ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্বাচন শেষেও ঝিনাইদহের চারটি আসনে ২৬ প্রার্থীর পোস্টার-ব্যানারে সয়লাব শহর ও গ্রাম

পলিব্যাগে মোড়া লাখ লাখ পোস্টার এখন গলার কাঁটা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:৩২:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৫৬ বার পড়া হয়েছে

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ:
যে দিকে চোখ যায় সেদিকেই ভোটের পোস্টার আর ব্যানার। শহর থেকে গ্রাম, এমনকি পাড়া-মহল্লায় মাথার ওপর ঝুলছে সদ্য শেষ হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীদের পোস্টার। পোস্টারে পোস্টারে সয়লাব বাজার-ঘাট। কিন্তু পলিব্যাগে মোড়া এসব পোস্টার নিয়ে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। দড়ি ছিড়ে হরহামেশে এসব পোস্টার মাথার ওপর পড়ছে। আটকে যাচ্ছে ড্রেন ও নর্দমায়। মানুষের পায়ে পায়ে জড়িয়ে যাচ্ছে পাড়া-মহল্লা সবখানে। এক কথায় প্রার্থীদের প্রচারণার এই পোস্টার এখন মানুষের গলার কাঁটা হিসেবে দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ পোস্টার পলিথিন দিয়ে লেমোনেটিং করার কারণে পানিতে বা শিশিরে নষ্ট হচ্ছে না। তবে এতে যেমন নষ্ট হচ্ছে শহরের সৌন্দর্য্য, একইভাবে ক্ষতির মুখে পরিবেশ ও প্রকৃতি। দ্রুত এসব ব্যানার পোস্টার অপসারণ করে পুড়িয়ে ফেলার পরামর্শ পরিবেশবিদদের।

ঝিনাইদহ শহর ঘুরে দেখা যায়, শহরের কেন্দ্রস্থল পায়রা চত্বর, কেপি বসু সড়ক, হামদহ, আরাপপুর, বাজারপাড়া ও চুয়াডাঙ্গা বাসস্টান্ডের চারপাশে এখনও ঝুলছে শত শত পোস্টার। রশিতে টাঙানো অধিকাংশ পোস্টারগুলো পলিথিন দিয়ে লেমোনেটিং করা। ফলে এসব পোস্টার শিশিরেও ভিজে নষ্ট হচ্ছে না। নির্বাচন শেষ হওয়ায় পর এক সপ্তাহ পার হলেও এখনও অপসারণ করা হয়নি পোস্টারগুলো। কেপি বসু সড়কে দেখা গেছে, কাপড়ের দোকানগুলোর একেবারেই সামনে ঝুলছে হাজার হাজার পোস্টার। শুধু জেলা শহরেই এ দৃশ্য নয়, জেলার চারটি সংসদীয় আসনের ৬ উপজেলায় ২৬ জন প্রার্থীর অন্তত ১০ লাখ পোস্টার বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। অথচ নির্বাচন শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্ব স্ব প্রার্থীর পোস্টার অপসারণ করার নিয়ম রয়েছে।

শহরের ব্যবসায়ী শাহিন বলেন, নির্বাচন শেষ হয়েছে ৭ জানুয়ারি। কিন্তু এখনও ব্যানার-পোস্টার অপসারণ করা হয়নি। শহরজুড়ে হাজার হাজার পোস্টার ঝুলানো রয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষ বা কোনো প্রার্থী তাদের পোস্টার অপসারণ করেনি। এতে শহরের সৌন্দর্য্য নষ্ট হচ্ছে।

নজরুল ইসলাম নামে এক দোকানদার বলেন, যেভাবে এবার পোস্টার পলিথিন দিয়ে লেমোনেটিং করা হয়েছে, তাতে সহজে সেগুলো নষ্ট হচ্ছে না। দ্রুত এসব অপসারণ করে পুড়িয়ে ফেলা উচিত বলে তিনি মনে করেন। ঝিনাইদহ জীব বৈচিত্র্য ও পরিবেশ সংরক্ষণ কমিটির নেতা মাসুদ আহম্মদ সনজু বলেন, ব্যানার ও পোস্টারগুলি বেশির ভাগই লেমোনেটিং করা। এগুলো পরিবেশের জন্য চরম ক্ষতিকর। এই ব্যানার পোস্টার নদীতে গেলে নদী ভরাট হবে। আর ড্রেনে পড়লে পানি প্রবাহ বন্ধ হবে। তাই দ্রুত এসব অপসারণ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পৌর মেয়র কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল বলেন, ‘আমরা ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে সকল ব্যানার-পোস্টার অপসারণ করে ডাম্পিং স্টেশনে নিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলব। কারণ এগুলো গ্রীন ঝিনাইদহ গড়ার অন্যতম অন্তরায়।’

ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুন্তাছির রহমান বলেন, নির্বাচন শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্ব স্ব প্রার্থী তাদের ব্যানার বা পোস্টার সরিয়ে ফেলবেন এমন একটা নিয়ম রয়েছে। কিন্তু আমরা খেয়াল করছি নির্বাচন শেষ হলেও ব্যানার-পোস্টার অপসারণ করা হয়নি। আর যেগুলো লেমোনেটিং করা, সেগুলো পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। দ্রুত এসব ব্যানার-পোস্টার অপসারণ করতে ঝিনাইদহের ৬টি পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

