ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

আলমডাঙ্গায় বয়স কমিয়ে চাকরি নেয়ার অভিযোগ পরিবার কল্যাণ সহকারী তৌহিদা খাতুনের বিরুদ্ধে

ছেলের সাথে মায়ের বয়সের পার্থক্য ৯ বছর, তদন্তের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ১০:৫৫:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৮ বার পড়া হয়েছে

আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে কর্মরত পরিবার কল্যাণ সহকারী তৌহিদা খাতুন। তার আর তার ছেলের বয়সের পার্থক্য নিয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে চলছে ব্যাপক হাসাহাসি। মায়ের বয়সের সাথে ছেলের বয়সের ব্যবধান মাত্র ৯ বছর। অভিযোগ, বয়স কমিয়ে চাকরি নেয়ার। আবার দাবি উঠেছে, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ্যে আনার। তবে পরিবার কল্যাণ সহকারী তৌহিদা খাতুন বলছেন, বয়সের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময়কার শিক্ষক বয়স কমিয়েছেন।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে পরিবার কল্যাণ সহকারী হিসেবে চাকরি করেন তৌহিদা খাতুন। তার স্বামী খলিলুর রহমান প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক হিসেবে আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরি করেন। তৌহিদা খাতুনের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকা অনুযায়ী জন্ম তারিখ ১৯৮৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর। ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্রে তার পেশা গৃহিনী। তৌহিদা খাতুনের ছেলের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকা অনুযায়ী জন্ম ১৯৯৫ সালের ৪ জানুয়ারি। সেই হিসেবে মা এবং ছেলের বয়সের পার্থক্য মাত্র ৯ বছর।

বিষয়টি নিয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলাসহ জেলার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে হাস্যরস। আবার চাকরি নেওয়ার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে বয়স কমানো নাকি ভুলবশত, এই অবস্থা সেটিও অপরিষ্কার। তৌহিদা খাতুনের দাবি, অষ্টম শ্রেণি পাশের সার্টিফিকেট যোগাড় করে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ক্লাস নাইনে ভর্তি হন তিনি। সেসময়কার শিক্ষকই তার বয়স কমিয়েছে। তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্ত দিয়ে কয়েকজন পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা-কর্মচারী বলেন, তৌহিদা খাতুনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। একবার অভিযোগ হয়েছিল, কিন্তু সেটার তদন্ত কোন দিকে গেছে, কেউ জানে না। আর তার স্বামী লাইন লবিং করে তার চাকরি দিয়েছে। কীভাবে মা-ছেলের বয়সের পার্থক্য মাত্র ৯ বছর হয়, সেটা ভাবার বিষয়।

পরিবার কল্যাণ সহকারী তৌহিদা খাতুন বলেন, ‘২০০০ সালে আমি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নাইনে ভর্তি হয়। ২০০৩ সালে পাশ করে বের হয়। চাঁদপুর হাইস্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণি পাশের সনদ নিয়ে ভর্তি হই। বয়স কত দিলো, কী এসব হ্যান-ত্যান আমি কিছু বুঝি না। আমি চাকরি নিয়েছি ২০১২ সালে। বয়স তো স্যার কমিয়ে দিয়েছে। এটার জন্য আমি দায়ী নই। চাঁদপুরের হেড মাস্টার সার্টিফিকেট দিয়েছে, আর পাইলট স্কুলের হেড মাস্টার ভর্তি নিয়েছে। বিবাহের পরে আমি ভর্তি হয়েছি। তখন অতো ধরাধরতি ছিল না। সবাই তাই করেছে। স্কুলে না পড়ে এইট পাশের সার্টিফিকেট নিয়ে চাকরি করছে না মানুষ। আপনি না দেখলেও আমাদের অফিসেই অনেক আছে।’

তৌহিদা খাতুনের স্বামী খলিলুর রহমান বলেন, উন্মুক্তে যারা ভর্তি হয়, তারা সবাই বয়স কমিয়েই ভর্তি হয়। সেটা ২২ বছর আগের ঘটনা। সেই হামিদ স্যার মারা গেছে। ভর্তি করার সময় হেড মাস্টাররা বয়স কমিয়ে দিয়েছে। স্কুলের ওই জন্ম তারিখ অনুযায়ীই এনআইডি কার্ড করানো। পরীক্ষা দিয়ে চাকরি হয়েছে। কোনো যোগাযোগ নেই।
আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এএস মাহমুদ শাহরিয়ার বলেন, ‘আমি অল্প কিছুদিন আগেই যোগদান করেছি। এ বিষয়ে তেমন কিছু জানি না।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

আলমডাঙ্গায় বয়স কমিয়ে চাকরি নেয়ার অভিযোগ পরিবার কল্যাণ সহকারী তৌহিদা খাতুনের বিরুদ্ধে

ছেলের সাথে মায়ের বয়সের পার্থক্য ৯ বছর, তদন্তের দাবি

আপলোড টাইম : ১০:৫৫:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে কর্মরত পরিবার কল্যাণ সহকারী তৌহিদা খাতুন। তার আর তার ছেলের বয়সের পার্থক্য নিয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে চলছে ব্যাপক হাসাহাসি। মায়ের বয়সের সাথে ছেলের বয়সের ব্যবধান মাত্র ৯ বছর। অভিযোগ, বয়স কমিয়ে চাকরি নেয়ার। আবার দাবি উঠেছে, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ্যে আনার। তবে পরিবার কল্যাণ সহকারী তৌহিদা খাতুন বলছেন, বয়সের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময়কার শিক্ষক বয়স কমিয়েছেন।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে পরিবার কল্যাণ সহকারী হিসেবে চাকরি করেন তৌহিদা খাতুন। তার স্বামী খলিলুর রহমান প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক হিসেবে আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরি করেন। তৌহিদা খাতুনের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকা অনুযায়ী জন্ম তারিখ ১৯৮৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর। ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্রে তার পেশা গৃহিনী। তৌহিদা খাতুনের ছেলের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকা অনুযায়ী জন্ম ১৯৯৫ সালের ৪ জানুয়ারি। সেই হিসেবে মা এবং ছেলের বয়সের পার্থক্য মাত্র ৯ বছর।

বিষয়টি নিয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলাসহ জেলার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে হাস্যরস। আবার চাকরি নেওয়ার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে বয়স কমানো নাকি ভুলবশত, এই অবস্থা সেটিও অপরিষ্কার। তৌহিদা খাতুনের দাবি, অষ্টম শ্রেণি পাশের সার্টিফিকেট যোগাড় করে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ক্লাস নাইনে ভর্তি হন তিনি। সেসময়কার শিক্ষকই তার বয়স কমিয়েছে। তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্ত দিয়ে কয়েকজন পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা-কর্মচারী বলেন, তৌহিদা খাতুনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। একবার অভিযোগ হয়েছিল, কিন্তু সেটার তদন্ত কোন দিকে গেছে, কেউ জানে না। আর তার স্বামী লাইন লবিং করে তার চাকরি দিয়েছে। কীভাবে মা-ছেলের বয়সের পার্থক্য মাত্র ৯ বছর হয়, সেটা ভাবার বিষয়।

পরিবার কল্যাণ সহকারী তৌহিদা খাতুন বলেন, ‘২০০০ সালে আমি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নাইনে ভর্তি হয়। ২০০৩ সালে পাশ করে বের হয়। চাঁদপুর হাইস্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণি পাশের সনদ নিয়ে ভর্তি হই। বয়স কত দিলো, কী এসব হ্যান-ত্যান আমি কিছু বুঝি না। আমি চাকরি নিয়েছি ২০১২ সালে। বয়স তো স্যার কমিয়ে দিয়েছে। এটার জন্য আমি দায়ী নই। চাঁদপুরের হেড মাস্টার সার্টিফিকেট দিয়েছে, আর পাইলট স্কুলের হেড মাস্টার ভর্তি নিয়েছে। বিবাহের পরে আমি ভর্তি হয়েছি। তখন অতো ধরাধরতি ছিল না। সবাই তাই করেছে। স্কুলে না পড়ে এইট পাশের সার্টিফিকেট নিয়ে চাকরি করছে না মানুষ। আপনি না দেখলেও আমাদের অফিসেই অনেক আছে।’

তৌহিদা খাতুনের স্বামী খলিলুর রহমান বলেন, উন্মুক্তে যারা ভর্তি হয়, তারা সবাই বয়স কমিয়েই ভর্তি হয়। সেটা ২২ বছর আগের ঘটনা। সেই হামিদ স্যার মারা গেছে। ভর্তি করার সময় হেড মাস্টাররা বয়স কমিয়ে দিয়েছে। স্কুলের ওই জন্ম তারিখ অনুযায়ীই এনআইডি কার্ড করানো। পরীক্ষা দিয়ে চাকরি হয়েছে। কোনো যোগাযোগ নেই।
আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এএস মাহমুদ শাহরিয়ার বলেন, ‘আমি অল্প কিছুদিন আগেই যোগদান করেছি। এ বিষয়ে তেমন কিছু জানি না।’