ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সন্তানের স্নেহে নিজেই এতিম শিশুদের পিতা-মাতার ভূমিকায়

দিনব্যাপী সরকারি শিশু পরিবারের কন্যা শিশুদের সাথে আনন্দঘন সময় কাটালেন জেলা প্রশাসক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ১৩৮ বার পড়া হয়েছে

মেহেরাব:
শিশুরা পার্কে পৌঁছানোর আগেই তিনি এসেছেন। গেটের ঠিক সামনেই রজনীগন্ধা ফুল হাতে দাড়িয়ে তিনি অপেক্ষায় আছেন। গাড়ি পার্কে প্রবেশ করার পর একে একে নামলো শিশুরা। নিজ হাতে শিশুদের ফুল দিয়ে বরণ করলেন। দিনব্যাপী সন্তান স্নেহে আনন্দ-উল্লাসে সময় কাটালেন তিনি। বলছিলাম, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমার কথা। গতকাল শনিবার দিনব্যাপী দামুড়হুদার তালসারি ডিসি ইকোপার্কে সরকারি শিশু পরিবারের শিশুদের নিয়ে এ রকম স্নেহশীল ও আনন্দঘন সময় পার করেন জেলা প্রশাসক। বিনয়ে তিনি চুয়াডাঙ্গার মানুষের হৃদয়ে ইতোমধ্যেই জায়গা করে নিয়েছেন, এবার শিশু বান্ধব তথা নিজেই পিতা-মাতার জায়গা নিলেন সরকারি শিশু পরিবারের কন্যা শিশুদের। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমার স্নেহাস্পদ সময় স্মরণীয় হয়েছে শিশু পরিবারের সদস্যদের হৃদয়ে।

জানা যায়, সরকারি শিশু পরিবারের কন্যা শিশুদের বিনোদন দিতে জেলা প্রশাসন তাদের নিয়ে আনন্দ ভ্রমণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। গতকাল সকালে চুয়াডাঙ্গা সরকারি শিশু পরিবারের কন্যা শিশুদের নিয়ে জেলা সমাজ সেবা অফিস ও শিশু পরিবারের কর্মকর্তারা বাসযোগে রওনা দেন ডিসি ইকো পার্কের উদ্দেশ্য। তাদের পৌঁছানোর আগেই পার্কে পৌঁছে যান জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমাসহ জেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তারা। শিশুদের নিয়ে বাস নিরাপদে পৌঁছে যায় ডিসি ইকো পার্কের গেটের সামনে। ফুল হাতে দাড়িয়ে থাকা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা মুখ ভরা হাসি ও স্নেহে নিজেই শিশুদের প্রত্যেকের হাতে তুলে দেন ফুল।

ভ্রমণের শুরুটায় যখন শিশুদের জন্য এতো দারুণ। তখন, দিনটা তো তাদের আনন্দে কাটবেই। জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা শিশুদের সাথেই রওনা হলেন পুরো পার্ক ঘুরে দেখতে। শিশুদের জন্য জেলা প্রশাসক নিজেই ছিলেন পার্কের গাইড। গল্পে আড্ডায় মেতেছিলেন শিশুদের সাথে। অপলক দৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থেকে নিজেই শিশুদেরকে পার্কের সবগুলো রাইড চড়িয়েছেন। প্রতিটি মুহুর্তেই শিশুদের পাশে থেকে আগলে রেখেছেন তিনি। সন্তানের স্নেহে তিনি নিজেই ছিলেন এতিম শিশুদের পিতা-মাতার ভূমিকায়।
ভ্রমণের এখানেই শেষ নয়, সদা হাস্যজ্জ্বল ও সাদামনের ড. কিসিঞ্জার চাকমা এবার শিশুদের সাথে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। এই আয়োজন অনন্য, অন্য রকম। সরকারি শিশু পরিবারের এতিম শিশুদের পরিবেশনায় নৃত্য দেখে ও গান শুনে সবাই মুগ্ধ। আয়োজনে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারাও নিলেন অংশ, শিশুদের শোনালেন গান। এ সময় দামুড়হুদা উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের পরিবেশনা অনুষ্ঠানকে আরও মনোজ্ঞ করেছিল। মধ্যহ্নভোজে শিশুদের জন্য উন্নত মানের খাবারের আয়োজন করা হয়। টেবিলে ঘুরে ঘুরে শিশুদের খোঁজ খবর নেন জেলা প্রশাসক। দুই শিশুর পাশে বসেই তিনিও খাওয়া শেষ করেন।

আনন্দ ভ্রমণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আরএম ফয়জুর রহমান।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা) শারমিন আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামিদ রেজা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আরাফাত রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) কবীর হোসেন, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোকসানা মিতা, সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (রাজস্ব শাখা ও ভূমি অধিগ্রহণ শাখা) শেখ মো. রাসেল, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (রেভিনিউ মুন্সিখানা শাখা ও ভিপি সেল) নুর পেয়ারা বেগম, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাদাত হোসেন, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহিদুল আলম, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবদুর রহমান, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম সাইফ, চুয়াডাঙ্গা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক সিদ্দকা সোহেলী রশীদ, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজীব হাসান কচি, দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর কবীর ও সেকেন্ড অফিসার এসআই আসাদ প্রমুখ।

দিনব্যাপী আনন্দ ভ্রমণ শেষে বিকালে বাসযোগে শিশুরা ফিরে আসেন চুয়াডাঙ্গায় তাদের আপন ঠিকানায়।
জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, শিশু পরিবারের সকলে আমার সন্তানের মত। তাদের নিয়েই আজকের দিন আনন্দে কেটেছে। তাদের পাশে থাকাটা আমাদের জন্য গর্বের। শিশুরা সারা পার্কে ঘুরে ঘুরে দেখেছে আর তাদের পছন্দের রাইডে চড়ে বেজায় খুশি। তারা একটি নির্দিষ্ট জয়গায় থেকে বড় হয়। ব্যতিক্রম কিছু করতেই এ আয়োজন। তাদের চঞ্চলতা দেখে আমি মুগ্ধ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

সন্তানের স্নেহে নিজেই এতিম শিশুদের পিতা-মাতার ভূমিকায়

দিনব্যাপী সরকারি শিশু পরিবারের কন্যা শিশুদের সাথে আনন্দঘন সময় কাটালেন জেলা প্রশাসক

আপলোড টাইম : ০৯:১৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

মেহেরাব:
শিশুরা পার্কে পৌঁছানোর আগেই তিনি এসেছেন। গেটের ঠিক সামনেই রজনীগন্ধা ফুল হাতে দাড়িয়ে তিনি অপেক্ষায় আছেন। গাড়ি পার্কে প্রবেশ করার পর একে একে নামলো শিশুরা। নিজ হাতে শিশুদের ফুল দিয়ে বরণ করলেন। দিনব্যাপী সন্তান স্নেহে আনন্দ-উল্লাসে সময় কাটালেন তিনি। বলছিলাম, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমার কথা। গতকাল শনিবার দিনব্যাপী দামুড়হুদার তালসারি ডিসি ইকোপার্কে সরকারি শিশু পরিবারের শিশুদের নিয়ে এ রকম স্নেহশীল ও আনন্দঘন সময় পার করেন জেলা প্রশাসক। বিনয়ে তিনি চুয়াডাঙ্গার মানুষের হৃদয়ে ইতোমধ্যেই জায়গা করে নিয়েছেন, এবার শিশু বান্ধব তথা নিজেই পিতা-মাতার জায়গা নিলেন সরকারি শিশু পরিবারের কন্যা শিশুদের। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমার স্নেহাস্পদ সময় স্মরণীয় হয়েছে শিশু পরিবারের সদস্যদের হৃদয়ে।

