ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
চুয়াডাঙ্গায় ট্রেইনি রিক্রুটিং পুলিশ কনস্টেবল পদের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা

ঘুষ ছাড়াই চাকরি পেয়ে খুশি নির্বাচিত ২৮ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ১১:২৪:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪
  • / ৫৮ বার পড়া হয়েছে

বর্তমানে সরকারি চাকরি মানে সোনার হরিণ। আর সেই চাকরির প্রত্যাশা থাকে যোগ্য-অযোগ্য সবারই। ব্যবধান হয়ে দাঁড়ায় মধ্যস্বত্বভোগী এক শ্রেণির দালালের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকার বিনিময়। এমন পর্যায়ে যখন চাকরি প্রত্যাশীরা দিশেহারা, তখন অবৈধ অর্থ বা ঘুষ লেনদেন ছাড়াই ২৮ জনকে চাকরি দিয়ে নজির সৃষ্টি করেছেন চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান, পিপিএম সেবা। মাত্র ১২০ টাকার ব্যাংক ড্রাফট ও ২ টাকার আবেদন ফরম খরচেই মিলেছে ২৪ জন পুরুষ ও ৪ জন নারীর চাকরি। প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণার পর তাঁদেরকে পুলিশ সদস্য হিসেবে বরণ করে নিয়েছেন জেলা পুলিশের সদস্যরা।

গতকাল শনিবার বিকেলে পুলিশ লাইনস মাঠে এ সকল রিক্রুটিং পুলিশ কনস্টেবল (টিআরসি) পদের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এর আগে নিয়োগ সংক্রান্ত খুটিনাটি বিষয় ও সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরে বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান। তিনি বলেন, ‘নিয়োগ প্রক্রিয়া যখন শুরু করেছিলাম, তখনি বলেছিলাম চুয়াডাঙ্গার সবাই যেন নিরপেক্ষভাবে এতে অংশ নিতে পারে। মেধাভিত্তিক, যোগ্য প্রার্থীরা যেন একদম বিনা পয়সায় চাকরি পায়, সে চেষ্টা আমরা করেছি। আমরা খুবই আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছি নিয়োগ প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন করার জন্য। শেষ পর্যন্ত শতভাগ ন্যায়, নীতি ও নিষ্ঠার সঙ্গে এ প্রক্রিয়া আমরা সম্পন্ন করেছি। কোনো প্রকার স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়নি, এটা আমি দৃঢ়চিত্তে বলতে পারি।’

গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত সকলের একমাত্র পূর্ব শর্ত ছিল মেধা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে। তাদের অন্য কোনো পরিচয়, সামাজিক বা অর্থনৈতিক অবস্থান ভূমিকা পালন করেনি। সরকার কতৃর্ক নির্ধরিত ১২০ টাকা তাঁদের সরকারি খরচ ছিল। জেলা পুলিশ সকল বিষয়ে খুবই তৎপর ছিল।

জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা জেলায় ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে গত ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে নিয়োগ কমিটি প্রথম ধাপে চাকরি প্রার্থীদের মধ্য থেকে চযুংরপধষ ঊহফঁৎধহপব ঞবংঃ (চঊঞ) কাগজপত্র যাচাই-বাছাই, শারীরিক মাপ, শারীরিক সক্ষমতা ও আনুষঙ্গিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ৩০১ জন প্রার্থীকে নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ অর্থাৎ লিখিত পরীক্ষার জন্য মনোনীত করেন। গত ১৬ মার্চ শনিবার চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজে প্রাথমিক বাছাইকৃত ৩০১ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে থেকে পরবর্তীতে ৬৫ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। গতকাল ২৩ মার্চ লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে হতে মেধা, যোগ্যতার ভিত্তিতে ২৪ জন ছেলে এবং ৪ জন মেয়েসহ মোট ২৮ জন প্রার্থী নিয়োগ বোর্ড কর্তৃক চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়।

আরও জানা যায়, এবার চুয়াডাঙ্গা জেলায় নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষে ২৮ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে সাধারণ কোটায় ১৬ জন পুরুষ ও ৪ জন নারী, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৫ জন এবং পুলিশ পোষ্য কোটায় ২ জন বাংলাদেশ পুলিশের রিক্রুটিং পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়েছেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) রিয়াজুল ইসলাম (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজিম উদ্দীন আল আজাদ, নিয়োগ বোর্ডের সদস্য মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. কামরুল আহসান, মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) দেবাশীষ কর্মকার, চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের ডিআইও-১ আবু জিহাদ ফকরুল আলম খানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা। ফলাফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রার্থীর সঙ্গে প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় ট্রেইনি রিক্রুটিং পুলিশ কনস্টেবল পদের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা

ঘুষ ছাড়াই চাকরি পেয়ে খুশি নির্বাচিত ২৮ জন

আপলোড টাইম : ১১:২৪:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪

বর্তমানে সরকারি চাকরি মানে সোনার হরিণ। আর সেই চাকরির প্রত্যাশা থাকে যোগ্য-অযোগ্য সবারই। ব্যবধান হয়ে দাঁড়ায় মধ্যস্বত্বভোগী এক শ্রেণির দালালের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকার বিনিময়। এমন পর্যায়ে যখন চাকরি প্রত্যাশীরা দিশেহারা, তখন অবৈধ অর্থ বা ঘুষ লেনদেন ছাড়াই ২৮ জনকে চাকরি দিয়ে নজির সৃষ্টি করেছেন চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান, পিপিএম সেবা। মাত্র ১২০ টাকার ব্যাংক ড্রাফট ও ২ টাকার আবেদন ফরম খরচেই মিলেছে ২৪ জন পুরুষ ও ৪ জন নারীর চাকরি। প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণার পর তাঁদেরকে পুলিশ সদস্য হিসেবে বরণ করে নিয়েছেন জেলা পুলিশের সদস্যরা।

গতকাল শনিবার বিকেলে পুলিশ লাইনস মাঠে এ সকল রিক্রুটিং পুলিশ কনস্টেবল (টিআরসি) পদের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এর আগে নিয়োগ সংক্রান্ত খুটিনাটি বিষয় ও সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরে বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান। তিনি বলেন, ‘নিয়োগ প্রক্রিয়া যখন শুরু করেছিলাম, তখনি বলেছিলাম চুয়াডাঙ্গার সবাই যেন নিরপেক্ষভাবে এতে অংশ নিতে পারে। মেধাভিত্তিক, যোগ্য প্রার্থীরা যেন একদম বিনা পয়সায় চাকরি পায়, সে চেষ্টা আমরা করেছি। আমরা খুবই আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছি নিয়োগ প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন করার জন্য। শেষ পর্যন্ত শতভাগ ন্যায়, নীতি ও নিষ্ঠার সঙ্গে এ প্রক্রিয়া আমরা সম্পন্ন করেছি। কোনো প্রকার স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়নি, এটা আমি দৃঢ়চিত্তে বলতে পারি।’

গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত সকলের একমাত্র পূর্ব শর্ত ছিল মেধা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে। তাদের অন্য কোনো পরিচয়, সামাজিক বা অর্থনৈতিক অবস্থান ভূমিকা পালন করেনি। সরকার কতৃর্ক নির্ধরিত ১২০ টাকা তাঁদের সরকারি খরচ ছিল। জেলা পুলিশ সকল বিষয়ে খুবই তৎপর ছিল।

জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা জেলায় ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে গত ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে নিয়োগ কমিটি প্রথম ধাপে চাকরি প্রার্থীদের মধ্য থেকে চযুংরপধষ ঊহফঁৎধহপব ঞবংঃ (চঊঞ) কাগজপত্র যাচাই-বাছাই, শারীরিক মাপ, শারীরিক সক্ষমতা ও আনুষঙ্গিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ৩০১ জন প্রার্থীকে নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ অর্থাৎ লিখিত পরীক্ষার জন্য মনোনীত করেন। গত ১৬ মার্চ শনিবার চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজে প্রাথমিক বাছাইকৃত ৩০১ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে থেকে পরবর্তীতে ৬৫ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। গতকাল ২৩ মার্চ লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে হতে মেধা, যোগ্যতার ভিত্তিতে ২৪ জন ছেলে এবং ৪ জন মেয়েসহ মোট ২৮ জন প্রার্থী নিয়োগ বোর্ড কর্তৃক চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়।

আরও জানা যায়, এবার চুয়াডাঙ্গা জেলায় নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষে ২৮ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে সাধারণ কোটায় ১৬ জন পুরুষ ও ৪ জন নারী, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৫ জন এবং পুলিশ পোষ্য কোটায় ২ জন বাংলাদেশ পুলিশের রিক্রুটিং পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়েছেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) রিয়াজুল ইসলাম (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজিম উদ্দীন আল আজাদ, নিয়োগ বোর্ডের সদস্য মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. কামরুল আহসান, মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) দেবাশীষ কর্মকার, চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের ডিআইও-১ আবু জিহাদ ফকরুল আলম খানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা। ফলাফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রার্থীর সঙ্গে প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন।