক করে পৌর আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। দুটি ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক। এর আগে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে সকাল থেকেই দলীয় নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে দলে দলে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হতে থাকেন। একসময় সমাবেশস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হয়ে ওঠে। দীর্ঘ দেড়যুগ পর সম্মেলন হওয়ায় আওয়ামী লীগসহ এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে আনন্দ উদ্দীপনার কোনো ঘাটতি ছিলোনা। ব্যান্ড পার্টি নিয়েও সম্মেলনস্থলে আসতে দেখা যায় কোনো ইউনিটকে। আলোচনা সভার শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ শেষে জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে তেতুল শেখ কলেজ প্রাঙ্গণে নৌকার আদলে তৈরি মঞ্চে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভার শুরুতে সমাবেশস্থলে কিছুটা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এতে একে অপরের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, চেয়ার ছোড়া-ছুড়ির ঘটনাও ঘটে। দুইজন নেতাকর্মীর আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান নান্নু ও চুয়াডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম জহুরুল ইসলাম জোয়ার্দ্দারের সভাপতিত্বে উদ্বোধক হিসেবে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা ১-আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলাইমান হক জোয়ার্দার ছেলুন এমপি।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বিএম মোজাম্মেল হক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন এখনকার চেয়ে নাকি পাকিস্থান আমল ভালো ছিলো। তিনি এখনও পাকিস্থানের কথা ভুলতে পারেনি। তাই বার বার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সকল ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা এদেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছি।’

বিএম মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ‘দলের নিয়ম মেনে চলতে হবে, অনিয়ম করে দলের মনোনয়ন দেওয়ার দিন শেষ। আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা চিরদিনের জন্য কাউকে নেতৃত্ব দেয়নি। ত্যাগী নেতারা আওয়ামী লীগের আস্থার ঠিকানা। দুঃসময়ের কর্মীরাই দলের আসল বন্ধু। ত্যাগী নেতাদের আর কোনঠাসা করে রাখা যাবে না। তাদেরকে স্থান দিতে হবে। আজকে বঙ্গবন্ধু নেই, বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করবোই।’

বিএম মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ‘আমাদের নেতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেছেন, দলে হাইব্রিড ও অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। আমাদের যারা বংশানুক্রমে আওয়ামী লীগ করেন, আওয়ামী লীগকে ধারণ ও লালনপালন করেন এবং আমাদের লক্ষকে ধারণ করেন, আওয়ামী লীগ করতে গিয়ে অনেকে তাদের ব্যবসা-বানিজ্যে উন্নতি করতে পারেনি। তাদেরকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলেও অনেকে সুবিধা না নিয়ে দলের জন্য নিরলসভাবে পরিশ্রম করে দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত আছেন। যেটা দলের অন্যদের জন্য অনুকরণীয়। তাই আমদের কোনো কিছুর বিনিময়ে দল করলে চলবে না। কেউ সুবিধা নেয়ার জন্য আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদ নিতে চাইলে তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। শুধু তাইনা, তাদেরকে দলের কোনো পদ দেওয়া যাবে না।’

এসময় তিনি আরও বলেন, ‘নেতৃত্ব শিখতে হলে রাজপথে থাকতে হবে। একজন রাজনীতিবীদের মূল লক্ষ্য হলো মানুষের কাছে যাওয়া। আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের উচিত, তারা যেন যার যার কর্মীদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখেন। সুখে ও দুঃখে তাদের পাশে দাঁড়ায়।’

চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলাইমান হক জোয়ার্দার ছেলুন এমপি উদ্বোধকের বক্তব্যে বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর আমাদের সম্মেলন হচ্ছে, তাই আপনাদের নেতা নির্বাচন কাউন্সিলর ভাইরা করবে। আমরা এই সম্মেলনে বার্তা দিতে চাই যে, জনশক্তি সব থেকে বড় শক্তি। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু এই জনগণের উপর নির্ভর করেই রাজনীতি করতেন। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কাছে সব অপরাজনীতি হার মেনেছে। বঙ্গবন্ধু অটল ও দেশপ্রেম কোনোটারই ঘাটতি ছিলোনা। আমরা যারা যুবক ছিলাম সেদিন বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের উপর ভিত্তি করে আমি রাজনীতি করি। কারও ভয় করে রাজনীতি করিনা।’

আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান নান্নু ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম জহুরুল ইসলামের যৌথ সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আমিরুল আলম মিলন এমপি, পারভীন জামান কল্পনা, অ্যাড. হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, অ্যাড. গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা এমপি, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগর টগর এমপি। আলোচনা সভায় পৌর আওয়ামী লীগের গত কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দীন হেলা ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদহ হোসেন দুই ইউনিটের সাংগঠনিক রিপোর্ট পড়ে শোনান। আলোচনা সভার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যার হাসানুজ্জামান মানিক।

এসময় মূলমঞ্চে সাবেক মহিলা সংসদ সদস্য শিরিন নাঈম পুনম, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদুল হক বিশ্বাস, নাসির উদ্দীন, নজরুল মল্লিক, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. মাহবুব হোসেন মেহেদী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নানসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্নপর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক সাবেক মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

আ.লীগ বা শেখ হাসিনা চিরদিনের জন্য কাউকে নেতৃত্ব দেয়নি

আপলোড টাইম : ০৯:৪২:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০২২

আলোচনা সভার শুরুতে কিছুটা বিশৃঙ্খলা ও চেয়ার ছোড়া-ছুড়ির ঘটনায় দুজন নেতাকর্মী আহত
* সদর উপজেলার নতুন সভাপতি আব্দুর রহমান ও মানিক সম্পাদক
* পৌর আ.লীগের নতুন সভাপতি হেলা ও কাদের সম্পাদক

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দীর্ঘ ১৮ বছর পর নতুন কমিটি পেল চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগ। রোববার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ২য় পর্বে কণ্ঠভোটে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমানকে সভাপতি ও আলী আহম্মেদ হাসানুজ্জামান মানিককে সাধারণ সম্পাদক করে সদর উপজেলা ও আলাউদ্দীন হেলাকে সভাপতি ও আব্দুল কাদেরকে সাধারণ সম্পাদক করে পৌর আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। দুটি ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক। এর আগে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে সকাল থেকেই দলীয় নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে দলে দলে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হতে থাকেন। একসময় সমাবেশস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হয়ে ওঠে। দীর্ঘ দেড়যুগ পর সম্মেলন হওয়ায় আওয়ামী লীগসহ এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে আনন্দ উদ্দীপনার কোনো ঘাটতি ছিলোনা। ব্যান্ড পার্টি নিয়েও সম্মেলনস্থলে আসতে দেখা যায় কোনো ইউনিটকে। আলোচনা সভার শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ শেষে জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে তেতুল শেখ কলেজ প্রাঙ্গণে নৌকার আদলে তৈরি মঞ্চে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভার শুরুতে সমাবেশস্থলে কিছুটা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এতে একে অপরের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, চেয়ার ছোড়া-ছুড়ির ঘটনাও ঘটে। দুইজন নেতাকর্মীর আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান নান্নু ও চুয়াডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম জহুরুল ইসলাম জোয়ার্দ্দারের সভাপতিত্বে উদ্বোধক হিসেবে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা ১-আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলাইমান হক জোয়ার্দার ছেলুন এমপি।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বিএম মোজাম্মেল হক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন এখনকার চেয়ে নাকি পাকিস্থান আমল ভালো ছিলো। তিনি এখনও পাকিস্থানের কথা ভুলতে পারেনি। তাই বার বার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সকল ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা এদেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছি।’

বিএম মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ‘দলের নিয়ম মেনে চলতে হবে, অনিয়ম করে দলের মনোনয়ন দেওয়ার দিন শেষ। আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা চিরদিনের জন্য কাউকে নেতৃত্ব দেয়নি। ত্যাগী নেতারা আওয়ামী লীগের আস্থার ঠিকানা। দুঃসময়ের কর্মীরাই দলের আসল বন্ধু। ত্যাগী নেতাদের আর কোনঠাসা করে রাখা যাবে না। তাদেরকে স্থান দিতে হবে। আজকে বঙ্গবন্ধু নেই, বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করবোই।’

বিএম মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ‘আমাদের নেতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেছেন, দলে হাইব্রিড ও অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। আমাদের যারা বংশানুক্রমে আওয়ামী লীগ করেন, আওয়ামী লীগকে ধারণ ও লালনপালন করেন এবং আমাদের লক্ষকে ধারণ করেন, আওয়ামী লীগ করতে গিয়ে অনেকে তাদের ব্যবসা-বানিজ্যে উন্নতি করতে পারেনি। তাদেরকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলেও অনেকে সুবিধা না নিয়ে দলের জন্য নিরলসভাবে পরিশ্রম করে দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত আছেন। যেটা দলের অন্যদের জন্য অনুকরণীয়। তাই আমদের কোনো কিছুর বিনিময়ে দল করলে চলবে না। কেউ সুবিধা নেয়ার জন্য আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদ নিতে চাইলে তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। শুধু তাইনা, তাদেরকে দলের কোনো পদ দেওয়া যাবে না।’

এসময় তিনি আরও বলেন, ‘নেতৃত্ব শিখতে হলে রাজপথে থাকতে হবে। একজন রাজনীতিবীদের মূল লক্ষ্য হলো মানুষের কাছে যাওয়া। আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের উচিত, তারা যেন যার যার কর্মীদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখেন। সুখে ও দুঃখে তাদের পাশে দাঁড়ায়।’

চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলাইমান হক জোয়ার্দার ছেলুন এমপি উদ্বোধকের বক্তব্যে বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর আমাদের সম্মেলন হচ্ছে, তাই আপনাদের নেতা নির্বাচন কাউন্সিলর ভাইরা করবে। আমরা এই সম্মেলনে বার্তা দিতে চাই যে, জনশক্তি সব থেকে বড় শক্তি। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু এই জনগণের উপর নির্ভর করেই রাজনীতি করতেন। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কাছে সব অপরাজনীতি হার মেনেছে। বঙ্গবন্ধু অটল ও দেশপ্রেম কোনোটারই ঘাটতি ছিলোনা। আমরা যারা যুবক ছিলাম সেদিন বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের উপর ভিত্তি করে আমি রাজনীতি করি। কারও ভয় করে রাজনীতি করিনা।’

আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান নান্নু ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম জহুরুল ইসলামের যৌথ সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আমিরুল আলম মিলন এমপি, পারভীন জামান কল্পনা, অ্যাড. হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, অ্যাড. গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা এমপি, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগর টগর এমপি। আলোচনা সভায় পৌর আওয়ামী লীগের গত কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দীন হেলা ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদহ হোসেন দুই ইউনিটের সাংগঠনিক রিপোর্ট পড়ে শোনান। আলোচনা সভার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যার হাসানুজ্জামান মানিক।

এসময় মূলমঞ্চে সাবেক মহিলা সংসদ সদস্য শিরিন নাঈম পুনম, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদুল হক বিশ্বাস, নাসির উদ্দীন, নজরুল মল্লিক, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. মাহবুব হোসেন মেহেদী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নানসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্নপর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক সাবেক মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু।