ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাহারি পিঠা নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে উৎসব

পিঠা উৎসবের মধ্যদিয়ে আমরা বাঙালিত্বকে খুঁজে পাই : অধ্যক্ষ ড. সাইফুর রশিদ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:৪৩:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৫৭ বার পড়া হয়েছে

Exif_JPEG_420

নিজস্ব প্রতিবেদক:

‘এসো মিলি প্রাণে প্রাণে, পিঠা-পুলি পার্বণে’ স্লোগানে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে পিঠা উৎসব-১৪৩০ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে কলেজ প্রাঙ্গণে এ পিঠা উৎসবের আয়োজন করে কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। হৃদয় হরণ, ডিম সুন্দরী, বিবি খানা, চালতা পাতা, সাইকোহেজেন, রাজ কাঁঠাল, রোহিনি, তানজু, এলিয়ান, নীল সুন্দরি, প্রেমকাড়া, মহিমা, গোলাপসহ মজার মজার নামের সব পিঠার দেখা মেলে সেখানে। আরও ছিল মালপোয়া, তালের পিঠা, দুধপুলি, ভাপা, চিতই, ডিম পিঠা, নকশি পিঠা, মুগ পাকন, পাটিসাপটা, লবঙ্গ লতিকা পিঠাসহ নানান রঙ ও ঢঙের বিচিত্র রকম পিঠা।

নামে যেমন বিচিত্র, দর্শন ও স্বাদেও তাই। উৎবমুখর আয়োজনের মধ্যদিয়ে দুই শতাধিক স্বাদ ও ধরনের পিঠা নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এ উৎসব। সকালে শোভাযাত্রার মাধ্যমে এ উৎসবের সূচনা হয়। চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ হতে শোভাযাত্রাটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় একই স্থানে এসে শেষ হয়। এরপর ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন করেন অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ কে এম সাইফুর রশিদ।

এসময় তিনি বলেন, ‘পিঠা উৎসব হচ্ছে আবহমান বাংলার উৎসব-পার্বণের অবিচ্ছেদ্য ঐতিহ্য। এ ঐতিহ্য পাহাড়ি ও বাঙালি প্রত্যেকের সংস্কৃতির শেখড়ের সন্ধান দেয়। পিঠা উৎসবের মধ্যদিয়ে আমরা আমাদের বাঙালিত্বকে খুঁজে পাই। নতুন প্রজন্মকে বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে রাখতে এমন প্রচেষ্টা। পিঠা উৎসবের মাধ্যমে বাঙালির কিছু হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য রক্ষা হচ্ছে। এই ধরনের উৎসব বাঙালি সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যম। এরকম ভিন্ন ধর্মী আয়োজনের মধ্যদিয়ে কলেজে সকল প্রকার সাংস্কৃতিক চর্চা অব্যাহত থাকবে।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ কে এম সাইফুর রশিদ পত্মী মোছা. খুরশীদ জাহান। তিনি বলেন, ‘এ আয়োজন সত্যিই দারুণ। এই অনুষ্ঠানে এসে আমার খুব ভালো লেগেছে। বাঙালির ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগকে আমি ধন্যবাদ জানাই।’ সভাপতির বক্তব্যে বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল আজিজ বলেন, ‘এ কলেজে যোগদানের পর ২০১৭ সালে আমি প্রথম পিঠা উৎসবের আয়োজন করি। ২০১৭ থেকে এ আয়োজন হয়ে আসছে। বাঙালির ইতিহাসকে ধরে রাখতে এ পিঠা উৎসব অনবদ্য অবদান রাখবে।’

চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুন্সি আবু সাঈফের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক নজরুল ইসলাম। এসময় বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জাহিদুল হাসান, সহকারী অধ্যাপক মারুফা ইয়াসমিন, প্রভাষক মোস্তাফিজুর রহমান, আজিম হোসেনসহ চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষকেরা পিঠা উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

পিঠা উৎসবে বাঙালিয়ানা পোশাক শাড়ি পরিধান করে ছাত্রীরা ও পাঞ্জাবি পরে ছাত্ররা বাহারি পিঠা নিয়ে অংশ নেন। বাংলা বিভাগের ১ম বর্ষের ছাত্রী সুরাইয়া ইয়াসমিন বলেন, ‘পিঠা খেলে ঐতিহ্য টিকে থাকবে। এ জন্য আমরা বলছি, ‘পিঠা খাও ঐতিহ্য ধরে রাখো।’ কলেজের বাংলা বিভাগের স্টলের ছাত্রী নবান্ন ইসলাম বলেন, ‘আমরা এবার বিভিন্ন পিঠা নিয়ে আমাদের স্টল সাজিয়েছি। এর মধ্যে ভাপা, চিতই, পাটিসাপটা, ডিম পিঠা অন্যতম।’ এর সঙ্গে যোগ করে স্টলের আরও দুজন বলেন, এছাড়াও ছিল ঝুলি, মাংস পিঠা, শামুক পিঠা, সূর্যমুখী, নকশা, পাকন পিঠা। উৎসবে অংশগ্রহণ করা অন্য পিঠা স্টলগুলোতেও ছিল পিঠার বৈচিত্র্যতা। উৎসবে আসা শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন পিঠা খেয়ে দেখেছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

বাহারি পিঠা নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে উৎসব

পিঠা উৎসবের মধ্যদিয়ে আমরা বাঙালিত্বকে খুঁজে পাই : অধ্যক্ষ ড. সাইফুর রশিদ

আপলোড টাইম : ১২:৪৩:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

‘এসো মিলি প্রাণে প্রাণে, পিঠা-পুলি পার্বণে’ স্লোগানে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে পিঠা উৎসব-১৪৩০ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে কলেজ প্রাঙ্গণে এ পিঠা উৎসবের আয়োজন করে কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। হৃদয় হরণ, ডিম সুন্দরী, বিবি খানা, চালতা পাতা, সাইকোহেজেন, রাজ কাঁঠাল, রোহিনি, তানজু, এলিয়ান, নীল সুন্দরি, প্রেমকাড়া, মহিমা, গোলাপসহ মজার মজার নামের সব পিঠার দেখা মেলে সেখানে। আরও ছিল মালপোয়া, তালের পিঠা, দুধপুলি, ভাপা, চিতই, ডিম পিঠা, নকশি পিঠা, মুগ পাকন, পাটিসাপটা, লবঙ্গ লতিকা পিঠাসহ নানান রঙ ও ঢঙের বিচিত্র রকম পিঠা।

নামে যেমন বিচিত্র, দর্শন ও স্বাদেও তাই। উৎবমুখর আয়োজনের মধ্যদিয়ে দুই শতাধিক স্বাদ ও ধরনের পিঠা নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এ উৎসব। সকালে শোভাযাত্রার মাধ্যমে এ উৎসবের সূচনা হয়। চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ হতে শোভাযাত্রাটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় একই স্থানে এসে শেষ হয়। এরপর ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন করেন অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ কে এম সাইফুর রশিদ।

এসময় তিনি বলেন, ‘পিঠা উৎসব হচ্ছে আবহমান বাংলার উৎসব-পার্বণের অবিচ্ছেদ্য ঐতিহ্য। এ ঐতিহ্য পাহাড়ি ও বাঙালি প্রত্যেকের সংস্কৃতির শেখড়ের সন্ধান দেয়। পিঠা উৎসবের মধ্যদিয়ে আমরা আমাদের বাঙালিত্বকে খুঁজে পাই। নতুন প্রজন্মকে বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে রাখতে এমন প্রচেষ্টা। পিঠা উৎসবের মাধ্যমে বাঙালির কিছু হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য রক্ষা হচ্ছে। এই ধরনের উৎসব বাঙালি সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যম। এরকম ভিন্ন ধর্মী আয়োজনের মধ্যদিয়ে কলেজে সকল প্রকার সাংস্কৃতিক চর্চা অব্যাহত থাকবে।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ কে এম সাইফুর রশিদ পত্মী মোছা. খুরশীদ জাহান। তিনি বলেন, ‘এ আয়োজন সত্যিই দারুণ। এই অনুষ্ঠানে এসে আমার খুব ভালো লেগেছে। বাঙালির ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগকে আমি ধন্যবাদ জানাই।’ সভাপতির বক্তব্যে বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল আজিজ বলেন, ‘এ কলেজে যোগদানের পর ২০১৭ সালে আমি প্রথম পিঠা উৎসবের আয়োজন করি। ২০১৭ থেকে এ আয়োজন হয়ে আসছে। বাঙালির ইতিহাসকে ধরে রাখতে এ পিঠা উৎসব অনবদ্য অবদান রাখবে।’

চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুন্সি আবু সাঈফের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক নজরুল ইসলাম। এসময় বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জাহিদুল হাসান, সহকারী অধ্যাপক মারুফা ইয়াসমিন, প্রভাষক মোস্তাফিজুর রহমান, আজিম হোসেনসহ চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষকেরা পিঠা উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

পিঠা উৎসবে বাঙালিয়ানা পোশাক শাড়ি পরিধান করে ছাত্রীরা ও পাঞ্জাবি পরে ছাত্ররা বাহারি পিঠা নিয়ে অংশ নেন। বাংলা বিভাগের ১ম বর্ষের ছাত্রী সুরাইয়া ইয়াসমিন বলেন, ‘পিঠা খেলে ঐতিহ্য টিকে থাকবে। এ জন্য আমরা বলছি, ‘পিঠা খাও ঐতিহ্য ধরে রাখো।’ কলেজের বাংলা বিভাগের স্টলের ছাত্রী নবান্ন ইসলাম বলেন, ‘আমরা এবার বিভিন্ন পিঠা নিয়ে আমাদের স্টল সাজিয়েছি। এর মধ্যে ভাপা, চিতই, পাটিসাপটা, ডিম পিঠা অন্যতম।’ এর সঙ্গে যোগ করে স্টলের আরও দুজন বলেন, এছাড়াও ছিল ঝুলি, মাংস পিঠা, শামুক পিঠা, সূর্যমুখী, নকশা, পাকন পিঠা। উৎসবে অংশগ্রহণ করা অন্য পিঠা স্টলগুলোতেও ছিল পিঠার বৈচিত্র্যতা। উৎসবে আসা শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন পিঠা খেয়ে দেখেছেন।