ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টাকা না দেওয়ায় তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সেবিকার বিরুদ্ধে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৩৭ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, দামুড়হুদা:
দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এসে বিড়ম্বনার শিকার প্রসূতি মা। টাকা দিতে না পারায় চিকিৎসা না দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী ওই প্রসূতি মা। ঘটনাটি ঘটেছে গত রোববার বিকেল ৪টার দিকে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলার হাতিভাঙ্গার বসতিপাড়ার অসহায় তারাচাঁদ ফকিরের মেয়ে রোজিনা খাতুন টাকার অভাবে হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে নিতে না পেরে গত রোববার বাড়িতে ছেলে সন্তান প্রসব করেন। তবে সন্তান প্রসবের সময় সৃষ্ট ক্ষত থেকে রক্তকরণ শুরু হয়। পরিবার ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় রোজিনা খাতুনকে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিষয়টি জানার পর সেবিকাদের নিকট পাঠান। তখন সেবিকার দায়িত্ব পালন করেন অশিতা হালদার, জেনিফা খাতুন ও আয়া সেলিনা খাতুন। এসময় রোগী দেখার পর অশিতা হালদার ও আয়া সেলিনা খাতুন কিছু টাকা দাবি করে বলেন, যে হাত মোজা, সাবান, সুতা কিনে আনতে। সেগুলো কিনে আনার পর ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা গরিব মানুষভ ২ হাজার টাকা দিব। তখন সেবিকা অশিত টাকা কম হওয়ায় রাগ দেখিয়ে রোগী এবং স্বজনদের তাড়িয়ে দেন।
রোজিনার বোন পারভিন বলেন, আমার বোনকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর ক্ষতস্থানে সেলাই দেওয়ার জন্য সেবিকা অশিত হালদার ও আয়া আমাদের কাছে ১০ হাজার টাকা চান। আমরা দুই হাজার টাকা দিতে চাইলে আমাদের তাড়িয়ে দেয়। আমরা গরিব মানুষ। এতো টাকা কোথায় পাবো?
পরে হাসপাতালের সামনের ক্লিনিকে সেলাই দিয়ে আমার বোনকে বাঁচায়। সরকারি হাসপাতালে গরিব মানুষের যদি ঠাঁই না হয় তাহলে যাব কোথায়। তবে দামুড়হুদা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবিকা অশিত হালদার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন টাকা চাইনি। সমস্যাটা গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় অন্য স্থানে চিকিৎসক নেওয়ার জন্য বলেছি।
দামুড়হুদা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও (ভারপ্রাপ্ত) মেডিকেল অফিসার ডা. মহিবুল্লাহ বলেন, ঘটনাটি আমি জানতাম না। গতকাল শুনলাম। দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডা. হেলেনা আক্তার নিপা ট্রেনিংয়ে থাকা অবস্থায় বলেন, এমন ঘটনা শুনেছি। তবে মেয়েটার যে অবস্থা তা সেবিকারা সেলাই করতে পারতো না। টাকা চাওয়া হয়নি এমনটাই শুনেছি।
দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা মিতা বলেন, এমন ঘটনায় আমার একজন ফোন করেছিল। মেয়েটাকে সু-চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা হেলেনা আক্তার নিপাকে ব্যবস্থা নেওয়া কথা বলেছিলাম।’
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আওলিয়ার রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত ঘটনা সম্পর্কে কেউ অবগত করেনি। যদি এ ধরণের কোন অভিযোগ থেকে থাকে তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

টাকা না দেওয়ায় তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সেবিকার বিরুদ্ধে

আপলোড টাইম : ০৯:৩৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

প্রতিবেদক, দামুড়হুদা:
দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এসে বিড়ম্বনার শিকার প্রসূতি মা। টাকা দিতে না পারায় চিকিৎসা না দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী ওই প্রসূতি মা। ঘটনাটি ঘটেছে গত রোববার বিকেল ৪টার দিকে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলার হাতিভাঙ্গার বসতিপাড়ার অসহায় তারাচাঁদ ফকিরের মেয়ে রোজিনা খাতুন টাকার অভাবে হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে নিতে না পেরে গত রোববার বাড়িতে ছেলে সন্তান প্রসব করেন। তবে সন্তান প্রসবের সময় সৃষ্ট ক্ষত থেকে রক্তকরণ শুরু হয়। পরিবার ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় রোজিনা খাতুনকে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিষয়টি জানার পর সেবিকাদের নিকট পাঠান। তখন সেবিকার দায়িত্ব পালন করেন অশিতা হালদার, জেনিফা খাতুন ও আয়া সেলিনা খাতুন। এসময় রোগী দেখার পর অশিতা হালদার ও আয়া সেলিনা খাতুন কিছু টাকা দাবি করে বলেন, যে হাত মোজা, সাবান, সুতা কিনে আনতে। সেগুলো কিনে আনার পর ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা গরিব মানুষভ ২ হাজার টাকা দিব। তখন সেবিকা অশিত টাকা কম হওয়ায় রাগ দেখিয়ে রোগী এবং স্বজনদের তাড়িয়ে দেন।
রোজিনার বোন পারভিন বলেন, আমার বোনকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর ক্ষতস্থানে সেলাই দেওয়ার জন্য সেবিকা অশিত হালদার ও আয়া আমাদের কাছে ১০ হাজার টাকা চান। আমরা দুই হাজার টাকা দিতে চাইলে আমাদের তাড়িয়ে দেয়। আমরা গরিব মানুষ। এতো টাকা কোথায় পাবো?
পরে হাসপাতালের সামনের ক্লিনিকে সেলাই দিয়ে আমার বোনকে বাঁচায়। সরকারি হাসপাতালে গরিব মানুষের যদি ঠাঁই না হয় তাহলে যাব কোথায়। তবে দামুড়হুদা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবিকা অশিত হালদার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন টাকা চাইনি। সমস্যাটা গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় অন্য স্থানে চিকিৎসক নেওয়ার জন্য বলেছি।
দামুড়হুদা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও (ভারপ্রাপ্ত) মেডিকেল অফিসার ডা. মহিবুল্লাহ বলেন, ঘটনাটি আমি জানতাম না। গতকাল শুনলাম। দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডা. হেলেনা আক্তার নিপা ট্রেনিংয়ে থাকা অবস্থায় বলেন, এমন ঘটনা শুনেছি। তবে মেয়েটার যে অবস্থা তা সেবিকারা সেলাই করতে পারতো না। টাকা চাওয়া হয়নি এমনটাই শুনেছি।
দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা মিতা বলেন, এমন ঘটনায় আমার একজন ফোন করেছিল। মেয়েটাকে সু-চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা হেলেনা আক্তার নিপাকে ব্যবস্থা নেওয়া কথা বলেছিলাম।’
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আওলিয়ার রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত ঘটনা সম্পর্কে কেউ অবগত করেনি। যদি এ ধরণের কোন অভিযোগ থেকে থাকে তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।