ইপেপার । আজ সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গাসহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তারেক রহমানের মতবিনিময়

জনগণের প্রত্যাশা পূরণের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:০৪:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৩১ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরসহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলার বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে মতবিনিময় করেছেন। গতকাল সোমবার বিকেল পাঁচটায় চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা চুয়াডাঙ্গা চেম্বার ভবন থেকে এই ভার্চুয়াল সভায় যুক্ত হন। সভায় তারেক রহমান বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং দলের ভবিষ্যৎ কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু ও সদস্যসচিব শরীফুজ্জামান শরীফসহ নেতা-কর্মীরা তারেক রহমানের নির্দেশনা গভীর মনোযোগ সহকারে শোনেন।
ভার্চুয়াল মাধ্যমে তারেক রহমান নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান এবং দলীয় কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। আলোচনা সভায় হিংসা ছেড়ে দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণের মাধ্যমে অতীতের সব অন্যায়ের জবাব দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপনে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তৃণমূলের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময়ের অংশ হিসেবে খুলনা বিভাগের সভায় ভার্চুয়ালি তিনি এই নির্দেশ দেন।
তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের মালিকানা এ দেশের মানুষের। স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন তার ন্যায্য গণতান্ত্রিক অধিকার। দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ দল বিএনপি জনগণের ভোটাধিকার নির্বিঘ্ন করতে দলীয় সরকারের পরিবর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সংযুক্ত করেছিল। কিন্তু ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে, জনগণকে ভোটাধিকার বঞ্চিত করার লক্ষ্যে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার সেটা সংবিধান থেকে মুছে দিয়ে তিন তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত রেখেছে। আমরা জনগণের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে আবারও সংযুক্ত করতে চাই।

বিএনপি দেশের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতি করে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, মানুষের নিরাপত্তা, বাকস্বাধীনতা, শান্তিতে ব্যবসা-বাণিজ্য করার অধিকার, তরুণ ও যুবকের কর্মসংস্থান, নারীর মর্যাদা ও নিরাপত্তা, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-গোষ্ঠী, সমুল পাহাড়ি নির্বিশেষে সবার জন্য সমান রাষ্ট্রীয় অধিকার নিশ্চিত করা, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করা, বিচার আইন ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা, সকলের জন্য স্বাস্থ্য সুবিধা নিশ্চিত করা, কৃষিপণের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি এবং সর্বোপরি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করাই বিএনপি রাজনীতির অগ্রাধিকার।
তারেক রহমান বলেন, যে বাড়িতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাস করেছেন, যে বাড়ির প্রতিটি ইঞ্চিতে তার ও তার ভাইয়ের শৈশব-কৈশোরের স্মৃতি জড়িয়ে আছে, যে বাড়ি তার মায়ের সংসারের সূচনা আর বৈধব্যের বেদনার সাক্ষী; সেই বাড়ি থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কতটা অসম্মানজনক ও অন্যায়ভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছে, সেটা দেশবাসী দেখেছে। বিনা চিকিৎসায় তার একমাত্র ভাইকে নিদারুণ অবহেলায় মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। ঠিক তেমনিভাবে দলের তৃণমূলের লাখ লাখ নেতা-কর্মীকে মামলা-হামলায় জর্জরিত হয়ে পরিবার-পরিজন বিসর্জন দিয়ে, ব্যবসা, চাকরি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছে। হয় কারাগারে, নয়ত আত্মগোপনে, আর অগণিত নেতা-কর্মী অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন দেশকে ভালোবেসে, গণতন্ত্রে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তৃণমূলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, তাঁরা যেমন অতীতের মতো প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করেন না, তেমনি তিনি এবং দলের প্রধান দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও জানেন যে, দেশের মানুষও গত ১৭ বছর বাংলাদেশ নামের এক বৃহত্তর কারাগারে বন্দি জীবনযাপন করেছেন। সুতরাং আজ হিংসা নয়, বরং দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণের মাধ্যমে অতীতের সব অন্যায়ের জবাব দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।

তারেক রহমান আরও বলেন, বছরের পর বছর ধরে আন্দোলন, সংগ্রাম, ত্যাগ বঞ্চনা সহ্য করে বিএনপি আজ জনগণের যে আস্থা আর ভালোবাসা অর্জন করেছে, দলের কিছু বিপৎগামীদের হঠকারিতায় মানুষের সেই আস্থা আর প্রত্যাশার জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এটি কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না, তিনি যেই হোন না কেন।
সমবেতদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, আপনারা দলের ভাবমূর্তি বিনষ্টকারীদের চিহ্নিত করুন, প্রতিরোধ করুন, দল তাদের শুধু বহিষ্কারের অঙ্গীকারই নয়, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিচ্ছে। তিনি দলের তৃণমূলের ওপর তাঁর অগাধ আস্থা পুনর্ব্যক্ত করে এক-এগারোর দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন, দলের সকল সংকটকালে তৃণমূলই ছিল বিএনপির শক্তি, এরা শত প্রলোভন আর নির্যাতন উপেক্ষা করে ইস্পাত কঠিন ঐক্য দিয়ে দলকে ধরে রেখেছে। তিনি বলেন, তৃণমূল সঙ্গে থাকলে দল যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে যেমন সক্ষম হবে, তেমনি তার পক্ষেও অনেক সহজ হবে দল পরিচালনা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনগণের প্রত্যাশা পূরণ আর আগামীর আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে রাষ্ট্র কাঠামো সংষ্কারের ৩১ দফা কর্মসূচির মূল বিষয়গুলো তুলে ধরে এই বার্তা দেশের প্রান্তিক সব মানুষের কাছে পৌঁছানোর নির্দেশ দেন। তিনি দৃশ্যমান প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের পাশাপাশি অসংখ্য অদৃশ্য প্রতিপক্ষের মোকাবিলায় সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্বৈরাচারের পতন শুধুমাত্র প্রাথমিক বিজয়, সামনে রয়েছে প্রকৃত পরীক্ষা। ফলে আত্মতুষ্টি আর সকল শিথিলতা কাটিয়ে আগামীর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশের আপামর জনগণের দলের প্রতি সমর্থন আর ভালোবাসার প্রতিদান দিতে হবে।

ভার্চুয়াল সভায় চুয়াডাঙ্গা চেম্বার ভবন থেকে আরও যুক্ত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খাজা আবুল হাসনাত, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাড. ওয়াহিদুজ্জামান বুলা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও শ্রমিক দলের সভাপতি এম. জেনারেল ইসলাম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান খোকন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও মহিলা দলের সভাপতি রউফ উর নাহার রিনা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সদর পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিণ্টু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম নজু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও জীবননগর পৌর বিএনপির সভাপতি শাহজাহান কবির, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আমিনুল হক রোকন, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপটন, জীবননগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী, আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ওল্টু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মীর্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহাতাব উদ্দিন চুন্নু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিলিমা ইসলাম বিশ্বাস, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নুর নবী সামদানী, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও কৃষক দলের আহ্বায়ক মোকাররম হোসেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক সালমা জাহান পারুল, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আখতার হোসেন জোয়ার্দ্দার, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুর রহমান পল্টু, জীবননগর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান ডাবলু, দর্শনা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ আলী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিকুল ইসলাম পিটু, জেলা যুবদলের সভাপতি মো. শরীফুজ্জামান সিজার, সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশিদ ঝণ্টু, জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক কামরুজ্জামান বাবলু, জেলা জাসাসের সভাপতি শহিদুল হক বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এম এ তালহা, জেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব ও বাড়াদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোবারক হোসেন, জেলা ওলামা দলের সদস্যসচিব ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাওলানা আনোয়ার হোসেন, জেলা মৎস্যজীবী দলের সদস্যসচিব হাকিম মুন্সি, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক জাহানারা পারভীন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহাজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিনসহ সকল উপজেলা, থানা ও পৌরসহ বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের প্রধান নেতৃবৃন্দ।

এদিকে, একই সময়ে মেহেরপুর পৌর কমিউনিটি সেন্টার থেকে ভাচ্যুয়াল মতবিনিময় সভায় অংশ নেন জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুন, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেন, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি জাবেদ মাসুদ মিলটনসহ মেহেরপুর জেলা যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, শ্রমিক দলসহ সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গাসহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তারেক রহমানের মতবিনিময়

জনগণের প্রত্যাশা পূরণের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে

আপলোড টাইম : ০৫:০৪:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরসহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলার বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে মতবিনিময় করেছেন। গতকাল সোমবার বিকেল পাঁচটায় চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা চুয়াডাঙ্গা চেম্বার ভবন থেকে এই ভার্চুয়াল সভায় যুক্ত হন। সভায় তারেক রহমান বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং দলের ভবিষ্যৎ কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু ও সদস্যসচিব শরীফুজ্জামান শরীফসহ নেতা-কর্মীরা তারেক রহমানের নির্দেশনা গভীর মনোযোগ সহকারে শোনেন।
ভার্চুয়াল মাধ্যমে তারেক রহমান নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান এবং দলীয় কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। আলোচনা সভায় হিংসা ছেড়ে দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণের মাধ্যমে অতীতের সব অন্যায়ের জবাব দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপনে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তৃণমূলের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময়ের অংশ হিসেবে খুলনা বিভাগের সভায় ভার্চুয়ালি তিনি এই নির্দেশ দেন।
তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের মালিকানা এ দেশের মানুষের। স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন তার ন্যায্য গণতান্ত্রিক অধিকার। দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ দল বিএনপি জনগণের ভোটাধিকার নির্বিঘ্ন করতে দলীয় সরকারের পরিবর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সংযুক্ত করেছিল। কিন্তু ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে, জনগণকে ভোটাধিকার বঞ্চিত করার লক্ষ্যে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার সেটা সংবিধান থেকে মুছে দিয়ে তিন তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত রেখেছে। আমরা জনগণের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে আবারও সংযুক্ত করতে চাই।

বিএনপি দেশের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতি করে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, মানুষের নিরাপত্তা, বাকস্বাধীনতা, শান্তিতে ব্যবসা-বাণিজ্য করার অধিকার, তরুণ ও যুবকের কর্মসংস্থান, নারীর মর্যাদা ও নিরাপত্তা, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-গোষ্ঠী, সমুল পাহাড়ি নির্বিশেষে সবার জন্য সমান রাষ্ট্রীয় অধিকার নিশ্চিত করা, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করা, বিচার আইন ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা, সকলের জন্য স্বাস্থ্য সুবিধা নিশ্চিত করা, কৃষিপণের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি এবং সর্বোপরি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করাই বিএনপি রাজনীতির অগ্রাধিকার।
তারেক রহমান বলেন, যে বাড়িতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাস করেছেন, যে বাড়ির প্রতিটি ইঞ্চিতে তার ও তার ভাইয়ের শৈশব-কৈশোরের স্মৃতি জড়িয়ে আছে, যে বাড়ি তার মায়ের সংসারের সূচনা আর বৈধব্যের বেদনার সাক্ষী; সেই বাড়ি থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কতটা অসম্মানজনক ও অন্যায়ভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছে, সেটা দেশবাসী দেখেছে। বিনা চিকিৎসায় তার একমাত্র ভাইকে নিদারুণ অবহেলায় মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। ঠিক তেমনিভাবে দলের তৃণমূলের লাখ লাখ নেতা-কর্মীকে মামলা-হামলায় জর্জরিত হয়ে পরিবার-পরিজন বিসর্জন দিয়ে, ব্যবসা, চাকরি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছে। হয় কারাগারে, নয়ত আত্মগোপনে, আর অগণিত নেতা-কর্মী অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন দেশকে ভালোবেসে, গণতন্ত্রে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তৃণমূলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, তাঁরা যেমন অতীতের মতো প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করেন না, তেমনি তিনি এবং দলের প্রধান দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও জানেন যে, দেশের মানুষও গত ১৭ বছর বাংলাদেশ নামের এক বৃহত্তর কারাগারে বন্দি জীবনযাপন করেছেন। সুতরাং আজ হিংসা নয়, বরং দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণের মাধ্যমে অতীতের সব অন্যায়ের জবাব দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।

তারেক রহমান আরও বলেন, বছরের পর বছর ধরে আন্দোলন, সংগ্রাম, ত্যাগ বঞ্চনা সহ্য করে বিএনপি আজ জনগণের যে আস্থা আর ভালোবাসা অর্জন করেছে, দলের কিছু বিপৎগামীদের হঠকারিতায় মানুষের সেই আস্থা আর প্রত্যাশার জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এটি কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না, তিনি যেই হোন না কেন।
সমবেতদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, আপনারা দলের ভাবমূর্তি বিনষ্টকারীদের চিহ্নিত করুন, প্রতিরোধ করুন, দল তাদের শুধু বহিষ্কারের অঙ্গীকারই নয়, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিচ্ছে। তিনি দলের তৃণমূলের ওপর তাঁর অগাধ আস্থা পুনর্ব্যক্ত করে এক-এগারোর দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন, দলের সকল সংকটকালে তৃণমূলই ছিল বিএনপির শক্তি, এরা শত প্রলোভন আর নির্যাতন উপেক্ষা করে ইস্পাত কঠিন ঐক্য দিয়ে দলকে ধরে রেখেছে। তিনি বলেন, তৃণমূল সঙ্গে থাকলে দল যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে যেমন সক্ষম হবে, তেমনি তার পক্ষেও অনেক সহজ হবে দল পরিচালনা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনগণের প্রত্যাশা পূরণ আর আগামীর আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে রাষ্ট্র কাঠামো সংষ্কারের ৩১ দফা কর্মসূচির মূল বিষয়গুলো তুলে ধরে এই বার্তা দেশের প্রান্তিক সব মানুষের কাছে পৌঁছানোর নির্দেশ দেন। তিনি দৃশ্যমান প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের পাশাপাশি অসংখ্য অদৃশ্য প্রতিপক্ষের মোকাবিলায় সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্বৈরাচারের পতন শুধুমাত্র প্রাথমিক বিজয়, সামনে রয়েছে প্রকৃত পরীক্ষা। ফলে আত্মতুষ্টি আর সকল শিথিলতা কাটিয়ে আগামীর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশের আপামর জনগণের দলের প্রতি সমর্থন আর ভালোবাসার প্রতিদান দিতে হবে।

ভার্চুয়াল সভায় চুয়াডাঙ্গা চেম্বার ভবন থেকে আরও যুক্ত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খাজা আবুল হাসনাত, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাড. ওয়াহিদুজ্জামান বুলা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও শ্রমিক দলের সভাপতি এম. জেনারেল ইসলাম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান খোকন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও মহিলা দলের সভাপতি রউফ উর নাহার রিনা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সদর পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিণ্টু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম নজু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও জীবননগর পৌর বিএনপির সভাপতি শাহজাহান কবির, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আমিনুল হক রোকন, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপটন, জীবননগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী, আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ওল্টু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মীর্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহাতাব উদ্দিন চুন্নু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিলিমা ইসলাম বিশ্বাস, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নুর নবী সামদানী, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও কৃষক দলের আহ্বায়ক মোকাররম হোসেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক সালমা জাহান পারুল, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আখতার হোসেন জোয়ার্দ্দার, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুর রহমান পল্টু, জীবননগর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান ডাবলু, দর্শনা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ আলী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিকুল ইসলাম পিটু, জেলা যুবদলের সভাপতি মো. শরীফুজ্জামান সিজার, সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশিদ ঝণ্টু, জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক কামরুজ্জামান বাবলু, জেলা জাসাসের সভাপতি শহিদুল হক বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এম এ তালহা, জেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব ও বাড়াদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোবারক হোসেন, জেলা ওলামা দলের সদস্যসচিব ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাওলানা আনোয়ার হোসেন, জেলা মৎস্যজীবী দলের সদস্যসচিব হাকিম মুন্সি, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক জাহানারা পারভীন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহাজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিনসহ সকল উপজেলা, থানা ও পৌরসহ বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের প্রধান নেতৃবৃন্দ।

এদিকে, একই সময়ে মেহেরপুর পৌর কমিউনিটি সেন্টার থেকে ভাচ্যুয়াল মতবিনিময় সভায় অংশ নেন জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুন, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেন, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি জাবেদ মাসুদ মিলটনসহ মেহেরপুর জেলা যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, শ্রমিক দলসহ সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ।