ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দর্শনার জটিল রোগে আক্রান্ত শিশু আরাবীর চিকিৎসায় নগদ সহায়তা করলেন ডিসি

শিশুটিকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান

দর্শনা অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০৯:০৭:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ মার্চ ২০২৪
  • / ৭৩ বার পড়া হয়েছে

দর্শনা মোবারক পাড়ার মনির হোসেন ও সরদার পিয়ারী খানম দম্পতির ৯ বছরের শিশুকন্যা তাহমিদ খন্দকার আরাবী দূরারোগ্য বোনমেরো ক্যানসারে আক্রান্ত। গত তিন বছর ধরে শিশুটি জটিল এই রোগটিকে সঙ্গে নিয়ে জীবনযাপন করছে। তার চিকিৎসায় প্রায় ৬০ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু পরিবারের পক্ষে এ ব্যয়ভার নির্বাহ করা সম্ভব নয়। বিষয়টি সম্প্রতি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমার নজরে আসে। তিনি সরকারি সহায়তা বাবদ তহবিল হতে ৫০ হাজার টাকার চেক শিশু আরাবীর মায়ের হাতে হস্তান্তর করেন। এসময় তিনি ফুটফুটে শিশুটিকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ ব্যক্তিগতভাবে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

গতকাল শনিবার জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা ও দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোকসানা মিতা শিশুটির সার্বিক খোঁজ নিতে তাদের বাড়িতে যান। এসময় জেলা প্রশাসক শিশু আরাবীর মা-বাবার সাথে কথা বলেন এবং দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেন। এছাড়াও আরাবীর জন্য কেনা ঈদের নতুন জামা তার মায়ের হাতে তুলে দেন।
জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, দেশের ১৭ কোটি মানুষ যদি এগিয়ে আসে, তাহলে আবাবীর এ ব্যয়বহুল (৬০ লাখ টাকা) চিকিৎসা করা অসম্ভব নয়। তিনি জেলা প্রসাশন ও দামুড়হুদা উপজেলা প্রসাশন থেকে সাধ্যমত সহযোগিতার আশ^াস দেন। এছাড়াও শিশুটিকে একটি সুন্দর স্বাভাবিক জীবনে ফিরিতে নিতে সমাজের বিত্তবান মানুষের এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান। এসময় জেলা প্রসাশক শিশুটির চিকিৎসার সার্বিক সহযোগিতা করার আশ^াস দেন। এবং এই মানবিক বিষয়টি তুলে ধরার জন্য গণমাধ্যম কর্মীদের ধন্যবাদ জানান।

আরাবীর পিতা মনির হোসেন জানান, আগামী বৃহস্পতিবার আরাবীকে ভারতের বেঙ্গালুরে নারায়ানা হেল্থ সিটির শিশু হেমাটোলজিস্ট ও অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সুনীল ভাটের নিকট চিকিৎসার জন্য নেওয়া হবে। যেখানে আরাবীর চিকিৎসার খরচ পড়বে ৬০ লাখ টাকা। তবে তার পক্ষে এ ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব নয়। প্রশাসন ও মানুষের ভরসা ও কিছু সহযোগিতা পেয়ে আরাবীকে বেঙ্গালুরে নেওয়া হচ্ছে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ বছর ধরে ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে আরাবীর চিকিৎসা করালেও শিশুটি কোনো রোগে আক্রান্ত তা জানা যায়নি। এরপর ভারতের ঠাকুরপুর হাসপাতালে ১৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকাকালে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফলে গত ২ ফেব্রুয়ারি আরাবীর শরীরে ইমিউন ডিসরেগুলেশন হাইপারইনফ্লামেশন সিনড্রোম নামের জটিল ব্লাড ক্যানসার রোগটি ধরা পাড়ে। এরপর তাকে বেঙ্গালুরে নেওয়া হলে সেখানকার ডাক্তার সুনীল ভাট জানান, যত দ্রুত সম্ভব আরাবীর বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লাটেশন (অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন) করা প্রয়োজন।

পিতা মনির হোসেন বলেন, আরাবী দর্শনা লিটিল এনজেল স্কুলে ২য় শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী। সে ভালো ছবি আঁকতে পারে এবং বাইসাইকেল চালাতে পারে। বর্তমানে সে সারাক্ষণ কেঁদে বলে মা আমাকে বাঁচাও, আমি বাঁচতে চাই, আমি আবার ছবি আঁকবো, সাইকেল চালাবো।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

দর্শনার জটিল রোগে আক্রান্ত শিশু আরাবীর চিকিৎসায় নগদ সহায়তা করলেন ডিসি

শিশুটিকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান

আপলোড টাইম : ০৯:০৭:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ মার্চ ২০২৪

দর্শনা মোবারক পাড়ার মনির হোসেন ও সরদার পিয়ারী খানম দম্পতির ৯ বছরের শিশুকন্যা তাহমিদ খন্দকার আরাবী দূরারোগ্য বোনমেরো ক্যানসারে আক্রান্ত। গত তিন বছর ধরে শিশুটি জটিল এই রোগটিকে সঙ্গে নিয়ে জীবনযাপন করছে। তার চিকিৎসায় প্রায় ৬০ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু পরিবারের পক্ষে এ ব্যয়ভার নির্বাহ করা সম্ভব নয়। বিষয়টি সম্প্রতি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমার নজরে আসে। তিনি সরকারি সহায়তা বাবদ তহবিল হতে ৫০ হাজার টাকার চেক শিশু আরাবীর মায়ের হাতে হস্তান্তর করেন। এসময় তিনি ফুটফুটে শিশুটিকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ ব্যক্তিগতভাবে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

গতকাল শনিবার জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা ও দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোকসানা মিতা শিশুটির সার্বিক খোঁজ নিতে তাদের বাড়িতে যান। এসময় জেলা প্রশাসক শিশু আরাবীর মা-বাবার সাথে কথা বলেন এবং দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেন। এছাড়াও আরাবীর জন্য কেনা ঈদের নতুন জামা তার মায়ের হাতে তুলে দেন।
জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, দেশের ১৭ কোটি মানুষ যদি এগিয়ে আসে, তাহলে আবাবীর এ ব্যয়বহুল (৬০ লাখ টাকা) চিকিৎসা করা অসম্ভব নয়। তিনি জেলা প্রসাশন ও দামুড়হুদা উপজেলা প্রসাশন থেকে সাধ্যমত সহযোগিতার আশ^াস দেন। এছাড়াও শিশুটিকে একটি সুন্দর স্বাভাবিক জীবনে ফিরিতে নিতে সমাজের বিত্তবান মানুষের এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান। এসময় জেলা প্রসাশক শিশুটির চিকিৎসার সার্বিক সহযোগিতা করার আশ^াস দেন। এবং এই মানবিক বিষয়টি তুলে ধরার জন্য গণমাধ্যম কর্মীদের ধন্যবাদ জানান।

আরাবীর পিতা মনির হোসেন জানান, আগামী বৃহস্পতিবার আরাবীকে ভারতের বেঙ্গালুরে নারায়ানা হেল্থ সিটির শিশু হেমাটোলজিস্ট ও অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সুনীল ভাটের নিকট চিকিৎসার জন্য নেওয়া হবে। যেখানে আরাবীর চিকিৎসার খরচ পড়বে ৬০ লাখ টাকা। তবে তার পক্ষে এ ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব নয়। প্রশাসন ও মানুষের ভরসা ও কিছু সহযোগিতা পেয়ে আরাবীকে বেঙ্গালুরে নেওয়া হচ্ছে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ বছর ধরে ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে আরাবীর চিকিৎসা করালেও শিশুটি কোনো রোগে আক্রান্ত তা জানা যায়নি। এরপর ভারতের ঠাকুরপুর হাসপাতালে ১৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকাকালে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফলে গত ২ ফেব্রুয়ারি আরাবীর শরীরে ইমিউন ডিসরেগুলেশন হাইপারইনফ্লামেশন সিনড্রোম নামের জটিল ব্লাড ক্যানসার রোগটি ধরা পাড়ে। এরপর তাকে বেঙ্গালুরে নেওয়া হলে সেখানকার ডাক্তার সুনীল ভাট জানান, যত দ্রুত সম্ভব আরাবীর বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লাটেশন (অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন) করা প্রয়োজন।

পিতা মনির হোসেন বলেন, আরাবী দর্শনা লিটিল এনজেল স্কুলে ২য় শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী। সে ভালো ছবি আঁকতে পারে এবং বাইসাইকেল চালাতে পারে। বর্তমানে সে সারাক্ষণ কেঁদে বলে মা আমাকে বাঁচাও, আমি বাঁচতে চাই, আমি আবার ছবি আঁকবো, সাইকেল চালাবো।