ইপেপার । আজ শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিচার বিভাগ নিয়ে আজ রোড ম্যাপ দেবেন প্রধান বিচারপতি

কম সময়ে বিচার নিশ্চিত করাই চ্যালেঞ্জ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৩:৪২:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ১ বার পড়া হয়েছে

৪০ লাখ মামলার ভারে ন্যুব্জ বিচার বিভাগ। বিপুলসংখ্যক এই মামলা নিষ্পত্তির ভার অধস্তন আদালতের প্রায় ২ হাজার বিচারকের ওপর। শুধু বিচারক-সংকটই নয়, রয়েছে এজলাসের স্বল্পতা। এজলাস ও বিচারক-সংকটের কারণে স্বল্প সময়ে বিচারপ্রার্থী জনগণকে বিচার নিশ্চিত করাই বিচার বিভাগের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রয়েছে কোর্ট স্টাফের সংকট। এখনো অনেক আদালতে নেই স্টেনোগ্রাফার। ফলে সাক্ষ্যগ্রহণ থেকে শুরু করে রায় ও আদেশ হাতে লিখতে হচ্ছে বিচারকদের। নষ্ট হচ্ছে বিচারিক কর্মঘণ্টা। যার প্রভাব পড়ছে মামলার নিষ্পত্তির হারে। এছাড়া নতুন আইন প্রণয়ন করা হলেও সেই আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধের বিচারের জন্য নতুন আদালত বা ট্রাইব্যুনাল সৃষ্টি করা হয়নি। ঐ সব আইনের মামলার বিচারের ভার পড়ছে অন্য মামলার বিচারের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারকদের ওপর। ফলে নানা সংকট ও সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে জেলা পর্যায়ের আদালত ও এর বিচারকরা। দীর্ঘদিন ধরে পুঞ্জীভূত থাকা এসব সংকট নিরসনে বারবার দাবি জানিয়ে আসছেন বিচারকরা। কিন্তু সেসব সমস্যার প্রতিকার মিলেছে খুবই কম।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই দেশের অধস্তন আদালতের সকল পর্যায়ের বিচারকদের উদ্দেশে আজ শনিবার অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ঘোষণা করবেন বিচার বিভাগের রোডম্যাপ। যেখানে উঠে আসবে নানা সমস্যা ও সমাধানের আশ্বাসসহ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্বতন্ত্রীকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক পৃথকীকরণের বিষয়গুলো। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান। থাকবেন আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিগণ। অংশ নেবেন নিম্ন আদালতের প্রায় ২ হাজার বিচারক।
প্রসঙ্গত, বিগত সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের পহেলা নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক হয় বিচার বিভাগ। পৃথকীকরণের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যম ৩৯৪ জন সহকারী জজ নিয়োগ করা হয়। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ সরকার। গত ১৬ বছরে দেশ শাসনের দায়িত্বে থাকলেও বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ সংক্রান্ত মাসদার হোসেন মামলার রায় অনুযায়ী প্রতিষ্ঠা করেনি বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয়। ফলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদায়ন ও পদোন্নতির নিয়ন্ত্রণ ছিল একচ্ছত্রভাবে আইন মন্ত্রণালয়ের হাতে। শুধু সুপ্রিম কোর্ট থেকে নেওয়া হত পরামর্শ। বিচার বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বিচারকদের পদায়ন, বদলি ও পদোন্নতির বিষয়টি পৃথক সচিবালয় করে সুপ্রিম কোর্টের হাতে রাখা উচিত। এটা করা সম্ভব হলে বিচারকদের বদলি, পদায়ন ও পদোন্নতি নিয়ে ভবিষ্যতে প্রশ্ন উঠার সুযোগ কম থাকবে। বিচারকরা মনে করেন, কোনো রাজনৈতিক সরকার বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের উদ্যোগ নেয়নি। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের রায় কার্যকর করা হয়। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে বিচার বিভাগের পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। শুধু পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠাই নয়, মামলা জট নিরসনে কার্যকর পন্থা বের করার সময় এসেছে বলে মনে করেন বিচারাঙ্গনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে আইন কমিশন মনে করে, গত শতকের আশির দশকের শুরু হতে অনেক নতুন নতুন আইনের আওতায় নানা ধরনের আদালত সৃষ্টি করা হয়। সেই সকল নতুন আদালতের দায়িত্ব বিদ্যমান বিচারকগণকেই তাদের পূর্বের বিচারিক কারে‌্যর অতিরিক্ত হিসেবে পালন করতে হয়। ফলে বিচার কারে‌্যর এই বাড়তি চাপ সামাল দেওয়া সম্ভব হয় না। যার ফলে একদিকে স্তূপীকৃত মামলার পরিমাণ বাড়তে থাকে। অন্তিমে অনেক ক্ষেত্রেই ন্যায়বিচার ব্যাহত হতে থাকে। বিচার বিভাগের ওপর সাধারণ জনগণের আস্থা কমতে থাকে।
কমিশন বলছে, বর্তমানে জেলা পর্যায়ে প্রায় ৪০ লাখ মামলা জটের একমাত্র কারণ না হলেও প্রধান কারণ বিচারকের সংখ্যার অপ্রতুলতা। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে এজলাসের সংকট। কিছু কিছু নতুন আদালত ভবন নির্মাণ শুরু হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল। ফলে এজলাস ও বিচারক সংকটের কারণে এই জট কোনোভাবেই সমাধান সম্ভব নয়। বরঞ্চ মামলা নিষ্পত্তির হার ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলেও প্রতিদিনই নতুন নতুন মামলা মোকদ্দমা দায়ের হচ্ছে ও মামলার সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিচারক বলেন, ভূমি জরিপের মামলা নিষ্পত্তির জন্য দেশের ৬১টি জেলার মধ্যে ৪২টি জেলায় ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। ১৯ জেলায় এখনো কোনো ট্রাইব্যুনাল নেই। ৫৪ জেলায় নেই কোনো ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনালও। ২০১৮ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করা হলেও এসব আইনের অধীনে দায়েরকৃত মামলা নিষ্পত্তির জন্য কোনো আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বা যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার বিচারকরা এসব মামলার বিচার করছেন।
অধস্তন আদালতের একাধিক বিচারক বলেন, সহকারী জজ ও সিনিয়র সহকারী জজদের স্টেনোগ্রাফার নাই। স্টোনোগ্রাফারের পদ সৃষ্টি হলেও এখনো নিয়োগ হয়নি। স্টোনোগ্রাফার না থাকায় রায় ও আদেশ থেকে শুরু করে মামলার বিচার কার্যক্রম হাতে লিখতে হচ্ছে বিচারকদের। এছাড়া দুই বছর আগে ৭৩ জন বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে পদোন্নতি পান। এসব বিচারকরা এখন পর্যন্ত আলাদা গাড়ি সুবিধা পাননি। যদিও এ ধরনের বিচারকরা জঙ্গি হামলাসহ নানা স্পর্শকাতর মামলার বিচার করছেন। যার কারণে একটা নিরাপত্তহীনতার শঙ্কায় থাকতে হয় তাদের। যদিও প্রশাসনের উপসচিব পদমর্যাদার পর্যায়ের কর্মকর্তারা বিনা সুদে গাড়ি ক্রয়ের ঋণ সুবিধা পাচ্ছেন। এছাড়া জেলা পর্যায়ে বিচারকদের নেই সরকারি আবাসন ব্যবস্থা। ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে বিচারকদের। বিচারকরা বলছেন, এসব সংকট নিরসন করা গেলেই বাড়বে মামলা নিষ্পত্তির হার। যার মধ্য দিয়ে বিচারপ্রার্থী জনগণের আস্থা বাড়বে বিচার বিভাগের প্রতি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

বিচার বিভাগ নিয়ে আজ রোড ম্যাপ দেবেন প্রধান বিচারপতি

কম সময়ে বিচার নিশ্চিত করাই চ্যালেঞ্জ

আপলোড টাইম : ০৩:৪২:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

৪০ লাখ মামলার ভারে ন্যুব্জ বিচার বিভাগ। বিপুলসংখ্যক এই মামলা নিষ্পত্তির ভার অধস্তন আদালতের প্রায় ২ হাজার বিচারকের ওপর। শুধু বিচারক-সংকটই নয়, রয়েছে এজলাসের স্বল্পতা। এজলাস ও বিচারক-সংকটের কারণে স্বল্প সময়ে বিচারপ্রার্থী জনগণকে বিচার নিশ্চিত করাই বিচার বিভাগের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রয়েছে কোর্ট স্টাফের সংকট। এখনো অনেক আদালতে নেই স্টেনোগ্রাফার। ফলে সাক্ষ্যগ্রহণ থেকে শুরু করে রায় ও আদেশ হাতে লিখতে হচ্ছে বিচারকদের। নষ্ট হচ্ছে বিচারিক কর্মঘণ্টা। যার প্রভাব পড়ছে মামলার নিষ্পত্তির হারে। এছাড়া নতুন আইন প্রণয়ন করা হলেও সেই আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধের বিচারের জন্য নতুন আদালত বা ট্রাইব্যুনাল সৃষ্টি করা হয়নি। ঐ সব আইনের মামলার বিচারের ভার পড়ছে অন্য মামলার বিচারের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারকদের ওপর। ফলে নানা সংকট ও সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে জেলা পর্যায়ের আদালত ও এর বিচারকরা। দীর্ঘদিন ধরে পুঞ্জীভূত থাকা এসব সংকট নিরসনে বারবার দাবি জানিয়ে আসছেন বিচারকরা। কিন্তু সেসব সমস্যার প্রতিকার মিলেছে খুবই কম।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই দেশের অধস্তন আদালতের সকল পর্যায়ের বিচারকদের উদ্দেশে আজ শনিবার অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ঘোষণা করবেন বিচার বিভাগের রোডম্যাপ। যেখানে উঠে আসবে নানা সমস্যা ও সমাধানের আশ্বাসসহ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্বতন্ত্রীকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক পৃথকীকরণের বিষয়গুলো। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান। থাকবেন আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিগণ। অংশ নেবেন নিম্ন আদালতের প্রায় ২ হাজার বিচারক।
প্রসঙ্গত, বিগত সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের পহেলা নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক হয় বিচার বিভাগ। পৃথকীকরণের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যম ৩৯৪ জন সহকারী জজ নিয়োগ করা হয়। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ সরকার। গত ১৬ বছরে দেশ শাসনের দায়িত্বে থাকলেও বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ সংক্রান্ত মাসদার হোসেন মামলার রায় অনুযায়ী প্রতিষ্ঠা করেনি বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয়। ফলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদায়ন ও পদোন্নতির নিয়ন্ত্রণ ছিল একচ্ছত্রভাবে আইন মন্ত্রণালয়ের হাতে। শুধু সুপ্রিম কোর্ট থেকে নেওয়া হত পরামর্শ। বিচার বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বিচারকদের পদায়ন, বদলি ও পদোন্নতির বিষয়টি পৃথক সচিবালয় করে সুপ্রিম কোর্টের হাতে রাখা উচিত। এটা করা সম্ভব হলে বিচারকদের বদলি, পদায়ন ও পদোন্নতি নিয়ে ভবিষ্যতে প্রশ্ন উঠার সুযোগ কম থাকবে। বিচারকরা মনে করেন, কোনো রাজনৈতিক সরকার বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের উদ্যোগ নেয়নি। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের রায় কার্যকর করা হয়। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে বিচার বিভাগের পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। শুধু পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠাই নয়, মামলা জট নিরসনে কার্যকর পন্থা বের করার সময় এসেছে বলে মনে করেন বিচারাঙ্গনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে আইন কমিশন মনে করে, গত শতকের আশির দশকের শুরু হতে অনেক নতুন নতুন আইনের আওতায় নানা ধরনের আদালত সৃষ্টি করা হয়। সেই সকল নতুন আদালতের দায়িত্ব বিদ্যমান বিচারকগণকেই তাদের পূর্বের বিচারিক কারে‌্যর অতিরিক্ত হিসেবে পালন করতে হয়। ফলে বিচার কারে‌্যর এই বাড়তি চাপ সামাল দেওয়া সম্ভব হয় না। যার ফলে একদিকে স্তূপীকৃত মামলার পরিমাণ বাড়তে থাকে। অন্তিমে অনেক ক্ষেত্রেই ন্যায়বিচার ব্যাহত হতে থাকে। বিচার বিভাগের ওপর সাধারণ জনগণের আস্থা কমতে থাকে।
কমিশন বলছে, বর্তমানে জেলা পর্যায়ে প্রায় ৪০ লাখ মামলা জটের একমাত্র কারণ না হলেও প্রধান কারণ বিচারকের সংখ্যার অপ্রতুলতা। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে এজলাসের সংকট। কিছু কিছু নতুন আদালত ভবন নির্মাণ শুরু হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল। ফলে এজলাস ও বিচারক সংকটের কারণে এই জট কোনোভাবেই সমাধান সম্ভব নয়। বরঞ্চ মামলা নিষ্পত্তির হার ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলেও প্রতিদিনই নতুন নতুন মামলা মোকদ্দমা দায়ের হচ্ছে ও মামলার সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিচারক বলেন, ভূমি জরিপের মামলা নিষ্পত্তির জন্য দেশের ৬১টি জেলার মধ্যে ৪২টি জেলায় ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। ১৯ জেলায় এখনো কোনো ট্রাইব্যুনাল নেই। ৫৪ জেলায় নেই কোনো ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনালও। ২০১৮ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করা হলেও এসব আইনের অধীনে দায়েরকৃত মামলা নিষ্পত্তির জন্য কোনো আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বা যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার বিচারকরা এসব মামলার বিচার করছেন।
অধস্তন আদালতের একাধিক বিচারক বলেন, সহকারী জজ ও সিনিয়র সহকারী জজদের স্টেনোগ্রাফার নাই। স্টোনোগ্রাফারের পদ সৃষ্টি হলেও এখনো নিয়োগ হয়নি। স্টোনোগ্রাফার না থাকায় রায় ও আদেশ থেকে শুরু করে মামলার বিচার কার্যক্রম হাতে লিখতে হচ্ছে বিচারকদের। এছাড়া দুই বছর আগে ৭৩ জন বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে পদোন্নতি পান। এসব বিচারকরা এখন পর্যন্ত আলাদা গাড়ি সুবিধা পাননি। যদিও এ ধরনের বিচারকরা জঙ্গি হামলাসহ নানা স্পর্শকাতর মামলার বিচার করছেন। যার কারণে একটা নিরাপত্তহীনতার শঙ্কায় থাকতে হয় তাদের। যদিও প্রশাসনের উপসচিব পদমর্যাদার পর্যায়ের কর্মকর্তারা বিনা সুদে গাড়ি ক্রয়ের ঋণ সুবিধা পাচ্ছেন। এছাড়া জেলা পর্যায়ে বিচারকদের নেই সরকারি আবাসন ব্যবস্থা। ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে বিচারকদের। বিচারকরা বলছেন, এসব সংকট নিরসন করা গেলেই বাড়বে মামলা নিষ্পত্তির হার। যার মধ্য দিয়ে বিচারপ্রার্থী জনগণের আস্থা বাড়বে বিচার বিভাগের প্রতি।