ইপেপার । আজ শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘ভুয়া ঋণ’ দেখিয়ে গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ

প্রতিবেদক, মুজিবনগর:
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪০:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪
  • / ১০৫ বার পড়া হয়েছে

মুজিবনগর আর্স বাংলাদেশ এনজিওর বিরুদ্ধে ঋণের টাকা আত্মসাৎ করে গ্রাহকের উপর চাপিয়ে মামলা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আদালতে পাল্টা-পাল্টি মামলা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের আব্দুল মতিনের স্ত্রী আসমা খাতুন পরিবারিক সমস্যার কারণে আর্স বাংলাদেশ মুজিবনগর শাখা থেকে ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি গাভি পালনের জন্য দুই লাখ টাকার একটি ঋণ নেন। নিয়ম অনুযায়ী তিনি সবগুলো কিস্তি পরিশোধ করে দেন। তবে অফিসিয়াল কম্পিউটার সফটওয়্যার ও আরেকটি পাশ বইয়ে ২০২২ সালের ২ নভেম্বর তার নামে এক লাখ টাকার আরেকটি ঋণ দেখাচ্ছে। সেখানে কিছু টাকা লেনদেন দেখিয়ে শাখা ব্যবস্থাপক পলাশ শোভন মল্লিক ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে চলে যায়। ৬ নভেম্বর নতুন শাখা ব্যবস্থাপক জাহিদ হাসান যোগদান করেন। তিনি অফিসিয়াল কাগজপত্রে ঋণ খেলাপি দেখে গ্রাহক আসমা খাতুনকে ঋণ পরিষদের চাপ সৃষ্টি করেন। আসমা খাতুন এই ঋণ গ্রহণ করেনি মর্মে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এমতাবস্থায় আর্স বাংলাদেশ মুজিবনগর শাখা ব্যবস্থাপক জাহিদ হাসান খেলাপির টাকা আদায় করতে না পারায় মেহেরপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর সি আর ৩৫৫ /২০২৩ মুজিবনগর।

পরে আসমা খাতুন বাদী হয়ে আর্স বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভুয়া সিগনেচার ও টিপসই দিয়ে ঋণ জালিয়াতি করেছে মর্মে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে একটি মামলা করেন। মামলা নম্বর সি আর,৩৬৯/ ২০২৩ ।

এ বিষয়ে আসমা খাতুন বলেন, আমি ঋণের কিস্তি দিয়ে পরিশোধ করেছি। অথচ আমার নামে ভুয়া বই তৈরি করে মামলা দিয়েছে। এই ঋণ আমি গ্রহণ করিনি। তারা যে কাগজপত্র আদালতে দাখিল করেছে সেগুলো ভুয়া। যে বইটি দেখানো হয়েছে সেই বই আমার না। বইয়ের সিগনেচার ও টিপসই আমার না। সই থেকে শুরু করে সবকিছুই জাল করে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। আমি আনন্দবাসমিয়া মনসুর একাডেমির একজন শিক্ষিকা। প্রয়োজন হলে আপনারা আমার স্কুলের হাজিরা খাতা দেখতে পারেন। আমি যে টাকা নিয়েছি, সেই বইয়ের সই আর আমার স্কুলের হাজিরা খাতার সই একই রকম। অথচ এনজিও যে ঋণটি দেখাচ্ছে, সেই বইয়ের সই আমার না। আমার স্কুলের হাজিরা খাতার সাথে কোনো মিল নেই। যে টিপসই দিয়েছে সেটাও আমার না। সব জাল কাগজপত্র দেখিয়ে আমাকে হয়রানি করার জন্য মামলা দিয়েছে। আমি আদালতের কাছে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি, যাতে করে এই ধরনের প্রতারণায় মুজিবনগরের কোনো মানুষ না পড়ে।

এ বিষয়ে আর্স বাংলাদেশ শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের অফিসিয়াল রুলস অনুযায়ী সবকিছুতেই তার ঋণ গ্রহণ করা আছে। সেই অনুযায়ী আসমা খাতুনের কাছে কিস্তি চাওয়া হয়েছে। সে অস্বীকৃতি জানালে তার নামে মামলা করা হয়েছে। বই ডুপ্লিকেটের বিষয়ে তিনি বলেন, আগের ঋণের বইটি তিনি হারিয়ে ফেলেছিলেন। আমার কর্মীরা আবার তাকে নতুন বই দিয়েছিলেন। আগের বইতে দুই লাখ টাকার ঋণ পরিশোধ করে নতুন বইতে আবারও ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। এক লাখ টাকা পরিশোধ না করায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

