ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ময়নাতদন্ত শেষে হাফিজার লাশ দাফন, জামাইয়ের বিরুদ্ধে শ্বশুরের হত্যা মামলা

স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকার করে আদালতে কবিরের জবানবন্দি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৪৯:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ২৮ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদক:
জীবননগরে স্ত্রী হাফিজা খাতুনকে গলাকেটে হত্যা করেছেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন কবির হোসেন। গতকাল রোববার বিকেলে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠান। এদিকে, গতকাল বেলা তিনটায় হাফিজার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। পরে সন্তোষপুর বাবার গ্রামে তাকে দাফন করা হয়। হাফিজা খাতুন জীবননগর উপজেলার বালিহুদা গ্রামের কবির হোসেনের স্ত্রী। তিনি সন্তোষপুর গ্রামের শমসের আলীর মেয়ে।
জানা গেছে, গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জীবননগর হাসপাতাল রোডে অবস্থিত মা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে হাফিজা খাতুনকে (৩৫) গলাকেটে হত্যা করা হয়। রাত ১১টার দিকে পুলিশ কবিরকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় হাফিজার বাবা শমসের আলী গতকাল রোববার জামাই কবিরের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ কবিরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বেলা দুইটার দিকে আদালতে পাঠায়। আর আগে বেলা ১১টার দিকে হাফিজার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছিল।
পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, হাফিজা খাতুন প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বালিহুদা গ্রামের কবির হোসেনের সঙ্গে বিয়ে করেন। তিনি জীবননগর হাসপাতাল রোডে আখ সেন্টারের পাশে অবস্থিত মা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নার্সের চাকরি করতেন। হাফিজা দ্বিতীয় স্বামী থাকার সত্ত্বেও ফোনে কথা এবং দেখা করতেন জীবননগরের ‘তসলিম’ নামের এক যুবকের সঙ্গে। বিষয়টি তাঁর স্বামী কবির জেনে ফেলায় প্রায় ঝগড়া হতো। সর্বশেষ গত শনিবার বেলা ১১টার দিকে তাঁদের ঝগড়া হয়। সন্ধ্যায় ক্লিনিকের ছাদে ওই ছেলেকে দেখে রেগে যান কবির। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ক্লিনিকের ২য় তলায় গিয়ে ওই ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে দেখে স্ত্রীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। এর একপর্যায়ে ছুরি দিয়ে হাফিজার গলাকেটে পালিয়ে যান কবির। আর হাফিজা সিঁড়ি থেকে দৌঁড়ে নিচে নেমে রিসিপশনের সামনে পড়ে যান।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন জানান, হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. তারেক জুয়ায়েদের নেতৃত্বে গতকাল বেলা তিনটার দিকে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। হাফিজার গলার বামপাশে গভীর ক্ষতচিহ্নসহ বাম হাতের কবজিতে জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
জীবননগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাঈদ বলেন, গতকাল বেলা ১১টার দিকে হাফিজার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছিল। কবিরের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। বিকেলে কবিরকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ময়নাতদন্ত শেষে হাফিজার লাশ দাফন, জামাইয়ের বিরুদ্ধে শ্বশুরের হত্যা মামলা

স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকার করে আদালতে কবিরের জবানবন্দি

আপলোড টাইম : ১০:৪৯:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৪

সমীকরণ প্রতিবেদক:
জীবননগরে স্ত্রী হাফিজা খাতুনকে গলাকেটে হত্যা করেছেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন কবির হোসেন। গতকাল রোববার বিকেলে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠান। এদিকে, গতকাল বেলা তিনটায় হাফিজার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। পরে সন্তোষপুর বাবার গ্রামে তাকে দাফন করা হয়। হাফিজা খাতুন জীবননগর উপজেলার বালিহুদা গ্রামের কবির হোসেনের স্ত্রী। তিনি সন্তোষপুর গ্রামের শমসের আলীর মেয়ে।
জানা গেছে, গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জীবননগর হাসপাতাল রোডে অবস্থিত মা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে হাফিজা খাতুনকে (৩৫) গলাকেটে হত্যা করা হয়। রাত ১১টার দিকে পুলিশ কবিরকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় হাফিজার বাবা শমসের আলী গতকাল রোববার জামাই কবিরের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ কবিরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বেলা দুইটার দিকে আদালতে পাঠায়। আর আগে বেলা ১১টার দিকে হাফিজার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছিল।
পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, হাফিজা খাতুন প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বালিহুদা গ্রামের কবির হোসেনের সঙ্গে বিয়ে করেন। তিনি জীবননগর হাসপাতাল রোডে আখ সেন্টারের পাশে অবস্থিত মা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নার্সের চাকরি করতেন। হাফিজা দ্বিতীয় স্বামী থাকার সত্ত্বেও ফোনে কথা এবং দেখা করতেন জীবননগরের ‘তসলিম’ নামের এক যুবকের সঙ্গে। বিষয়টি তাঁর স্বামী কবির জেনে ফেলায় প্রায় ঝগড়া হতো। সর্বশেষ গত শনিবার বেলা ১১টার দিকে তাঁদের ঝগড়া হয়। সন্ধ্যায় ক্লিনিকের ছাদে ওই ছেলেকে দেখে রেগে যান কবির। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ক্লিনিকের ২য় তলায় গিয়ে ওই ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে দেখে স্ত্রীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। এর একপর্যায়ে ছুরি দিয়ে হাফিজার গলাকেটে পালিয়ে যান কবির। আর হাফিজা সিঁড়ি থেকে দৌঁড়ে নিচে নেমে রিসিপশনের সামনে পড়ে যান।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন জানান, হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. তারেক জুয়ায়েদের নেতৃত্বে গতকাল বেলা তিনটার দিকে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। হাফিজার গলার বামপাশে গভীর ক্ষতচিহ্নসহ বাম হাতের কবজিতে জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
জীবননগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাঈদ বলেন, গতকাল বেলা ১১টার দিকে হাফিজার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছিল। কবিরের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। বিকেলে কবিরকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে।