ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহ আদালতে আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

স্ত্রীকে ধর্ষণের প্রতিশোধ নিতেই কবিরাজকে হত্যা

ঝিনাইদহ অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০৮:২০:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ জুন ২০২৪
  • / ৩৯ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহের মহেশপুরে চাঞ্চল্যকর শাহাজান কবিরাজ হত্যার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত প্রধান আসামি রাজুকে মহেশপুরের খালিশপুর বাজার থেকে গ্রেপ্তারের পর এই হত্যার রহস্য উন্মোচিত হলো। মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান কাজল গতকাল শনিবার দুপুরে এ খবর নিশ্চিত করেন।

ওসি মাহবুবুর রহমান কাজল জানান, স্ত্রী ধর্ষণের প্রতিশোধ নিতে শাহজাহান আলী কবিরাজকে গলাকেটে হত্যা করেন রাজু নামে এক যুবক। রাজু যশোরের চৌগাছা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের জিয়ারুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় আসামি রাজু ঝিনাইদহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াদ হাসানের আদালতে গত বৃহস্পতিবার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।

জবানবন্দিতে আসামি রাজু বলেন, তিনি পেশায় একজন দিনমজুর। কবিরাজ হওয়ার সুবাদে শাহজাহান আলীকে তিনি দাদু বলে ডাকতেন। ভালো সম্পর্ক থাকায় মহেশপুরের বামনগাছার বেলেমাঠ গ্রামে শাহাজানের বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল তার। গত ৮ মে  স্ত্রীকে নিয়ে শাহজাহান কবিরাজের বাড়িতে যায়। সেখানে ২-৩ দিন থাকার পর চলে আসতে চাইলে দাদু বলেন তোর দাদি তো অসুস্থ। তোর বউকে কয়েক দিনের জন্য রেখে যা। আমার রান্না-বান্না করে খাওয়াবে। দাদুর কথা অনুযায়ী তিনি স্ত্রী ও ৩ বছরের বাচ্চাকে তার কাছে রেখে ঢাকায় চলে যান।

রাজু আরও বলেন, ‘গত ১৫ মে রাত ১০টার দিকে আমার স্ত্রীকে ফোন করি। কিন্তু সে ফোন রিসিভ করেনি। এরপর দাদু শাহজানকে ফোন করি। তিনিও ফোন রিসিভ করেনি। ঘটনার দিন রাত প্রায় ৩টার দিকে স্ত্রীকে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেই হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে। কী হয়েছে জিজ্ঞাসা করলে স্ত্রী জানায় দাদু তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। পরের দিন ১৬ মে স্ত্রী-বাঁচ্চাকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসি।’

ঢাকা থেকে রাজু বাড়ি ফিরে মামলা করতে চাইলে স্ত্রী নিষেধ করে বলেন, মামলা করলে মান-সম্মান যাবে। ২৮ মে (বুধবার) রাতে চাচাতো ভাই রাসেলকে সাথে নিয়ে রাজু দাদু শাহাজানের বাড়িতে হাজির হয়। খাওয়া দাওয়া শেষ করে রাত আড়াইটার দিকে দাদুর ঘরে থাকা ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করে পালিয়ে যান।

মহেশপুর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান কাজল বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে হত্যা মামলার প্রধান আসামি রাজুকে গত বুধবার সন্ধ্যার একটু আগে খালিশপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তিনি ঢাকায় পালিয়ে যাচ্ছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়ান ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াদ হাসানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামি রাজু শাহাজাহান ফকিরকে গলাকেটে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেন।

উল্লেখ্য, গত ২৮ মে গভীর রাতে মহেশপুর উপজেলার মান্দারবাড়ীয়া ইউনিয়নের বামনগাছার বেলেমাঠ পাড়ার শাহজাহান আলী কবিরাজকে (৬৫) নিজ বাড়িতে গলাকেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে রাফিজা খাতুন বাদী হয়ে মহেশপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ঝিনাইদহ আদালতে আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

স্ত্রীকে ধর্ষণের প্রতিশোধ নিতেই কবিরাজকে হত্যা

আপলোড টাইম : ০৮:২০:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ জুন ২০২৪

ঝিনাইদহের মহেশপুরে চাঞ্চল্যকর শাহাজান কবিরাজ হত্যার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত প্রধান আসামি রাজুকে মহেশপুরের খালিশপুর বাজার থেকে গ্রেপ্তারের পর এই হত্যার রহস্য উন্মোচিত হলো। মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান কাজল গতকাল শনিবার দুপুরে এ খবর নিশ্চিত করেন।

ওসি মাহবুবুর রহমান কাজল জানান, স্ত্রী ধর্ষণের প্রতিশোধ নিতে শাহজাহান আলী কবিরাজকে গলাকেটে হত্যা করেন রাজু নামে এক যুবক। রাজু যশোরের চৌগাছা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের জিয়ারুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় আসামি রাজু ঝিনাইদহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াদ হাসানের আদালতে গত বৃহস্পতিবার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।

জবানবন্দিতে আসামি রাজু বলেন, তিনি পেশায় একজন দিনমজুর। কবিরাজ হওয়ার সুবাদে শাহজাহান আলীকে তিনি দাদু বলে ডাকতেন। ভালো সম্পর্ক থাকায় মহেশপুরের বামনগাছার বেলেমাঠ গ্রামে শাহাজানের বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল তার। গত ৮ মে  স্ত্রীকে নিয়ে শাহজাহান কবিরাজের বাড়িতে যায়। সেখানে ২-৩ দিন থাকার পর চলে আসতে চাইলে দাদু বলেন তোর দাদি তো অসুস্থ। তোর বউকে কয়েক দিনের জন্য রেখে যা। আমার রান্না-বান্না করে খাওয়াবে। দাদুর কথা অনুযায়ী তিনি স্ত্রী ও ৩ বছরের বাচ্চাকে তার কাছে রেখে ঢাকায় চলে যান।

রাজু আরও বলেন, ‘গত ১৫ মে রাত ১০টার দিকে আমার স্ত্রীকে ফোন করি। কিন্তু সে ফোন রিসিভ করেনি। এরপর দাদু শাহজানকে ফোন করি। তিনিও ফোন রিসিভ করেনি। ঘটনার দিন রাত প্রায় ৩টার দিকে স্ত্রীকে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেই হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে। কী হয়েছে জিজ্ঞাসা করলে স্ত্রী জানায় দাদু তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। পরের দিন ১৬ মে স্ত্রী-বাঁচ্চাকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসি।’

ঢাকা থেকে রাজু বাড়ি ফিরে মামলা করতে চাইলে স্ত্রী নিষেধ করে বলেন, মামলা করলে মান-সম্মান যাবে। ২৮ মে (বুধবার) রাতে চাচাতো ভাই রাসেলকে সাথে নিয়ে রাজু দাদু শাহাজানের বাড়িতে হাজির হয়। খাওয়া দাওয়া শেষ করে রাত আড়াইটার দিকে দাদুর ঘরে থাকা ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করে পালিয়ে যান।

মহেশপুর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান কাজল বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে হত্যা মামলার প্রধান আসামি রাজুকে গত বুধবার সন্ধ্যার একটু আগে খালিশপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তিনি ঢাকায় পালিয়ে যাচ্ছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়ান ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াদ হাসানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামি রাজু শাহাজাহান ফকিরকে গলাকেটে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেন।

উল্লেখ্য, গত ২৮ মে গভীর রাতে মহেশপুর উপজেলার মান্দারবাড়ীয়া ইউনিয়নের বামনগাছার বেলেমাঠ পাড়ার শাহজাহান আলী কবিরাজকে (৬৫) নিজ বাড়িতে গলাকেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে রাফিজা খাতুন বাদী হয়ে মহেশপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।