ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় প্রথম দিনের ইফতারের বাজারে রোজাদারদের উপচে পড়া ঢল

সারা দিনের পারিশ্রমিকের টাকায় মিলছে মাত্র একটি তরমুজ!

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ১২:০২:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪
  • / ৮৭ বার পড়া হয়েছে

অপেক্ষা সন্ধ্যা নামার, কিন্তু মন্থর বিকেল শেষই হতে চায় না। কাজ শেষে ঘরে ফেরা মানুষের ঘড়ি দেখায় সময় পার হয় এক মিনিট এক মিনিট করে। দুপুরের পর থেকেই সব ব্যস্ততা গিয়ে জড়ো হতে শুরু করে ইফতারির দোকানগুলোতে। সূর্যাস্তের সময় যত এগিয়ে আসে শহরের তিন তারকা মানের হোটেল সাহিদ প্যালেস ইফতার বাজার থেকে শুরু করে বিভিন্ন সড়কের পাশে রমজানের ৩০ দিনের জন্য অস্থায়ীভাবে তৈরি হওয়া দোকানগুলোতে তত ভিড় বাড়তে থাকে। ফলের দোকানেও ক্রেতাদের তাড়াহুড়ো দেখা যায় এদিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এদিকে তেলের মধ্যে টগবগিয়ে ওঠা চপ, পেঁয়াজু আর বেগুনির দামে ক্রেতাদের সন্তষ্টি থাকলেও ফল কিনে দাম দিতে পকেট ফাঁকা হওয়ার অভিযোগ অনেকের।

গতকাল মঙ্গলবার প্রথম রোজার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের বড় বাজার, কোর্ট মোড়সহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা ইফতারির দোকান ঘুরে এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে। সারাদিন রোজার পর ইফতারিতে সকলরেই প্রথম পছন্দ বিভিন্ন প্রকার ফল ও ফলের শরবত। পৌর শহরের সুমিরদিয়াপাড়ার বাসিন্দা দিনমজুর আনারুল ইমলাম ফল কিনতেই এসেছিলেন বড় বাজারে। তিনি বলেন, একটি তরমুজ কিনতে বলেছে গিন্নি। সারা দিনের পারিশ্রমিক হিসেবে পেয়েছি ৫০০ টাকা। পারিশ্রমিকের সবটাই নিয়ে এসেছি ইফতারের জন্য কিছু ফল, আলুরচপ ও পেঁয়াজু কিনতে। তবে তরমুজের দাম শুনে হতভম্ব হয়েছি। বাড়িতে মা, স্ত্রী ও সন্তানসহ আমরা পাঁচজন। ১০০ টাকার মধ্যে একটি তরমুজ কিনতে চেয়েছিলাম, কিন্তু মাঝারি সাইজের একটি তরমুজের দাম বলছে সাড়ে ৪০০ টাকা। ১৫০ টাকার নিচে কোনো তরমুজই নেই, আর এই টাকায় যে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে তাও একেবারে ছোট। এখন তরমুজ কিনতে অপেক্ষা, আশা করছি কয়েকদিন পর দাম কমবে।’

শহরের কোর্ট মোড়ে শুধুমাত্র রমজান মাসের জন্য স্থায়ী হয়েছে কয়েকটি ইফতারির দোকান। কথা হয় এসব দোকানের বেশ কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে। স্থানীয় বাসিন্দা রাব্বি নামের এক যুবক বলেন, বাড়িতে শরবত তৈরি হলেও, আলুরচপ, পেঁয়াজুসহ বিভিন্ন ভাজা-পোড়া ইফতার আইটেমের জন্য বাইরের দোকানই ভরসা। বিভিন্ন আকার ও প্রকারভেদে চপ, পেঁয়াজু, বেগুনি, ছোলা, টিকিয়া ইত্যাদি পাঁচ টাকা থেকে শুরু করে ১৫ টাকা পর্যন্ত প্রতি পিস। তিন জনের জন্য ১০০ টাকায় পর্যাপ্ত ইফতার কেনা যায়।

জেলার একমাত্র তিন তারকা মানের হোটেল সাহিদ প্যালেস ইফতার বাজারেও ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ে। ইফতার কিনতে আসা সাদিকুর রহমান বলেন, সাহিদ প্যালেসের ইফতার বাজারে এমন কিছু পদ মেলে, যা না বাড়িতে তৈরি করতে পারবেন, আর না বছরের অন্য সময় পাওয়া যাবে। এখানের হালিম, চিকেন পরাটা ও ভেজিটেবল পাকোড়া বাড়ির সবাই পছন্দ করে। দামের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘দামও আহামরি কিছু নয়।’ এই ক্রেতার যা আহামরি নয়, অন্যের কাছে তা আকাশচুম্বী হতেই পারে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় প্রথম দিনের ইফতারের বাজারে রোজাদারদের উপচে পড়া ঢল

সারা দিনের পারিশ্রমিকের টাকায় মিলছে মাত্র একটি তরমুজ!

