ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে মাঠ ফেঁটে চৌচির, দিশেহারা কৃষক

অনাবৃষ্টি ও খরায় পুড়ছে জনপদ

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ:
  • আপলোড টাইম : ১২:৫৬:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪
  • / ৫৬ বার পড়া হয়েছে

দেশের এক অঞ্চল ভারী বর্ষণে ডুবলেও আরেক অঞ্চল ঝিনাইদহ খরায় পুড়ছে। দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টির কারণে আউসের মাঠ ও পাটখেত ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। কৃষকের কপালে তাই পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। বীজতলা দিতে না পেরে অনেক কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। পুরো বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাস তীব্র গরম আর খরায় কেটেছে। আষাঢ়ের প্ররাম্ভে বৃষ্টির আভাস নেই ঝিনাইদহে। অথচ ঝিনাইদহের আশপাশে মাঝেমধ্যে বৃষ্টির দেখা মিলছে।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলায় চলতি আবাদ মৌসুমে ৪৪ হাজার ৫ শ হোক্টর জমিতে আউস চাষের লক্ষ্যমাত্র ছিল। অনাবৃষ্টির কারণে ৬০% লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। অন্যদিকে, পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ হাজার ৮ শ হেক্টর জমিতে। আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় এ বছর পাটের আবাদ কমেছে। জেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম পাট চাষ হয়েছে। জেলার কৃষকরা সাড়ে ২১ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ করতে পেরেছে। সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের কৃষক আব্দুল হান্নান জানান, বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ দিয়ে বীজতলা তৈরি করতে হয়েছে। এতে কৃষকের ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি না হলে খেতে পোকামাকড়ের উপদ্রুপ বৃদ্ধি পাবে।

কৃষক বাবলুর রহমান জানান, আউশ আবাদে এখন সম্পূরক সেচ দিতে হচ্ছে, অথচ আগে সেচ লাগতো না। পাটের ক্ষেত্রেও তা হচ্ছে। হরিণাকুণ্ডু উপজেলার পায়রাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক হাফিজুর রহমান জানান, বৃষ্টির কারণে আউস আবাদ যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি পাট খেতেও এখন সেচ দিতে হচ্ছে। পুরো আষাঢ় জুড়ে যদি বৃষ্টি না হয়, তবে পাট জাগ দেওয়াও সমস্যা হবে বলে তিনি মনে করেন।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ষষ্টি চন্দ্র রায় জানান, অনাবৃষ্টির কারণে আউস ও পাট চাষিদের একটু ক্ষতি হচ্ছে। পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা এ কারণে আড়াই হাজার হেক্টর কমেছে। তবে আউসের টার্গেট পুরণ হবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি আরও জানান, আষাঢ়েও যদি বৃষ্টি না হয়, তবে কৃষকদের হেক্টর প্রতি খরচ বেড়ে যাবে। আমন আবাদ পুরো আষাঢ়ের বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, গঙ্গা-কপোতাক্ষ বা জিকের সেচ খালগুলোতে পানি দেওয়া শুরু হয়েছে। ফলে শৈলকুপা ও হরিণাকুণ্ডুর কৃষকরা আউস ও পাট খেতে পানি দিতে পারবেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ঝিনাইদহে মাঠ ফেঁটে চৌচির, দিশেহারা কৃষক

অনাবৃষ্টি ও খরায় পুড়ছে জনপদ

আপলোড টাইম : ১২:৫৬:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪

দেশের এক অঞ্চল ভারী বর্ষণে ডুবলেও আরেক অঞ্চল ঝিনাইদহ খরায় পুড়ছে। দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টির কারণে আউসের মাঠ ও পাটখেত ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। কৃষকের কপালে তাই পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। বীজতলা দিতে না পেরে অনেক কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। পুরো বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাস তীব্র গরম আর খরায় কেটেছে। আষাঢ়ের প্ররাম্ভে বৃষ্টির আভাস নেই ঝিনাইদহে। অথচ ঝিনাইদহের আশপাশে মাঝেমধ্যে বৃষ্টির দেখা মিলছে।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলায় চলতি আবাদ মৌসুমে ৪৪ হাজার ৫ শ হোক্টর জমিতে আউস চাষের লক্ষ্যমাত্র ছিল। অনাবৃষ্টির কারণে ৬০% লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। অন্যদিকে, পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ হাজার ৮ শ হেক্টর জমিতে। আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় এ বছর পাটের আবাদ কমেছে। জেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম পাট চাষ হয়েছে। জেলার কৃষকরা সাড়ে ২১ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ করতে পেরেছে। সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের কৃষক আব্দুল হান্নান জানান, বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ দিয়ে বীজতলা তৈরি করতে হয়েছে। এতে কৃষকের ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি না হলে খেতে পোকামাকড়ের উপদ্রুপ বৃদ্ধি পাবে।

কৃষক বাবলুর রহমান জানান, আউশ আবাদে এখন সম্পূরক সেচ দিতে হচ্ছে, অথচ আগে সেচ লাগতো না। পাটের ক্ষেত্রেও তা হচ্ছে। হরিণাকুণ্ডু উপজেলার পায়রাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক হাফিজুর রহমান জানান, বৃষ্টির কারণে আউস আবাদ যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি পাট খেতেও এখন সেচ দিতে হচ্ছে। পুরো আষাঢ় জুড়ে যদি বৃষ্টি না হয়, তবে পাট জাগ দেওয়াও সমস্যা হবে বলে তিনি মনে করেন।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ষষ্টি চন্দ্র রায় জানান, অনাবৃষ্টির কারণে আউস ও পাট চাষিদের একটু ক্ষতি হচ্ছে। পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা এ কারণে আড়াই হাজার হেক্টর কমেছে। তবে আউসের টার্গেট পুরণ হবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি আরও জানান, আষাঢ়েও যদি বৃষ্টি না হয়, তবে কৃষকদের হেক্টর প্রতি খরচ বেড়ে যাবে। আমন আবাদ পুরো আষাঢ়ের বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, গঙ্গা-কপোতাক্ষ বা জিকের সেচ খালগুলোতে পানি দেওয়া শুরু হয়েছে। ফলে শৈলকুপা ও হরিণাকুণ্ডুর কৃষকরা আউস ও পাট খেতে পানি দিতে পারবেন।