ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আনোয়ার মেম্বরের মাদক সাম্রাজ্যে যুবকরা ইয়াবায় মাতাল! কালীগঞ্জের বালিয়াডাঙ্গা বাজারে মাদকের সর্বনাশা মরণ ছোবল

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:৪০:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০১৬
  • / ৩৩৭ বার পড়া হয়েছে

erw

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ও আশপাশ গ্রামে মাদকের ভয়াবহ বিস্তার ঘটেছে। বিকাল হলে জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ইয়াবায় আসক্ত ব্যক্তিরা ভীড় করছে ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা বাজারে। এলাকাবাসি অভিযোগ, ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বর আনোয়ার হোসেন নিজেই এই মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। নিজে মেম্বর ও সরকারী দলের নেতা পরিচয় দিয়ে গড়ে তুলেছেন ইয়াবা খোরদের বিরাট সা¤্রাজ্য। মটরসাইকেলে জেলার বিভিন্ন বাজারে তিনি ইয়াবা পৌছে দিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ। ইয়াবায় আসক্তদের জন্য পুর্ব বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে মৃত মসলম উদ্দীনের ছেলে আব্দুল মমিনের পুকুর পাড়ে দুইরুম বিশিষ্ট ঘর তোলা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, আব্দুল মোমিনের সার গোডাউনটি দখল করে নিয়েছেন আনোয়ার মেম্বার। আর সেখানেই নির্বিঘেœ চলছে ইয়াবা সেবন আর কেনা বেচার জমপেশ ব্যবসা। সরেজমিন এলাকায় খোজ নিয়ে জানা গেছে, আনোয়ার মেম্বার এক সময় বিপ্লবী কমিউনিষ্ট পার্টির ক্যাডার ছিলেন। তার অস্ত্রধারী ক্যাডারদের ভয়ে মানুষ তটস্থ থাকতো। বহু মানুষকে তিনি পিটিয়ে জখম করেছেন। বিপ্লবী কমিউনিষ্ট পার্টির শোচনীয় পরিস্থিতিতে তিনি যোগ দেন বিএনপিতে। বিএনপিতে যোগ দিয়ে আনোয়ার মেম্বার হয়ে ওঠেন অপ্রতিরোধ্য। তার অত্যাচারে বালিয়াডাঙ্গার বিপুল কুমারসহ এলাকার অসংখ্য সংখ্যালঘু ভারতে পাড়ি জমান। দখল করে নেন তাদের সহায় সম্পদ। বিএনপির মধু শেষ হলে মাদক স¤্রাট আনোয়ার আওয়ামী লীগের আব্দুল মান্নান গ্রুপে যোগ দেন। শুরু হয় আনোয়ার মেম্বারের নতুন মিশন। বিচারের নামে চাঁদাবাজী ও মাদক ব্যবসা তার প্রধান হাতিয়োর হয়ে ওঠে। আবু তাহেরের মেয়ের প্রেম ঘটিত বিষয় নিয়ে বিচারের নামে ৪০ হাজার টাকা জোর পুর্বক আদায় করা হয়। বানুড়িয়া গ্রামের আনসার আলীকে বাজারে প্রকাশ্যে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়। বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের তনু মিয়ার দুবাই প্রবাসি ছেলে শাহজাহান বাড়ি আসলে রানী ঘটিত কেলেংকারী দিয়ে তার পাসপোর্ট আটকিয়ে ৩৮ হাজার টাকা আদায় করে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, নাটোর জেলার বাঁশিওয়ালা বিল্লাল হোসনের স্ত্রী ছিল সুন্দরী। আনোয়ার মেম্বারের কু-নজর পড়ে তার দিকে। এরপর বিল্লালের স্ত্রীকে এক হিন্দুর বিয়ের বরযাত্রী হিসেবে নিয়ে যায় এবং সারা রাত মদ পান করে ফুর্তি মারে। বিষয়টি জানতে পেরে বাঁশিওয়ালা বিল্লাল জীবন বাাঁচাতে রাতের আঁধারে স্ত্রী সন্তান ফেলে পালিয়ে যায়। বিল্লালের সাজানো সংসার ভেঙ্গে দেয় আনোয়ার মেম্বার। বিষয়টি সে সময় ৬নং ত্রিলোচানপুর ইউনিয়ানের সাবেক চেয়ারম্যন জয়নালকে জানিয়েও কোন সুবিচার পাননি বিল্লাল। তবে সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন ঘটনাটি সথ্য বলে স্বীকার করেছেন। এলাকাবাসির ভাষ্যমতে মাদক ব্যবসা ছাড়াও এ ধরণের হাজারো অপকর্মের নায়ক হচ্ছে আনোয়ার মেম্বার। তার ভয়ে কেও প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। মেম্বার নির্বাচিত হলেও গণমানুষের তিনি কোন উপকার করেন না বলে অভিযোগ। তার ধ্যান জ্ঞান মাদক ব্যবসা নিয়ে। কোন মানুষ বিপদে পড়লে টাকা ছাড়া তার কোন সাহায্য পান না ভোটাররা। বিষয়টি নিয়ে আনোয়ার মেম্বারের সাথে কথা বলার জন্য তার ০১৭১২-৭৯৮৭৬৫ নাম্বারের মোবাইলে একাধিক বার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, আনোয়ার মেম্বারের নামে ইতিপূর্বে একটি ফেনসিডিলের মামলা রয়েছে। তিনি আরো জানান, আনোয়ার হোসেন মেম্বার নির্বাচিত হওয়ার পর পুলিশ তাকে দুই বার আটক করে। তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এলাকাবাসি আনোয়ার মেম্বারের মাদক সা¤্রাজ্য ধ্বংসে পুলিশ সুপার ও র‌্যাবের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

