ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
চুয়াডাঙ্গায় ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করার দাবি

সড়ক অবরোধে যানজটের ভোগান্তি, ফেসবুকে সমালোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৮:১০:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৫ বার পড়া হয়েছে

বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করার দাবিতে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা পৌনে ২টা পর্যন্ত শহরের বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বর ও মুক্তমঞ্চে ‘চুয়াডাঙ্গা জেলার শিক্ষার্থীগণ’ ব্যানারে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন ও অবরোধ করে তারা।

কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘ সিলেবাসের কারণে তারা পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপের মুখে পড়ছে এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে। এ কারণে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করার দাবিতে তারা মানববন্ধন করতে বাধ্য হয়েছে। এদিকে, মাবনবন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে, এতে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়, এবং যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন।
দাবি আদায়ের এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এম এ বারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্কুলের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। তারা বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত হয়ে দাবি করে, ‘এক দফা এক দাবি, সংক্ষিপ্ত সিলেবাস চাই’ ইত্যাদি।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী হাসান শাহারিয়ার অপূর্ব বলেন, ‘আমরা এত বড় সিলেবাস নিয়ে মানসিক চাপে আছি। আমাদের যে সিলেবাস দেয়া হয়েছে, তা অনুযায়ী পরীক্ষার প্রস্তুতির পর্যাপ্ত সময় নেই। অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টার নিকট আমাদের আবেদন, সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা হোক, যাতে আমরা সুষ্ঠুভাবে পড়াশোনা করতে পারি।’

এদিকে, অবরোধের ফলে শহরের প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়, যার ফলে অনেকেই তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে সমস্যার মুখে পড়েন। যাত্রীরা বলেন, শিক্ষার্থীরা স্কুল বা কলেজের মধ্যে তাদের আন্দোলন করতে পারতো। তাহলে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হতো না। সবাই বিভিন্ন কাজে ছুটছেন, আটকে থাকা আমাদের জন্য ভোগান্তির কারণ হচ্ছে।

এছাড়াও, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অনেকেই এই ঘটনার ছবি ও ভিডিও পোস্ট করেছেন। তারা পোস্টে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানালেও দাবি আদায়ের জন্য সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলার সমালোচনা করেন। একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক, কিন্তু সড়ক অবরোধ করে সাধারণ মানুষের চলাচলে ভোগান্তি সৃষ্টি করা ঠিক হয়নি।’
এদিকে, তীব্র রোদ উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনের খবর পেয়ে বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বর মুক্ত মঞ্চে ছুটে আসেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিবুল আলম ও সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম আশিস মোমতাজ। এসময় ইউএনও শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং দাবি স্মারকলিপি আকারে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রেরণের পরামর্শ দেন।

ইউএনও নাজিবুল আলম শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘তোমাদের দাবি আমরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব। তবে সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দাবি জানাতে হবে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, এমন কর্মসূচি থেকে বিরত থেকে স্মারকলিপি প্রস্তুত করে জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দাও।’

শিক্ষার্থীরা ইউএনও’র এই পরামর্শ মেনে দ্রুত স্মারকলিপি প্রস্তুতের আশ্বাস দেন। এছাড়া শিক্ষার্থীরা পূর্বে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নবম শ্রেণির পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে পালিত মানববন্ধনের ভুল স্বীকার করে। শিক্ষার্থীরা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের পূর্বের দাবি ভুল ছিল। এখন আমরা ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করার দাবি জানাচ্ছি, যাতে শিক্ষার্থীরা মানসিক চাপে না থাকে।’

মানববন্ধনে শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাকিউল ইসলাম প্লাবন, এনজামুল তাহমিদ আলভি, ফাতেমাতুজ জোহরা হাবিবা, মো. ওয়ালিদ হোসেন প্রমুখ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করার দাবি

সড়ক অবরোধে যানজটের ভোগান্তি, ফেসবুকে সমালোচনা

আপলোড টাইম : ০৮:১০:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করার দাবিতে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা পৌনে ২টা পর্যন্ত শহরের বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বর ও মুক্তমঞ্চে ‘চুয়াডাঙ্গা জেলার শিক্ষার্থীগণ’ ব্যানারে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন ও অবরোধ করে তারা।

কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘ সিলেবাসের কারণে তারা পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপের মুখে পড়ছে এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে। এ কারণে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করার দাবিতে তারা মানববন্ধন করতে বাধ্য হয়েছে। এদিকে, মাবনবন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে, এতে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়, এবং যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন।
দাবি আদায়ের এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এম এ বারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্কুলের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। তারা বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত হয়ে দাবি করে, ‘এক দফা এক দাবি, সংক্ষিপ্ত সিলেবাস চাই’ ইত্যাদি।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী হাসান শাহারিয়ার অপূর্ব বলেন, ‘আমরা এত বড় সিলেবাস নিয়ে মানসিক চাপে আছি। আমাদের যে সিলেবাস দেয়া হয়েছে, তা অনুযায়ী পরীক্ষার প্রস্তুতির পর্যাপ্ত সময় নেই। অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টার নিকট আমাদের আবেদন, সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা হোক, যাতে আমরা সুষ্ঠুভাবে পড়াশোনা করতে পারি।’

এদিকে, অবরোধের ফলে শহরের প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়, যার ফলে অনেকেই তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে সমস্যার মুখে পড়েন। যাত্রীরা বলেন, শিক্ষার্থীরা স্কুল বা কলেজের মধ্যে তাদের আন্দোলন করতে পারতো। তাহলে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হতো না। সবাই বিভিন্ন কাজে ছুটছেন, আটকে থাকা আমাদের জন্য ভোগান্তির কারণ হচ্ছে।

এছাড়াও, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অনেকেই এই ঘটনার ছবি ও ভিডিও পোস্ট করেছেন। তারা পোস্টে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানালেও দাবি আদায়ের জন্য সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলার সমালোচনা করেন। একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক, কিন্তু সড়ক অবরোধ করে সাধারণ মানুষের চলাচলে ভোগান্তি সৃষ্টি করা ঠিক হয়নি।’
এদিকে, তীব্র রোদ উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনের খবর পেয়ে বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বর মুক্ত মঞ্চে ছুটে আসেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিবুল আলম ও সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম আশিস মোমতাজ। এসময় ইউএনও শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং দাবি স্মারকলিপি আকারে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রেরণের পরামর্শ দেন।

ইউএনও নাজিবুল আলম শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘তোমাদের দাবি আমরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব। তবে সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দাবি জানাতে হবে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, এমন কর্মসূচি থেকে বিরত থেকে স্মারকলিপি প্রস্তুত করে জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দাও।’

শিক্ষার্থীরা ইউএনও’র এই পরামর্শ মেনে দ্রুত স্মারকলিপি প্রস্তুতের আশ্বাস দেন। এছাড়া শিক্ষার্থীরা পূর্বে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নবম শ্রেণির পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে পালিত মানববন্ধনের ভুল স্বীকার করে। শিক্ষার্থীরা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের পূর্বের দাবি ভুল ছিল। এখন আমরা ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করার দাবি জানাচ্ছি, যাতে শিক্ষার্থীরা মানসিক চাপে না থাকে।’

মানববন্ধনে শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাকিউল ইসলাম প্লাবন, এনজামুল তাহমিদ আলভি, ফাতেমাতুজ জোহরা হাবিবা, মো. ওয়ালিদ হোসেন প্রমুখ।