ইপেপার । আজশনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাংনীতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

প্রতিবেদক, গাংনী:
  • আপলোড টাইম : ১০:৫৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪
  • / ৪৫ বার পড়া হয়েছে

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার আযান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গাছ কর্তন ও আম বিক্রির টাকা নয়-ছয়ের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হামিজ উদ্দীনের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা বলছেন, কোনো সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ কর্তন করতে হলে প্রশাসনের অনুমতির প্রয়োজন হলেও তিনি তা মানছেন না। কোনো অনুমতি ছাড়ায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গনের বিভিন্ন গাছ কেটে বিক্রি করছেন তিনি।

জানা যায়, দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে হামিজ উদ্দীন আযান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এসময়ের মধ্যে কয়েক দফায় বিদ্যালয়ের শিশুগাছ, ঝাউগাছ, কৃষ্ণচূড়া, নারিকেল গাছসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ কর্তন এবং প্রতিবছর গাছের আম বিক্রি করে করে দেন। প্রধান শিক্ষক দাবি করেন, টেন্ডারের মাধ্যমে এসব গাছ বিক্রি করা হয়েছে, তবে এ সংক্রান্ত কোনো নথি বা কাগজপত্র দেখাতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।

গাঠ কেটে বিক্রির অভিযোগের বিষয়ে গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিনে আযান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা। এসময় প্রধান শিক্ষক হামিজ উদ্দীন আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পূর্বে কোনো তথ্য দিবেন না বলে সাফ জানান। এদিকে, প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে দিন দিন বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমছে বলে স্থানীয়রা দাবি করেন। গতকাল সরেজমিনে বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে ১৪-১৫ জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি পাওয়া যায়। অফিস কক্ষে গ্যাসের চুলায় রান্না চললেও সেখানে কাউকে দেখা যায়নি। প্রধান শিক্ষক গাছ বিক্রির টাকা বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নে খরচ করার কথা প্রচার করলেও পঁচে যাওয়া নষ্ট বাঁশে জাতীয় পতাকাটা টাঙানো অবস্থায় দেখা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়দের অনেকে বলেন, কয়েক দফায় বিদ্যালয়ের প্রায় ২ লাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন ধরনের গাছ বিক্রি করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যালয়ের সরকারি কোষাগারে সে সব টাকা জমা পড়ে না। তাছাড়া বিদ্যালয় প্রাঙ্গনের গাছের আম বিক্রির টাকার কোনো হদিসইও কেউ জানে না। বিভিন্ন সুবিধা নিতে প্রধান শিক্ষক হামিজ উদ্দীন দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে একই বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।

এদিকে তথ্য নিয়ে যায়, দীর্ঘ ৬ মাস পূর্বে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি বিলুপ্ত হলেও নতুন কোনো কমিটি গঠন করা হয়নি। এসব বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আবুল বাশারের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রির একটি টাকাও তার কাছে নেই এবং তদন্ত সাপেক্ষ প্রধান শিক্ষক এ কেলেংকারিতে জড়িত থাকলে তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষ মৌখিকভাবে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করে আসছেন। গাংনী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বলেন, এলাকাবাসী এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মেহেরপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আমীন আযান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে অবগত হয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

গাংনীতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

আপলোড টাইম : ১০:৫৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার আযান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গাছ কর্তন ও আম বিক্রির টাকা নয়-ছয়ের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হামিজ উদ্দীনের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা বলছেন, কোনো সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ কর্তন করতে হলে প্রশাসনের অনুমতির প্রয়োজন হলেও তিনি তা মানছেন না। কোনো অনুমতি ছাড়ায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গনের বিভিন্ন গাছ কেটে বিক্রি করছেন তিনি।

জানা যায়, দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে হামিজ উদ্দীন আযান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এসময়ের মধ্যে কয়েক দফায় বিদ্যালয়ের শিশুগাছ, ঝাউগাছ, কৃষ্ণচূড়া, নারিকেল গাছসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ কর্তন এবং প্রতিবছর গাছের আম বিক্রি করে করে দেন। প্রধান শিক্ষক দাবি করেন, টেন্ডারের মাধ্যমে এসব গাছ বিক্রি করা হয়েছে, তবে এ সংক্রান্ত কোনো নথি বা কাগজপত্র দেখাতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।

গাঠ কেটে বিক্রির অভিযোগের বিষয়ে গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিনে আযান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা। এসময় প্রধান শিক্ষক হামিজ উদ্দীন আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পূর্বে কোনো তথ্য দিবেন না বলে সাফ জানান। এদিকে, প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে দিন দিন বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমছে বলে স্থানীয়রা দাবি করেন। গতকাল সরেজমিনে বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে ১৪-১৫ জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি পাওয়া যায়। অফিস কক্ষে গ্যাসের চুলায় রান্না চললেও সেখানে কাউকে দেখা যায়নি। প্রধান শিক্ষক গাছ বিক্রির টাকা বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নে খরচ করার কথা প্রচার করলেও পঁচে যাওয়া নষ্ট বাঁশে জাতীয় পতাকাটা টাঙানো অবস্থায় দেখা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়দের অনেকে বলেন, কয়েক দফায় বিদ্যালয়ের প্রায় ২ লাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন ধরনের গাছ বিক্রি করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যালয়ের সরকারি কোষাগারে সে সব টাকা জমা পড়ে না। তাছাড়া বিদ্যালয় প্রাঙ্গনের গাছের আম বিক্রির টাকার কোনো হদিসইও কেউ জানে না। বিভিন্ন সুবিধা নিতে প্রধান শিক্ষক হামিজ উদ্দীন দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে একই বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।

এদিকে তথ্য নিয়ে যায়, দীর্ঘ ৬ মাস পূর্বে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি বিলুপ্ত হলেও নতুন কোনো কমিটি গঠন করা হয়নি। এসব বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আবুল বাশারের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রির একটি টাকাও তার কাছে নেই এবং তদন্ত সাপেক্ষ প্রধান শিক্ষক এ কেলেংকারিতে জড়িত থাকলে তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষ মৌখিকভাবে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করে আসছেন। গাংনী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বলেন, এলাকাবাসী এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মেহেরপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আমীন আযান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে অবগত হয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।