আনোয়ার মেম্বরের মাদক সাম্রাজ্যে যুবকরা ইয়াবায় মাতাল! কালীগঞ্জের বালিয়াডাঙ্গা বাজারে মাদকের সর্বনাশা মরণ ছোবল

আপলোড টাইম : ০১:৪০:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০১৬

erw

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ও আশপাশ গ্রামে মাদকের ভয়াবহ বিস্তার ঘটেছে। বিকাল হলে জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ইয়াবায় আসক্ত ব্যক্তিরা ভীড় করছে ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা বাজারে। এলাকাবাসি অভিযোগ, ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বর আনোয়ার হোসেন নিজেই এই মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। নিজে মেম্বর ও সরকারী দলের নেতা পরিচয় দিয়ে গড়ে তুলেছেন ইয়াবা খোরদের বিরাট সা¤্রাজ্য। মটরসাইকেলে জেলার বিভিন্ন বাজারে তিনি ইয়াবা পৌছে দিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ। ইয়াবায় আসক্তদের জন্য পুর্ব বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে মৃত মসলম উদ্দীনের ছেলে আব্দুল মমিনের পুকুর পাড়ে দুইরুম বিশিষ্ট ঘর তোলা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, আব্দুল মোমিনের সার গোডাউনটি দখল করে নিয়েছেন আনোয়ার মেম্বার। আর সেখানেই নির্বিঘেœ চলছে ইয়াবা সেবন আর কেনা বেচার জমপেশ ব্যবসা। সরেজমিন এলাকায় খোজ নিয়ে জানা গেছে, আনোয়ার মেম্বার এক সময় বিপ্লবী কমিউনিষ্ট পার্টির ক্যাডার ছিলেন। তার অস্ত্রধারী ক্যাডারদের ভয়ে মানুষ তটস্থ থাকতো। বহু মানুষকে তিনি পিটিয়ে জখম করেছেন। বিপ্লবী কমিউনিষ্ট পার্টির শোচনীয় পরিস্থিতিতে তিনি যোগ দেন বিএনপিতে। বিএনপিতে যোগ দিয়ে আনোয়ার মেম্বার হয়ে ওঠেন অপ্রতিরোধ্য। তার অত্যাচারে বালিয়াডাঙ্গার বিপুল কুমারসহ এলাকার অসংখ্য সংখ্যালঘু ভারতে পাড়ি জমান। দখল করে নেন তাদের সহায় সম্পদ। বিএনপির মধু শেষ হলে মাদক স¤্রাট আনোয়ার আওয়ামী লীগের আব্দুল মান্নান গ্রুপে যোগ দেন। শুরু হয় আনোয়ার মেম্বারের নতুন মিশন। বিচারের নামে চাঁদাবাজী ও মাদক ব্যবসা তার প্রধান হাতিয়োর হয়ে ওঠে। আবু তাহেরের মেয়ের প্রেম ঘটিত বিষয় নিয়ে বিচারের নামে ৪০ হাজার টাকা জোর পুর্বক আদায় করা হয়। বানুড়িয়া গ্রামের আনসার আলীকে বাজারে প্রকাশ্যে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়। বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের তনু মিয়ার দুবাই প্রবাসি ছেলে শাহজাহান বাড়ি আসলে রানী ঘটিত কেলেংকারী দিয়ে তার পাসপোর্ট আটকিয়ে ৩৮ হাজার টাকা আদায় করে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, নাটোর জেলার বাঁশিওয়ালা বিল্লাল হোসনের স্ত্রী ছিল সুন্দরী। আনোয়ার মেম্বারের কু-নজর পড়ে তার দিকে। এরপর বিল্লালের স্ত্রীকে এক হিন্দুর বিয়ের বরযাত্রী হিসেবে নিয়ে যায় এবং সারা রাত মদ পান করে ফুর্তি মারে। বিষয়টি জানতে পেরে বাঁশিওয়ালা বিল্লাল জীবন বাাঁচাতে রাতের আঁধারে স্ত্রী সন্তান ফেলে পালিয়ে যায়। বিল্লালের সাজানো সংসার ভেঙ্গে দেয় আনোয়ার মেম্বার। বিষয়টি সে সময় ৬নং ত্রিলোচানপুর ইউনিয়ানের সাবেক চেয়ারম্যন জয়নালকে জানিয়েও কোন সুবিচার পাননি বিল্লাল। তবে সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন ঘটনাটি সথ্য বলে স্বীকার করেছেন। এলাকাবাসির ভাষ্যমতে মাদক ব্যবসা ছাড়াও এ ধরণের হাজারো অপকর্মের নায়ক হচ্ছে আনোয়ার মেম্বার। তার ভয়ে কেও প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। মেম্বার নির্বাচিত হলেও গণমানুষের তিনি কোন উপকার করেন না বলে অভিযোগ। তার ধ্যান জ্ঞান মাদক ব্যবসা নিয়ে। কোন মানুষ বিপদে পড়লে টাকা ছাড়া তার কোন সাহায্য পান না ভোটাররা। বিষয়টি নিয়ে আনোয়ার মেম্বারের সাথে কথা বলার জন্য তার ০১৭১২-৭৯৮৭৬৫ নাম্বারের মোবাইলে একাধিক বার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, আনোয়ার মেম্বারের নামে ইতিপূর্বে একটি ফেনসিডিলের মামলা রয়েছে। তিনি আরো জানান, আনোয়ার হোসেন মেম্বার নির্বাচিত হওয়ার পর পুলিশ তাকে দুই বার আটক করে। তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এলাকাবাসি আনোয়ার মেম্বারের মাদক সা¤্রাজ্য ধ্বংসে পুলিশ সুপার ও র‌্যাবের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।