‘ভুয়া ঋণ’ দেখিয়ে গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ

আপলোড টাইম : ০৯:৪০:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪

মুজিবনগর আর্স বাংলাদেশ এনজিওর বিরুদ্ধে ঋণের টাকা আত্মসাৎ করে গ্রাহকের উপর চাপিয়ে মামলা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আদালতে পাল্টা-পাল্টি মামলা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের আব্দুল মতিনের স্ত্রী আসমা খাতুন পরিবারিক সমস্যার কারণে আর্স বাংলাদেশ মুজিবনগর শাখা থেকে ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি গাভি পালনের জন্য দুই লাখ টাকার একটি ঋণ নেন। নিয়ম অনুযায়ী তিনি সবগুলো কিস্তি পরিশোধ করে দেন। তবে অফিসিয়াল কম্পিউটার সফটওয়্যার ও আরেকটি পাশ বইয়ে ২০২২ সালের ২ নভেম্বর তার নামে এক লাখ টাকার আরেকটি ঋণ দেখাচ্ছে। সেখানে কিছু টাকা লেনদেন দেখিয়ে শাখা ব্যবস্থাপক পলাশ শোভন মল্লিক ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে চলে যায়। ৬ নভেম্বর নতুন শাখা ব্যবস্থাপক জাহিদ হাসান যোগদান করেন। তিনি অফিসিয়াল কাগজপত্রে ঋণ খেলাপি দেখে গ্রাহক আসমা খাতুনকে ঋণ পরিষদের চাপ সৃষ্টি করেন। আসমা খাতুন এই ঋণ গ্রহণ করেনি মর্মে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এমতাবস্থায় আর্স বাংলাদেশ মুজিবনগর শাখা ব্যবস্থাপক জাহিদ হাসান খেলাপির টাকা আদায় করতে না পারায় মেহেরপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর সি আর ৩৫৫ /২০২৩ মুজিবনগর।

পরে আসমা খাতুন বাদী হয়ে আর্স বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভুয়া সিগনেচার ও টিপসই দিয়ে ঋণ জালিয়াতি করেছে মর্মে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে একটি মামলা করেন। মামলা নম্বর সি আর,৩৬৯/ ২০২৩ ।

এ বিষয়ে আসমা খাতুন বলেন, আমি ঋণের কিস্তি দিয়ে পরিশোধ করেছি। অথচ আমার নামে ভুয়া বই তৈরি করে মামলা দিয়েছে। এই ঋণ আমি গ্রহণ করিনি। তারা যে কাগজপত্র আদালতে দাখিল করেছে সেগুলো ভুয়া। যে বইটি দেখানো হয়েছে সেই বই আমার না। বইয়ের সিগনেচার ও টিপসই আমার না। সই থেকে শুরু করে সবকিছুই জাল করে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। আমি আনন্দবাসমিয়া মনসুর একাডেমির একজন শিক্ষিকা। প্রয়োজন হলে আপনারা আমার স্কুলের হাজিরা খাতা দেখতে পারেন। আমি যে টাকা নিয়েছি, সেই বইয়ের সই আর আমার স্কুলের হাজিরা খাতার সই একই রকম। অথচ এনজিও যে ঋণটি দেখাচ্ছে, সেই বইয়ের সই আমার না। আমার স্কুলের হাজিরা খাতার সাথে কোনো মিল নেই। যে টিপসই দিয়েছে সেটাও আমার না। সব জাল কাগজপত্র দেখিয়ে আমাকে হয়রানি করার জন্য মামলা দিয়েছে। আমি আদালতের কাছে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি, যাতে করে এই ধরনের প্রতারণায় মুজিবনগরের কোনো মানুষ না পড়ে।

এ বিষয়ে আর্স বাংলাদেশ শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের অফিসিয়াল রুলস অনুযায়ী সবকিছুতেই তার ঋণ গ্রহণ করা আছে। সেই অনুযায়ী আসমা খাতুনের কাছে কিস্তি চাওয়া হয়েছে। সে অস্বীকৃতি জানালে তার নামে মামলা করা হয়েছে। বই ডুপ্লিকেটের বিষয়ে তিনি বলেন, আগের ঋণের বইটি তিনি হারিয়ে ফেলেছিলেন। আমার কর্মীরা আবার তাকে নতুন বই দিয়েছিলেন। আগের বইতে দুই লাখ টাকার ঋণ পরিশোধ করে নতুন বইতে আবারও ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। এক লাখ টাকা পরিশোধ না করায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।