ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহে জামায়াতে ইসলামীর আনন্দ র‌্যালি ও শোকরানা সমাবেশে

দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় জামায়াতের কাছে আমানত

সমীকরণ প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৩১ বার পড়া হয়েছে

ক্ষমতা ছেড়ে দেশত্যাগ করে ভারতে অবস্থান নিয়েছেন বাংলাদেশের পরপর চার বারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সরকারের ক্ষমতাধীন সময়ে প্রকাশ্যে কোন কর্মসূচি করতে পারেনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। গত সোমবার শেখ হাসিনার দেশত্যাগের ঘটনায় গতকাল বুধবার চুয়াডাঙ্গার জীবননগর ও ঝিনাইদহে আনন্দ র‌্যালি এবং শোকরানা সমাবেশ করে জামায়াতে ইসলামী। দীর্ঘ ১৫ বছর পর অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে বাঁধভাঙ্গা উল্লাস নিয়ে অংশ নেন জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের কর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ।

জীবননগরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা সাজেদুর রহমান। সমাবেশে প্রধান অতিথি থেকে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের আমির ও আয়কর আইনজীবী মো. রুহুল আমিন। উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সাখাওয়াত হোসেনের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি থেকে বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা আজিজুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি অ্যাড. আসাদুজ্জামান আসাদ, জেলা সহকারী সেক্রেটারি অ্যাড. মাসুদ পারভেজ রাসেল, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা ইসরাইল হোসেন, মাওলানা হাফিজুর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি এমদাদ হোসেন ও জীবননগর পৌর জামায়াতের আমির হাফেজ ফিরোজ হোসেন প্রমুখ।

সমাবেশে প্রধান অতিথি জেলা জামায়াতের আমির মো. রুহুল আমিন বলেন, বিজয়ের এই আনন্দে অতিউৎসাহী হয়ে কেউ যেন আইনকে হাতে তুলে নিতে না পারে, সে জন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, জামায়াত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ইসলাম কায়েমের জন্য, জামায়াত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ন্যায়বিচার কায়েমের জন্য, জামায়াত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। আমরা আওয়ামী শাসনের ১৬ বছরে আল্লামা সাঈদী, মাওলানা নিজামী, আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদসহ অসংখ্য নেতা-কর্মীকে হারিয়েছি। আমরা ১৬ বছরের এই নিষ্ঠুর অত্যাচার ভুলে যেতে চাই। কিন্তু মনে রাখবেন ২০০৯ সাল আর ২০২৪ সাল এক নয়। আর কোনো জামায়াত কর্মীর ওপর হাত তুলতে আসলে গোড়াসহ উপড়ে ফেলা হবে। আর কোনো পুলিশকে অত্যাচার করার সুযোগ দেয়া হবে না। কোনো অফিস-আদালতে দুর্নীতি করার সুযোগ দেয়া হবে না। আপনারা সবাই যার যার অবস্থান থেকে দেশের জন্য দ্বীনের জন্য এগিয়ে আসুন। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চায়। আগামীতে সুযোগ আসছে, এ সুযোগের সদ্বব্যবহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, এ দেশের মাটি, এ দেশের মানুষ, এ দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় জামায়াতে ইসলামীর কাছে আমানত। জামায়াত এ আমানত শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও রক্ষা করবে ইনশাআল্লাহ।

এদিকে, প্রায় ১৬ বছর পর গতকাল ঝিনাইদহে প্রকাশ্যে আসে জামায়াত ও শিবির কর্মীরা। বিকেলে শহরের পাঁয়রা চত্বরে বিশাল শোডাউনের মাধ্যমে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দেন তারা। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঝিনাইদহ জেলা শাখার উদ্যোগে বিকেলে পায়রা চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় এক শোকরানা সমাবেশ। জামায়াতের ঝিনাইদহ জেলা শাখার নায়েবে আমির অধ্যাপক মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতের ঝিনাইদহ জেলা শাখার আমির আবু বকর মো. আলী আজম।

জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. আব্দুল আওয়ালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলীম, অধ্যক্ষ আব্দুল হাই, হরিণাকুণ্ডু উপজেলা আমির মাস্টার বাবুল হোসেন, শৈলকুপা উপজেলা আমির এ এস এম মতিউর রহমান, কালীগঞ্জ উপজেলা আমির মাওলানা ওলিউর রহমান, ঝিনাইদহ পৌর আমির হারুন অর রশীদ, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ড. হাবিবুর রহমান, মুহাদ্দিস রবিউল ইসলাম, সগির আহম্মেদ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঝিনাইদহ জেলা শাখার সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান এবং ঝিনাইদহ শহর শাখার সভাপতি মেহেদী হাসান রাজু। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঝিনাইদহের অন্যতম সমন্বয়ক আবু হুরাইরা এবং গত ১৯ মে ছাত্র আন্দোলনে ঢাকার মিরপুরে গুলিতে নিহত শহিদ রাকিবুল ইসলামে বাবা এবং শহিদ জসিম উদ্দিনের বাবা।

সমাবেশে প্রধান অতিথি বলেন, ৫ আগস্ট বাংলাদেশ দ্বিতীয় বার স্বাধীনতা অর্জন করেছে। তিনি আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীসহ সকলকে ধন্যবাদ জানান, যারা শাহাদত বরন করেছেন, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। আহতদের সুস্থতা কামনা করেন। তিনি বলেন, এই বিজয় যেন কেউ ছিনিয়ে নিতে না পারে। তিনি সকলকে হানাহানি লুটপাট এবং আগুন সন্ত্রাস বন্ধ করতে বলেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহে জামায়াতে ইসলামীর আনন্দ র‌্যালি ও শোকরানা সমাবেশে

দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় জামায়াতের কাছে আমানত

আপলোড টাইম : ০৯:২৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ অগাস্ট ২০২৪

ক্ষমতা ছেড়ে দেশত্যাগ করে ভারতে অবস্থান নিয়েছেন বাংলাদেশের পরপর চার বারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সরকারের ক্ষমতাধীন সময়ে প্রকাশ্যে কোন কর্মসূচি করতে পারেনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। গত সোমবার শেখ হাসিনার দেশত্যাগের ঘটনায় গতকাল বুধবার চুয়াডাঙ্গার জীবননগর ও ঝিনাইদহে আনন্দ র‌্যালি এবং শোকরানা সমাবেশ করে জামায়াতে ইসলামী। দীর্ঘ ১৫ বছর পর অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে বাঁধভাঙ্গা উল্লাস নিয়ে অংশ নেন জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের কর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ।

জীবননগরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা সাজেদুর রহমান। সমাবেশে প্রধান অতিথি থেকে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের আমির ও আয়কর আইনজীবী মো. রুহুল আমিন। উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সাখাওয়াত হোসেনের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি থেকে বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা আজিজুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি অ্যাড. আসাদুজ্জামান আসাদ, জেলা সহকারী সেক্রেটারি অ্যাড. মাসুদ পারভেজ রাসেল, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা ইসরাইল হোসেন, মাওলানা হাফিজুর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি এমদাদ হোসেন ও জীবননগর পৌর জামায়াতের আমির হাফেজ ফিরোজ হোসেন প্রমুখ।

সমাবেশে প্রধান অতিথি জেলা জামায়াতের আমির মো. রুহুল আমিন বলেন, বিজয়ের এই আনন্দে অতিউৎসাহী হয়ে কেউ যেন আইনকে হাতে তুলে নিতে না পারে, সে জন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, জামায়াত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ইসলাম কায়েমের জন্য, জামায়াত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ন্যায়বিচার কায়েমের জন্য, জামায়াত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। আমরা আওয়ামী শাসনের ১৬ বছরে আল্লামা সাঈদী, মাওলানা নিজামী, আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদসহ অসংখ্য নেতা-কর্মীকে হারিয়েছি। আমরা ১৬ বছরের এই নিষ্ঠুর অত্যাচার ভুলে যেতে চাই। কিন্তু মনে রাখবেন ২০০৯ সাল আর ২০২৪ সাল এক নয়। আর কোনো জামায়াত কর্মীর ওপর হাত তুলতে আসলে গোড়াসহ উপড়ে ফেলা হবে। আর কোনো পুলিশকে অত্যাচার করার সুযোগ দেয়া হবে না। কোনো অফিস-আদালতে দুর্নীতি করার সুযোগ দেয়া হবে না। আপনারা সবাই যার যার অবস্থান থেকে দেশের জন্য দ্বীনের জন্য এগিয়ে আসুন। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চায়। আগামীতে সুযোগ আসছে, এ সুযোগের সদ্বব্যবহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, এ দেশের মাটি, এ দেশের মানুষ, এ দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় জামায়াতে ইসলামীর কাছে আমানত। জামায়াত এ আমানত শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও রক্ষা করবে ইনশাআল্লাহ।

এদিকে, প্রায় ১৬ বছর পর গতকাল ঝিনাইদহে প্রকাশ্যে আসে জামায়াত ও শিবির কর্মীরা। বিকেলে শহরের পাঁয়রা চত্বরে বিশাল শোডাউনের মাধ্যমে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দেন তারা। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঝিনাইদহ জেলা শাখার উদ্যোগে বিকেলে পায়রা চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় এক শোকরানা সমাবেশ। জামায়াতের ঝিনাইদহ জেলা শাখার নায়েবে আমির অধ্যাপক মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতের ঝিনাইদহ জেলা শাখার আমির আবু বকর মো. আলী আজম।

জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. আব্দুল আওয়ালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলীম, অধ্যক্ষ আব্দুল হাই, হরিণাকুণ্ডু উপজেলা আমির মাস্টার বাবুল হোসেন, শৈলকুপা উপজেলা আমির এ এস এম মতিউর রহমান, কালীগঞ্জ উপজেলা আমির মাওলানা ওলিউর রহমান, ঝিনাইদহ পৌর আমির হারুন অর রশীদ, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ড. হাবিবুর রহমান, মুহাদ্দিস রবিউল ইসলাম, সগির আহম্মেদ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঝিনাইদহ জেলা শাখার সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান এবং ঝিনাইদহ শহর শাখার সভাপতি মেহেদী হাসান রাজু। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঝিনাইদহের অন্যতম সমন্বয়ক আবু হুরাইরা এবং গত ১৯ মে ছাত্র আন্দোলনে ঢাকার মিরপুরে গুলিতে নিহত শহিদ রাকিবুল ইসলামে বাবা এবং শহিদ জসিম উদ্দিনের বাবা।

সমাবেশে প্রধান অতিথি বলেন, ৫ আগস্ট বাংলাদেশ দ্বিতীয় বার স্বাধীনতা অর্জন করেছে। তিনি আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীসহ সকলকে ধন্যবাদ জানান, যারা শাহাদত বরন করেছেন, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। আহতদের সুস্থতা কামনা করেন। তিনি বলেন, এই বিজয় যেন কেউ ছিনিয়ে নিতে না পারে। তিনি সকলকে হানাহানি লুটপাট এবং আগুন সন্ত্রাস বন্ধ করতে বলেন।