আপলোড টাইম : ১২:০২:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪

অপেক্ষা সন্ধ্যা নামার, কিন্তু মন্থর বিকেল শেষই হতে চায় না। কাজ শেষে ঘরে ফেরা মানুষের ঘড়ি দেখায় সময় পার হয় এক মিনিট এক মিনিট করে। দুপুরের পর থেকেই সব ব্যস্ততা গিয়ে জড়ো হতে শুরু করে ইফতারির দোকানগুলোতে। সূর্যাস্তের সময় যত এগিয়ে আসে শহরের তিন তারকা মানের হোটেল সাহিদ প্যালেস ইফতার বাজার থেকে শুরু করে বিভিন্ন সড়কের পাশে রমজানের ৩০ দিনের জন্য অস্থায়ীভাবে তৈরি হওয়া দোকানগুলোতে তত ভিড় বাড়তে থাকে। ফলের দোকানেও ক্রেতাদের তাড়াহুড়ো দেখা যায় এদিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এদিকে তেলের মধ্যে টগবগিয়ে ওঠা চপ, পেঁয়াজু আর বেগুনির দামে ক্রেতাদের সন্তষ্টি থাকলেও ফল কিনে দাম দিতে পকেট ফাঁকা হওয়ার অভিযোগ অনেকের।

গতকাল মঙ্গলবার প্রথম রোজার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের বড় বাজার, কোর্ট মোড়সহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা ইফতারির দোকান ঘুরে এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে। সারাদিন রোজার পর ইফতারিতে সকলরেই প্রথম পছন্দ বিভিন্ন প্রকার ফল ও ফলের শরবত। পৌর শহরের সুমিরদিয়াপাড়ার বাসিন্দা দিনমজুর আনারুল ইমলাম ফল কিনতেই এসেছিলেন বড় বাজারে। তিনি বলেন, একটি তরমুজ কিনতে বলেছে গিন্নি। সারা দিনের পারিশ্রমিক হিসেবে পেয়েছি ৫০০ টাকা। পারিশ্রমিকের সবটাই নিয়ে এসেছি ইফতারের জন্য কিছু ফল, আলুরচপ ও পেঁয়াজু কিনতে। তবে তরমুজের দাম শুনে হতভম্ব হয়েছি। বাড়িতে মা, স্ত্রী ও সন্তানসহ আমরা পাঁচজন। ১০০ টাকার মধ্যে একটি তরমুজ কিনতে চেয়েছিলাম, কিন্তু মাঝারি সাইজের একটি তরমুজের দাম বলছে সাড়ে ৪০০ টাকা। ১৫০ টাকার নিচে কোনো তরমুজই নেই, আর এই টাকায় যে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে তাও একেবারে ছোট। এখন তরমুজ কিনতে অপেক্ষা, আশা করছি কয়েকদিন পর দাম কমবে।’

শহরের কোর্ট মোড়ে শুধুমাত্র রমজান মাসের জন্য স্থায়ী হয়েছে কয়েকটি ইফতারির দোকান। কথা হয় এসব দোকানের বেশ কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে। স্থানীয় বাসিন্দা রাব্বি নামের এক যুবক বলেন, বাড়িতে শরবত তৈরি হলেও, আলুরচপ, পেঁয়াজুসহ বিভিন্ন ভাজা-পোড়া ইফতার আইটেমের জন্য বাইরের দোকানই ভরসা। বিভিন্ন আকার ও প্রকারভেদে চপ, পেঁয়াজু, বেগুনি, ছোলা, টিকিয়া ইত্যাদি পাঁচ টাকা থেকে শুরু করে ১৫ টাকা পর্যন্ত প্রতি পিস। তিন জনের জন্য ১০০ টাকায় পর্যাপ্ত ইফতার কেনা যায়।

জেলার একমাত্র তিন তারকা মানের হোটেল সাহিদ প্যালেস ইফতার বাজারেও ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ে। ইফতার কিনতে আসা সাদিকুর রহমান বলেন, সাহিদ প্যালেসের ইফতার বাজারে এমন কিছু পদ মেলে, যা না বাড়িতে তৈরি করতে পারবেন, আর না বছরের অন্য সময় পাওয়া যাবে। এখানের হালিম, চিকেন পরাটা ও ভেজিটেবল পাকোড়া বাড়ির সবাই পছন্দ করে। দামের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘দামও আহামরি কিছু নয়।’ এই ক্রেতার যা আহামরি নয়, অন্যের কাছে তা আকাশচুম্বী হতেই পারে।