ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় সাততলা ভবনের লিফটে ঢালাইয়ের কাজ করার সময় বিপত্তি

নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১১:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ২৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের একটি নির্মাণাধীন ভবনের সাততলা থেকে পড়ে ইয়াসিন আলী (২৬) নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুইজন নির্মাণশ্রমিক। গতকাল রোববার সকাল সোয়া আটটার দিকে শহরের মুক্তিপাড়ায় টিটুর নির্মাণাধীন ভবনে কাজ করার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ইয়াসিন আলী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানা এলাকার কুরবান আলীর ছেলে। আহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার পানিহারা গ্রামের রবি দাসের ছেলে উত্তম কুমার দাস (২৭) ও চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সুমুরদিয়াপাড়ার সাইফুল ইসলামের ছেলে আশিক (২৪)। এদিকে, গতকাল দুপুরেই ইয়াসিনের পরিবারের সদস্যরা চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছে হাসপাতাল থেকে তার লাশ নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
জানা গেছে, শহরের মুক্তিপাড়ার মৃত শওকত আলীর ছেলে টিটুর নির্মাণাধীন সাততলা ভবনের লিফট চেম্বারের ওপরে ঢালায় কাজ করছিলেন ইয়াসিন আলী, উত্তম কুমার দাশ ও আশিকসহ ছয়জন নির্মাণ শ্রমিক। লিফট চেম্বারের ভেতরে কাঠের ভাড়া (কাজ করার জন্য ক্ষণস্থায়ী ব্যবস্থা) রশি দিয়ে বেঁধে তার ওপরে দাঁড়িয়ে কাজ করছিলেন ইয়াসিন আলী, উত্তম কুমার ও আশিক। এসময় হঠাৎ করেই ভাড়া ভেঙে গেলে আশিক লাফ দিয়ে ছাদে উঠতে পারলেও উত্তম কুমার ও ইয়াসিন নিচে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইয়াসিন আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমকি চিকিৎসা দিয়ে আশিককে বাড়ি পাঠানো হলেও অবস্থা শঙ্কাজনক হওয়ায় উত্তম কুমারকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।
আহত নির্মাণ শ্রমিক আশিক বলেন, ‘সকালে লিফট চেম্বারের ওপরে ঢালায় কাজ করার কথা ছিল আমাদের। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। আমি, ইয়াসিন ও উত্তম ভাড়া বেঁধে তার ওপরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ ভাড়া ভেঙে গেলে আমি লাফ দিয়ে ছাদে যেতে পারলেও ইয়াসিন ও উত্তম নিচে পড়ে যায়। এসময় অন্য শ্রমিকরা স্থানীয়দের সহায়তায় আমাকেসহ উত্তম ও ইয়াসিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। উত্তম লিফট চেম্বারের নিচের অংশে জমে থাকা পানিতে পড়ায় প্রাণে বেঁচে গেলেও ইয়াসিনের মৃত্যু হয়েছে।’
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জুবাইদা জামাল জয়া বলেন, ‘ইয়াসিন নামের একজনকে মৃত অবস্থায় জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে। আশিককে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে এবং উত্তম কুমারকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। তিনি শঙ্কামুক্ত কি না এখনি বলা সম্ভব নয়।’
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, পৌর শহরের একটি নির্মাণাধীন ভবনে কাজ করার সময় দুর্ঘটনাবসত দুজন নিচে পড়ে যায়। এরমধ্যে ইয়াসিন নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। নিতহের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় ও তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনা আহত হয়ে অপর একজন শ্রমিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় সাততলা ভবনের লিফটে ঢালাইয়ের কাজ করার সময় বিপত্তি

নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২

আপলোড টাইম : ১০:১১:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের একটি নির্মাণাধীন ভবনের সাততলা থেকে পড়ে ইয়াসিন আলী (২৬) নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুইজন নির্মাণশ্রমিক। গতকাল রোববার সকাল সোয়া আটটার দিকে শহরের মুক্তিপাড়ায় টিটুর নির্মাণাধীন ভবনে কাজ করার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ইয়াসিন আলী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানা এলাকার কুরবান আলীর ছেলে। আহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার পানিহারা গ্রামের রবি দাসের ছেলে উত্তম কুমার দাস (২৭) ও চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সুমুরদিয়াপাড়ার সাইফুল ইসলামের ছেলে আশিক (২৪)। এদিকে, গতকাল দুপুরেই ইয়াসিনের পরিবারের সদস্যরা চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছে হাসপাতাল থেকে তার লাশ নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
জানা গেছে, শহরের মুক্তিপাড়ার মৃত শওকত আলীর ছেলে টিটুর নির্মাণাধীন সাততলা ভবনের লিফট চেম্বারের ওপরে ঢালায় কাজ করছিলেন ইয়াসিন আলী, উত্তম কুমার দাশ ও আশিকসহ ছয়জন নির্মাণ শ্রমিক। লিফট চেম্বারের ভেতরে কাঠের ভাড়া (কাজ করার জন্য ক্ষণস্থায়ী ব্যবস্থা) রশি দিয়ে বেঁধে তার ওপরে দাঁড়িয়ে কাজ করছিলেন ইয়াসিন আলী, উত্তম কুমার ও আশিক। এসময় হঠাৎ করেই ভাড়া ভেঙে গেলে আশিক লাফ দিয়ে ছাদে উঠতে পারলেও উত্তম কুমার ও ইয়াসিন নিচে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইয়াসিন আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমকি চিকিৎসা দিয়ে আশিককে বাড়ি পাঠানো হলেও অবস্থা শঙ্কাজনক হওয়ায় উত্তম কুমারকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।
আহত নির্মাণ শ্রমিক আশিক বলেন, ‘সকালে লিফট চেম্বারের ওপরে ঢালায় কাজ করার কথা ছিল আমাদের। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। আমি, ইয়াসিন ও উত্তম ভাড়া বেঁধে তার ওপরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ ভাড়া ভেঙে গেলে আমি লাফ দিয়ে ছাদে যেতে পারলেও ইয়াসিন ও উত্তম নিচে পড়ে যায়। এসময় অন্য শ্রমিকরা স্থানীয়দের সহায়তায় আমাকেসহ উত্তম ও ইয়াসিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। উত্তম লিফট চেম্বারের নিচের অংশে জমে থাকা পানিতে পড়ায় প্রাণে বেঁচে গেলেও ইয়াসিনের মৃত্যু হয়েছে।’
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জুবাইদা জামাল জয়া বলেন, ‘ইয়াসিন নামের একজনকে মৃত অবস্থায় জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে। আশিককে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে এবং উত্তম কুমারকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। তিনি শঙ্কামুক্ত কি না এখনি বলা সম্ভব নয়।’
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, পৌর শহরের একটি নির্মাণাধীন ভবনে কাজ করার সময় দুর্ঘটনাবসত দুজন নিচে পড়ে যায়। এরমধ্যে ইয়াসিন নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। নিতহের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় ও তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনা আহত হয়ে অপর একজন শ্রমিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।