জানা যায়, সরকারি শিশু পরিবারের কন্যা শিশুদের বিনোদন দিতে জেলা প্রশাসন তাদের নিয়ে আনন্দ ভ্রমণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। গতকাল সকালে চুয়াডাঙ্গা সরকারি শিশু পরিবারের কন্যা শিশুদের নিয়ে জেলা সমাজ সেবা অফিস ও শিশু পরিবারের কর্মকর্তারা বাসযোগে রওনা দেন ডিসি ইকো পার্কের উদ্দেশ্য। তাদের পৌঁছানোর আগেই পার্কে পৌঁছে যান জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমাসহ জেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তারা। শিশুদের নিয়ে বাস নিরাপদে পৌঁছে যায় ডিসি ইকো পার্কের গেটের সামনে। ফুল হাতে দাড়িয়ে থাকা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা মুখ ভরা হাসি ও স্নেহে নিজেই শিশুদের প্রত্যেকের হাতে তুলে দেন ফুল।

ভ্রমণের শুরুটায় যখন শিশুদের জন্য এতো দারুণ। তখন, দিনটা তো তাদের আনন্দে কাটবেই। জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা শিশুদের সাথেই রওনা হলেন পুরো পার্ক ঘুরে দেখতে। শিশুদের জন্য জেলা প্রশাসক নিজেই ছিলেন পার্কের গাইড। গল্পে আড্ডায় মেতেছিলেন শিশুদের সাথে। অপলক দৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থেকে নিজেই শিশুদেরকে পার্কের সবগুলো রাইড চড়িয়েছেন। প্রতিটি মুহুর্তেই শিশুদের পাশে থেকে আগলে রেখেছেন তিনি। সন্তানের স্নেহে তিনি নিজেই ছিলেন এতিম শিশুদের পিতা-মাতার ভূমিকায়।
ভ্রমণের এখানেই শেষ নয়, সদা হাস্যজ্জ্বল ও সাদামনের ড. কিসিঞ্জার চাকমা এবার শিশুদের সাথে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। এই আয়োজন অনন্য, অন্য রকম। সরকারি শিশু পরিবারের এতিম শিশুদের পরিবেশনায় নৃত্য দেখে ও গান শুনে সবাই মুগ্ধ। আয়োজনে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারাও নিলেন অংশ, শিশুদের শোনালেন গান। এ সময় দামুড়হুদা উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের পরিবেশনা অনুষ্ঠানকে আরও মনোজ্ঞ করেছিল। মধ্যহ্নভোজে শিশুদের জন্য উন্নত মানের খাবারের আয়োজন করা হয়। টেবিলে ঘুরে ঘুরে শিশুদের খোঁজ খবর নেন জেলা প্রশাসক। দুই শিশুর পাশে বসেই তিনিও খাওয়া শেষ করেন।

আনন্দ ভ্রমণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আরএম ফয়জুর রহমান।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা) শারমিন আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামিদ রেজা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আরাফাত রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) কবীর হোসেন, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোকসানা মিতা, সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (রাজস্ব শাখা ও ভূমি অধিগ্রহণ শাখা) শেখ মো. রাসেল, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (রেভিনিউ মুন্সিখানা শাখা ও ভিপি সেল) নুর পেয়ারা বেগম, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাদাত হোসেন, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহিদুল আলম, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবদুর রহমান, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম সাইফ, চুয়াডাঙ্গা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক সিদ্দকা সোহেলী রশীদ, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজীব হাসান কচি, দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর কবীর ও সেকেন্ড অফিসার এসআই আসাদ প্রমুখ।

দিনব্যাপী আনন্দ ভ্রমণ শেষে বিকালে বাসযোগে শিশুরা ফিরে আসেন চুয়াডাঙ্গায় তাদের আপন ঠিকানায়।
জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, শিশু পরিবারের সকলে আমার সন্তানের মত। তাদের নিয়েই আজকের দিন আনন্দে কেটেছে। তাদের পাশে থাকাটা আমাদের জন্য গর্বের। শিশুরা সারা পার্কে ঘুরে ঘুরে দেখেছে আর তাদের পছন্দের রাইডে চড়ে বেজায় খুশি। তারা একটি নির্দিষ্ট জয়গায় থেকে বড় হয়। ব্যতিক্রম কিছু করতেই এ আয়োজন। তাদের চঞ্চলতা দেখে আমি মুগ্ধ।