ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গায় কনকনে শীতে বেড়েছে জনদুর্ভোগ, ব্যহত হচ্ছে দৈনন্দিন কর্মযজ্ঞ

হাসপাতালে বাড়ছে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর চাপ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১৪:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৩০ বার পড়া হয়েছে

নাহিদ হাসান, ভ্রাম্যমাণ প্রতিবেদক:
শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ নেমে এসেছে আলমডাঙ্গার ছিন্নমূল মানুষের জীবনে। সকাল থেকে দিনের অধিকাংশ সময় সূর্যের দেখা না মেলায় বিপাকে পড়েছেন এ উপজেলার শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা। ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডায় ব্যহত হচ্ছে তাদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড। হাসপাতালে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুসহ সব বয়সী রোগীর সংখ্যা।
আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহেলা, নাগদাহ, আইলহাঁস, বেলগাছি, খাসকররা, চিৎলা, গাংনী, ভাংবাড়িয়া, হারদী, কুমারী, কালিদাসপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, তীব্র শীতে স্থবির হয়ে পড়েছে এসব এলাকার মানুষ। দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জনপদ। নিম্ন আয়ের মানুষেরা শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুনের উষ্ণতার আশ্রয় নিচ্ছেন।
নাগদাহ ইউনিয়নের জোড়গাছা গ্রামের ভ্যানচালক শহিদুল ইসলাম বুড়ো বলেন, ‘শীতের কারণে ভ্যান চালানো যাচ্ছে না। খেটে খাওয়া মানুষ আমরা। প্রতিদিন কাজ না করলে সংসার চলে না। কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাস না যাওয়া পর্যন্ত আমাদের মতো মানুষের কষ্ট কমবে না। এ বছর সরকারি কম্বলও পাইনি। কয়েকদিন যাবত সারাদিন ভ্যান চালিয়েও ২০০ টাকার বেশি ভাড়া হচ্ছে না। এই টাকা দিয়ে সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়ছে।’
আইলহাঁস ইউনিয়নের টাকপাড়ার ভ্যানচালক আজিজুল জানান, ছেলে সন্তান না থাকায় ৭০ বছর বয়সেও ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতে হয়। তিনটা মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। স্বামী-স্ত্রী দুজনের সংসার। সকাল থেকে ভাড়া হয়নি। গতকাল (শনিবার) বাড়ি থেকে বের হতেই পারেনি। ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসে হাত পা অবশ হয়ে যায়।
কালিদাসপুর গ্রামের কৃষক জহুরুল হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে বাড়ি থেকে বের হতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু কাজে বের না হলে খেতের দেখাশোনা হবে না। খেত নষ্ট হয়ে গেলে খাওয়ার অনিশ্চয়তা দেখা দেবে।
আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিনিটি মেডিকেল অফিসার নাজমুল হক জানান, শীত বাড়ায় হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আক্রান্তরা বিভিন্ন বয়সের হলেও শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা বেশি। নতুন বছরে প্রতিদিন গড়ে ঠান্ডাজনিত রোগে ৫ থেকে ১০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন এবং ৫০ জনেরও বেশি রোগী বর্হিবিভাগ থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এসময় অনান্য রোগীর হাসপাতালে অন্যান্য রোগীর সংখ্যা কমলেও ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাদিউজ্জামান হাদি বলেন, শীত বাড়ায় ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে। প্রতিদিনই শিশু এবং বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সী রোগী হারদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে। বিশেষ করে শিশুরা জ্বর ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। হাঁপানি ও অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বয়স্করা। সেবা প্রদানের পাশাপাশি রোগীদের আক্রান্ত থেকে মুক্ত থাকার জন্য করণীয় বিষয়ে প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে সতর্ক করা হচ্ছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

আলমডাঙ্গায় কনকনে শীতে বেড়েছে জনদুর্ভোগ, ব্যহত হচ্ছে দৈনন্দিন কর্মযজ্ঞ

হাসপাতালে বাড়ছে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর চাপ

আপলোড টাইম : ১০:১৪:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৪

নাহিদ হাসান, ভ্রাম্যমাণ প্রতিবেদক:
শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ নেমে এসেছে আলমডাঙ্গার ছিন্নমূল মানুষের জীবনে। সকাল থেকে দিনের অধিকাংশ সময় সূর্যের দেখা না মেলায় বিপাকে পড়েছেন এ উপজেলার শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা। ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডায় ব্যহত হচ্ছে তাদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড। হাসপাতালে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুসহ সব বয়সী রোগীর সংখ্যা।
আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহেলা, নাগদাহ, আইলহাঁস, বেলগাছি, খাসকররা, চিৎলা, গাংনী, ভাংবাড়িয়া, হারদী, কুমারী, কালিদাসপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, তীব্র শীতে স্থবির হয়ে পড়েছে এসব এলাকার মানুষ। দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জনপদ। নিম্ন আয়ের মানুষেরা শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুনের উষ্ণতার আশ্রয় নিচ্ছেন।
নাগদাহ ইউনিয়নের জোড়গাছা গ্রামের ভ্যানচালক শহিদুল ইসলাম বুড়ো বলেন, ‘শীতের কারণে ভ্যান চালানো যাচ্ছে না। খেটে খাওয়া মানুষ আমরা। প্রতিদিন কাজ না করলে সংসার চলে না। কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাস না যাওয়া পর্যন্ত আমাদের মতো মানুষের কষ্ট কমবে না। এ বছর সরকারি কম্বলও পাইনি। কয়েকদিন যাবত সারাদিন ভ্যান চালিয়েও ২০০ টাকার বেশি ভাড়া হচ্ছে না। এই টাকা দিয়ে সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়ছে।’
আইলহাঁস ইউনিয়নের টাকপাড়ার ভ্যানচালক আজিজুল জানান, ছেলে সন্তান না থাকায় ৭০ বছর বয়সেও ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতে হয়। তিনটা মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। স্বামী-স্ত্রী দুজনের সংসার। সকাল থেকে ভাড়া হয়নি। গতকাল (শনিবার) বাড়ি থেকে বের হতেই পারেনি। ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসে হাত পা অবশ হয়ে যায়।
কালিদাসপুর গ্রামের কৃষক জহুরুল হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে বাড়ি থেকে বের হতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু কাজে বের না হলে খেতের দেখাশোনা হবে না। খেত নষ্ট হয়ে গেলে খাওয়ার অনিশ্চয়তা দেখা দেবে।
আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিনিটি মেডিকেল অফিসার নাজমুল হক জানান, শীত বাড়ায় হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আক্রান্তরা বিভিন্ন বয়সের হলেও শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা বেশি। নতুন বছরে প্রতিদিন গড়ে ঠান্ডাজনিত রোগে ৫ থেকে ১০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন এবং ৫০ জনেরও বেশি রোগী বর্হিবিভাগ থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এসময় অনান্য রোগীর হাসপাতালে অন্যান্য রোগীর সংখ্যা কমলেও ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাদিউজ্জামান হাদি বলেন, শীত বাড়ায় ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে। প্রতিদিনই শিশু এবং বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সী রোগী হারদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে। বিশেষ করে শিশুরা জ্বর ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। হাঁপানি ও অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বয়স্করা। সেবা প্রদানের পাশাপাশি রোগীদের আক্রান্ত থেকে মুক্ত থাকার জন্য করণীয় বিষয়ে প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে সতর্ক করা হচ্ছে।