নির্বাচন শেষেও ঝিনাইদহের চারটি আসনে ২৬ প্রার্থীর পোস্টার-ব্যানারে সয়লাব শহর ও গ্রাম

পলিব্যাগে মোড়া লাখ লাখ পোস্টার এখন গলার কাঁটা

আপলোড টাইম : ০৭:৩২:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৪

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ:
যে দিকে চোখ যায় সেদিকেই ভোটের পোস্টার আর ব্যানার। শহর থেকে গ্রাম, এমনকি পাড়া-মহল্লায় মাথার ওপর ঝুলছে সদ্য শেষ হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীদের পোস্টার। পোস্টারে পোস্টারে সয়লাব বাজার-ঘাট। কিন্তু পলিব্যাগে মোড়া এসব পোস্টার নিয়ে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। দড়ি ছিড়ে হরহামেশে এসব পোস্টার মাথার ওপর পড়ছে। আটকে যাচ্ছে ড্রেন ও নর্দমায়। মানুষের পায়ে পায়ে জড়িয়ে যাচ্ছে পাড়া-মহল্লা সবখানে। এক কথায় প্রার্থীদের প্রচারণার এই পোস্টার এখন মানুষের গলার কাঁটা হিসেবে দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ পোস্টার পলিথিন দিয়ে লেমোনেটিং করার কারণে পানিতে বা শিশিরে নষ্ট হচ্ছে না। তবে এতে যেমন নষ্ট হচ্ছে শহরের সৌন্দর্য্য, একইভাবে ক্ষতির মুখে পরিবেশ ও প্রকৃতি। দ্রুত এসব ব্যানার পোস্টার অপসারণ করে পুড়িয়ে ফেলার পরামর্শ পরিবেশবিদদের।

ঝিনাইদহ শহর ঘুরে দেখা যায়, শহরের কেন্দ্রস্থল পায়রা চত্বর, কেপি বসু সড়ক, হামদহ, আরাপপুর, বাজারপাড়া ও চুয়াডাঙ্গা বাসস্টান্ডের চারপাশে এখনও ঝুলছে শত শত পোস্টার। রশিতে টাঙানো অধিকাংশ পোস্টারগুলো পলিথিন দিয়ে লেমোনেটিং করা। ফলে এসব পোস্টার শিশিরেও ভিজে নষ্ট হচ্ছে না। নির্বাচন শেষ হওয়ায় পর এক সপ্তাহ পার হলেও এখনও অপসারণ করা হয়নি পোস্টারগুলো। কেপি বসু সড়কে দেখা গেছে, কাপড়ের দোকানগুলোর একেবারেই সামনে ঝুলছে হাজার হাজার পোস্টার। শুধু জেলা শহরেই এ দৃশ্য নয়, জেলার চারটি সংসদীয় আসনের ৬ উপজেলায় ২৬ জন প্রার্থীর অন্তত ১০ লাখ পোস্টার বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। অথচ নির্বাচন শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্ব স্ব প্রার্থীর পোস্টার অপসারণ করার নিয়ম রয়েছে।

শহরের ব্যবসায়ী শাহিন বলেন, নির্বাচন শেষ হয়েছে ৭ জানুয়ারি। কিন্তু এখনও ব্যানার-পোস্টার অপসারণ করা হয়নি। শহরজুড়ে হাজার হাজার পোস্টার ঝুলানো রয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষ বা কোনো প্রার্থী তাদের পোস্টার অপসারণ করেনি। এতে শহরের সৌন্দর্য্য নষ্ট হচ্ছে।

নজরুল ইসলাম নামে এক দোকানদার বলেন, যেভাবে এবার পোস্টার পলিথিন দিয়ে লেমোনেটিং করা হয়েছে, তাতে সহজে সেগুলো নষ্ট হচ্ছে না। দ্রুত এসব অপসারণ করে পুড়িয়ে ফেলা উচিত বলে তিনি মনে করেন। ঝিনাইদহ জীব বৈচিত্র্য ও পরিবেশ সংরক্ষণ কমিটির নেতা মাসুদ আহম্মদ সনজু বলেন, ব্যানার ও পোস্টারগুলি বেশির ভাগই লেমোনেটিং করা। এগুলো পরিবেশের জন্য চরম ক্ষতিকর। এই ব্যানার পোস্টার নদীতে গেলে নদী ভরাট হবে। আর ড্রেনে পড়লে পানি প্রবাহ বন্ধ হবে। তাই দ্রুত এসব অপসারণ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পৌর মেয়র কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল বলেন, ‘আমরা ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে সকল ব্যানার-পোস্টার অপসারণ করে ডাম্পিং স্টেশনে নিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলব। কারণ এগুলো গ্রীন ঝিনাইদহ গড়ার অন্যতম অন্তরায়।’

ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুন্তাছির রহমান বলেন, নির্বাচন শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্ব স্ব প্রার্থী তাদের ব্যানার বা পোস্টার সরিয়ে ফেলবেন এমন একটা নিয়ম রয়েছে। কিন্তু আমরা খেয়াল করছি নির্বাচন শেষ হলেও ব্যানার-পোস্টার অপসারণ করা হয়নি। আর যেগুলো লেমোনেটিং করা, সেগুলো পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। দ্রুত এসব ব্যানার-পোস্টার অপসারণ করতে ঝিনাইদহের ৬টি পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।