ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গায় সংবর্ধনা গ্রহণ ও মতবিনিময় সভায় এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার

তদবির ছাড়া কোনো কাজই ঠিকমতো হয় না

আলমডাঙ্গা অফিস:
  • আপলোড টাইম : ১১:৪৬:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪
  • / ৫৫ বার পড়া হয়েছে

আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনকে সংবর্ধনা প্রদান ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে এ সংবর্ধনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্নিগ্ধা দাস। প্রধান অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি।

তিনি বলেন, ‘আপনারা উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে আছেন। প্রত্যেক দপ্তরেই সমস্যা আছে। সমস্যা চিহ্নিত করে স্ব স্ব দপ্তরে প্রেরণ করেন এবং ওই কপি আমাকে দেবেন। কারণ তদবির ছাড়া কোনো কাজই ঠিকমতো হয় না। সমস্যা আছে সমাধানও আছে।’ তিনি পৌরসভা সম্পর্কে বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে পৌর ভবন নির্মাণের জন্য ১ কোটি টাকা বরাদ্দ এসেছিল। জমি অধিগ্রহণ হয়েছে কিন্তু বিল্ডিং হয়নি। মীর মহি থেকে গনু মিয়া কেউ পৌর ভবন নির্মাণ করেননি। সেই ভবন নির্মাণের টাকা কী হয়েছে, সেটাও জানা নেই।
প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের উদ্দেশ্যে ছেলুন জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘আপনারা বলছেন দুই শিফট শিক্ষা কার্যক্রম চালাবেন। কিন্তু আমি জানি আপনারা সঠিকভাবে এক শিফট চালাতে পারবেন না। কারণ কোনো স্কুলে ৮-৯ জন, কোনো স্কুলে মাত্র ৩ জন শিক্ষক দিয়ে কাজ চালাচ্ছেন। আমার কাছে খবর আছে শিক্ষকেরা কেউ কেউ বাড়ির কাছে স্কুল হওয়ার কারণে খেত-খামার পরিচর্যা করে এসে স্কুল করেন। আবার শিক্ষিকারা বসে বসে সোয়েটার বোনে। আপনারা কিছু মনে নেবেন না, কারণ দেশটা আমাদের সকলের। এই দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ করতে হলে আপনাদের সহায়তা লাগবে।’
সমাজসেবা বিভাগ সম্পর্কে তিনি বলেন, আপনারা বলছেন, দামুড়হুদার চাইতে আলমডাঙ্গা উপজেলায় ভাতা কম পায়। কারণ হিসেবে এমপি ছেলুন বলেন, ‘তৎকালীন এমপি মোজাম্মেল হক জীবননগর ও দামুড়হুদা দুই উপজেলার শতভাগ লোক গরিব দেখিয়েছে। যে কারণে আলমডাঙ্গায় লোক সংখ্যা বেশি হলেও তাদের থেকে ভাতা কম পাচ্ছি আমরা। তবে আপনারা ওপরে লেখেন, আমি তদবির করে দেখব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞ আপনাদের প্রতি, আপনারা নিজ নিজ অফিসের মাধ্যমে সমস্যা তুলে ধরেন। আমি কাজ করতে ভয় পাই না। আমাকে দিয়ে করিয়ে নিতে হবে। কথা দিচ্ছি আপনাদের সাথে নিয়ে যে সমস্ত অসমাপ্ত কাজ আছে, সেগুলো শেষ করব।’ উপজেলা পরিষদের ভবন নির্মাণের বিষয়ে তিনি একই কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা টাকার বরাদ্দ চেয়ে দরখাস্ত করে আমাকে কপি দেবেন, আমি তদবির করে বের করে আনব। তবে সকলে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।’ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে কেন ডায়াগনস্টিক সেন্টার হলো তার জবাব চান তিনি।
এ বিষয়ে সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, তৎকালীন কমান্ডার শফিউর রহমান জোয়ার্দ্দার ও তৎকালীন ইউএনও করে গেছেন। এমপি তাদের নোটিশ করতে বলেন, যেন অচিরে ভবনটি মুক্ত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা এসে যেন কষ্ট না পায়।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার রেহানা পারভীন, প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. আব্দুল্লাহিল কাফি, হারদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার নাজনীন সুলতানা কনা ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র খন্দকার মজিবুল হক। উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর জামাল উদ্দিনের উপস্থাপনায় বক্তব্য দেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার শামসুজ্জোহা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাকসুরা জান্নাত, মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আশুরা খাতুন, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হক, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক, খাদ্য কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ, আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা আজিজুল হাকিম প্রমুখ।
এর আগে এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার উপজেলা পরিষদে এসে পৌঁছালে তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। মতবিনিময় শেষে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমপিকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। আর উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাকে কৃষি পণ্য মাশরুম, রঙিন ফুলকপিসহ কয়েক রকমের কৃষি পণ্য উপহার দেওয়া হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

আলমডাঙ্গায় সংবর্ধনা গ্রহণ ও মতবিনিময় সভায় এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার

তদবির ছাড়া কোনো কাজই ঠিকমতো হয় না

আপলোড টাইম : ১১:৪৬:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪

আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনকে সংবর্ধনা প্রদান ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে এ সংবর্ধনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্নিগ্ধা দাস। প্রধান অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি।

তিনি বলেন, ‘আপনারা উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে আছেন। প্রত্যেক দপ্তরেই সমস্যা আছে। সমস্যা চিহ্নিত করে স্ব স্ব দপ্তরে প্রেরণ করেন এবং ওই কপি আমাকে দেবেন। কারণ তদবির ছাড়া কোনো কাজই ঠিকমতো হয় না। সমস্যা আছে সমাধানও আছে।’ তিনি পৌরসভা সম্পর্কে বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে পৌর ভবন নির্মাণের জন্য ১ কোটি টাকা বরাদ্দ এসেছিল। জমি অধিগ্রহণ হয়েছে কিন্তু বিল্ডিং হয়নি। মীর মহি থেকে গনু মিয়া কেউ পৌর ভবন নির্মাণ করেননি। সেই ভবন নির্মাণের টাকা কী হয়েছে, সেটাও জানা নেই।
প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের উদ্দেশ্যে ছেলুন জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘আপনারা বলছেন দুই শিফট শিক্ষা কার্যক্রম চালাবেন। কিন্তু আমি জানি আপনারা সঠিকভাবে এক শিফট চালাতে পারবেন না। কারণ কোনো স্কুলে ৮-৯ জন, কোনো স্কুলে মাত্র ৩ জন শিক্ষক দিয়ে কাজ চালাচ্ছেন। আমার কাছে খবর আছে শিক্ষকেরা কেউ কেউ বাড়ির কাছে স্কুল হওয়ার কারণে খেত-খামার পরিচর্যা করে এসে স্কুল করেন। আবার শিক্ষিকারা বসে বসে সোয়েটার বোনে। আপনারা কিছু মনে নেবেন না, কারণ দেশটা আমাদের সকলের। এই দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ করতে হলে আপনাদের সহায়তা লাগবে।’
সমাজসেবা বিভাগ সম্পর্কে তিনি বলেন, আপনারা বলছেন, দামুড়হুদার চাইতে আলমডাঙ্গা উপজেলায় ভাতা কম পায়। কারণ হিসেবে এমপি ছেলুন বলেন, ‘তৎকালীন এমপি মোজাম্মেল হক জীবননগর ও দামুড়হুদা দুই উপজেলার শতভাগ লোক গরিব দেখিয়েছে। যে কারণে আলমডাঙ্গায় লোক সংখ্যা বেশি হলেও তাদের থেকে ভাতা কম পাচ্ছি আমরা। তবে আপনারা ওপরে লেখেন, আমি তদবির করে দেখব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞ আপনাদের প্রতি, আপনারা নিজ নিজ অফিসের মাধ্যমে সমস্যা তুলে ধরেন। আমি কাজ করতে ভয় পাই না। আমাকে দিয়ে করিয়ে নিতে হবে। কথা দিচ্ছি আপনাদের সাথে নিয়ে যে সমস্ত অসমাপ্ত কাজ আছে, সেগুলো শেষ করব।’ উপজেলা পরিষদের ভবন নির্মাণের বিষয়ে তিনি একই কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা টাকার বরাদ্দ চেয়ে দরখাস্ত করে আমাকে কপি দেবেন, আমি তদবির করে বের করে আনব। তবে সকলে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।’ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে কেন ডায়াগনস্টিক সেন্টার হলো তার জবাব চান তিনি।
এ বিষয়ে সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, তৎকালীন কমান্ডার শফিউর রহমান জোয়ার্দ্দার ও তৎকালীন ইউএনও করে গেছেন। এমপি তাদের নোটিশ করতে বলেন, যেন অচিরে ভবনটি মুক্ত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা এসে যেন কষ্ট না পায়।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার রেহানা পারভীন, প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. আব্দুল্লাহিল কাফি, হারদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার নাজনীন সুলতানা কনা ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র খন্দকার মজিবুল হক। উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর জামাল উদ্দিনের উপস্থাপনায় বক্তব্য দেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার শামসুজ্জোহা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাকসুরা জান্নাত, মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আশুরা খাতুন, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হক, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক, খাদ্য কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ, আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা আজিজুল হাকিম প্রমুখ।
এর আগে এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার উপজেলা পরিষদে এসে পৌঁছালে তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। মতবিনিময় শেষে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমপিকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। আর উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাকে কৃষি পণ্য মাশরুম, রঙিন ফুলকপিসহ কয়েক রকমের কৃষি পণ্য উপহার দেওয়া হয়।