ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়া উদ্দীন কারাগারে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪২:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৩৪ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদক:
মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। নির্বাচন পরবর্তী সংঘর্ষের ঘটনার আসামি হিসেবে গতকাল বুধবার বিকেলে মেহেরপুরের আদালতের আদেশে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। তবে জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসের নামে মামলা ও কারাগরে প্রেরণের ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।


জানা গেছে, মেহেরপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফরহাদ হোসেনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আব্দুল মান্নানের ট্রাক প্রতীকের পক্ষে ভোট করেন জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসসহ আওয়ামী লীগের একাংশ। ভোটে ফরহাদ হোসেন বিজয়ী হলে আব্দুল মান্নান পক্ষের লোকজনের ওপর সহিংসতা শুরু হয়। নেতা-কর্মীদের মারধর, বাড়িঘরে হামলা, বিলের মাছ লুটপাট ও ক্ষেতের ফসল কেটে তছরুপ করা হয়। এসব নিয়ে ৯ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তর অভিযোগ করেন পরাজিত প্রার্থী আব্দুল মান্নান। সহিংসতা বন্ধ না হলে আওয়ামী লীগের ঘরে ঘরে গৃহযুদ্ধ লেগে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।


এর আগে ৮ জানুয়ারি রাতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফরহাদ হোসেনের নেতা-কর্মীরা মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস গ্রামে বিজয় মিছিল করেন। মিছিলটি মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসের বাড়ির সামনে যায়। সেখানে জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসের এক কর্মীকে চড় থাপ্পড় দেয় নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ লেগে যায়। এতে উভয় পক্ষের ১৮ জন আহত হয়। রাতেই তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় নৌকা প্রতীকের সমর্থক আনন্দবাস গ্রামের আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে মুজিবনগর থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলায় জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসকে প্রধান আসামি করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নান পক্ষের ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩০/৪০ জনকে আসামি করা হয়। মামলা পর তিনজনকে গ্রেপ্তার করে গত মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করে মুজিবনগর থানা-পুলিশ।


এদিকে, গতকাল জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসসহ ১৬ আসামি আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন। একইসাথে জামিন আবেদন করা হয় গত মঙ্গলবার গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনের। আদালত আসামি পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে জিয়া উদ্দীন বিশ্বাস ও হাজতবাসে থাকা মামুনের জামিন নামঞ্জুর করেন। বাকি আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।


মুজিবনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুল আলিম বলেন, দুজনের জামিন নামঞ্জুর এবং কয়েকজনের জামিনের বিষয়টি আমি শুনেছি। আসামি পক্ষের আইনজীবী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মিয়াজান আলী জামিন মঞ্জুর ও নামঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় আমাদের পক্ষের বেশ কয়েকজন গুরুতর জখম আছে। মুজিবনগর থানায় মামলা দায়েরের জন্য অভিযোগ দেওয়া হলেও পুলিশ তা রেকর্ড করছে না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়া উদ্দীন কারাগারে

আপলোড টাইম : ০৮:৪২:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৪

সমীকরণ প্রতিবেদক:
মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। নির্বাচন পরবর্তী সংঘর্ষের ঘটনার আসামি হিসেবে গতকাল বুধবার বিকেলে মেহেরপুরের আদালতের আদেশে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। তবে জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসের নামে মামলা ও কারাগরে প্রেরণের ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।


জানা গেছে, মেহেরপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফরহাদ হোসেনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আব্দুল মান্নানের ট্রাক প্রতীকের পক্ষে ভোট করেন জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসসহ আওয়ামী লীগের একাংশ। ভোটে ফরহাদ হোসেন বিজয়ী হলে আব্দুল মান্নান পক্ষের লোকজনের ওপর সহিংসতা শুরু হয়। নেতা-কর্মীদের মারধর, বাড়িঘরে হামলা, বিলের মাছ লুটপাট ও ক্ষেতের ফসল কেটে তছরুপ করা হয়। এসব নিয়ে ৯ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তর অভিযোগ করেন পরাজিত প্রার্থী আব্দুল মান্নান। সহিংসতা বন্ধ না হলে আওয়ামী লীগের ঘরে ঘরে গৃহযুদ্ধ লেগে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।


এর আগে ৮ জানুয়ারি রাতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফরহাদ হোসেনের নেতা-কর্মীরা মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস গ্রামে বিজয় মিছিল করেন। মিছিলটি মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসের বাড়ির সামনে যায়। সেখানে জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসের এক কর্মীকে চড় থাপ্পড় দেয় নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ লেগে যায়। এতে উভয় পক্ষের ১৮ জন আহত হয়। রাতেই তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় নৌকা প্রতীকের সমর্থক আনন্দবাস গ্রামের আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে মুজিবনগর থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলায় জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসকে প্রধান আসামি করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নান পক্ষের ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩০/৪০ জনকে আসামি করা হয়। মামলা পর তিনজনকে গ্রেপ্তার করে গত মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করে মুজিবনগর থানা-পুলিশ।


এদিকে, গতকাল জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসসহ ১৬ আসামি আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন। একইসাথে জামিন আবেদন করা হয় গত মঙ্গলবার গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনের। আদালত আসামি পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে জিয়া উদ্দীন বিশ্বাস ও হাজতবাসে থাকা মামুনের জামিন নামঞ্জুর করেন। বাকি আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।


মুজিবনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুল আলিম বলেন, দুজনের জামিন নামঞ্জুর এবং কয়েকজনের জামিনের বিষয়টি আমি শুনেছি। আসামি পক্ষের আইনজীবী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মিয়াজান আলী জামিন মঞ্জুর ও নামঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় আমাদের পক্ষের বেশ কয়েকজন গুরুতর জখম আছে। মুজিবনগর থানায় মামলা দায়েরের জন্য অভিযোগ দেওয়া হলেও পুলিশ তা রেকর্ড করছে না।