চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের স্বেচ্ছাসেবকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
পায়ে সেলাই দিতে দিনমজুরের গুনতে হয়েছে দেড় হাজার টাকা
- আপলোড টাইম : ০৯:২৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৪
- / ৬৫ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে গিয়ে সেলিম আহমেদ (৩৫) নামের এক রোগীকে গুনতে হয়েছে ১ হাজার ৫ শ টাকা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে দুই পায়ে জখম নিয়ে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে যান ভুক্তভোগী সেলিম আহমেদ। এসময় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত অফিস সহায়ক ও স্বেচ্ছাসেবকরা তার দুই পায়ে সেলাই দিয়ে ১ হাজার ৫ শ টাকা হাতিয়ে নেন। এ ঘটনায় গতকালই ভুক্তভোগী সেলিমের স্বজনদের পক্ষ থেকে সিভিল সার্জন, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। পরে ঘটনার তদন্তে সদর হাসপাতলের জুনিয়র সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. এহসানুল হক তন্ময়কে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কমিটির অন্য দুজন সদস্য হলেন- সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ওয়াহেদ মাহমুদ রবিন ও ডা. সোহরাব হোসেন।
জানা গেছে, হাসপতালের স্বেচ্ছাসেবকদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন নয়। স্থানীয়রা জানান, সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের স্বেচ্ছাসেবকদের স্বেচ্ছাচারিতা চরম আকা ধারণ করেছে। এতে বিপাকে পড়ছে সাধারণ রোগীরা। স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জরুরি বিভাগে ঢুকলেও তাদের কেউই সে নিয়ম পালন করেন না। বাড়তি আয়ের নেশায় তারা রোগীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে থাকেন হরহামেশা। কাটা-ছেঁড়া রোগীদের কয়েকটা সেলাই করেই হাতিয়ে নেয় শত শত টাকা। শুধু স্বেচ্ছাসেবকদের স্বেচ্চাচারিতায় শেষ নয়, বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রতিনিধিদের খপ্পরে পড়েও প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
ভুক্তভোগী সেলিম আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, ‘পৌর এলাকার বুদ্ধিমান পাড়ায় আমার বাড়ি। মাঝের মধ্যেই বিভিন্ন কাজে হাসপাতালে আসা যাওয়া করতে হয়। স্বেচ্ছাসেবকদের কাছে যখন আমার মতো কেউ ধরাসায়ী হয়, তখন গ্রামগঞ্জের খেটে খাওয়া মানুষেরা হাসপাতালে কতটা অসহায়, তা অনুমাণ করতে পারছি।’
সেলিম হোসেন লিখিত অভিযোগে করেছেন, ‘দুই পায়ের ক্ষত নিয়ে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে এলে স্বেচ্ছাসেবক উজ্জল ও জরুরি বিভাগের স্টাফ রফিকুলসহ কয়েকজন হিসাব-নিকাশ করে বলে ১ হাজার ৯ শ টাকা লাগবে। কিন্তু আমার কাছে টাকা না থাকায় আমার সাথে থাকা কিছু মানুষের কাছে বিষয়টি বললে তারা সবাই মিলে ১ হাজার ৫ শ টাকা জোগাড় করে দেয়। আমি ১৫ শ টাকা নিয়ে উজ্জল ও রফিকুলের কাছে গেলে তারা বলে এতে হবে না। এভাবে তারা আমাকে জরুরি বিভাগে ৪০ মিনিট বসিয়ে রাখে। পরে ১৫ শ টাকা নিয়ে আমার ক্ষতস্থানে সেলাই করে তারা।’
অভিযোগের বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ওয়াহেদ মাহমুদ রবিন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর এ ঘটনায় ৩ সদস্যর কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিকে আগামী ৩ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন সিভিল সার্জন মহোদয়।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আতাউর রহমান বলেন, এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।