ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গায় গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, স্বামী আটক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১৫:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৩২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় খাদিজা খাতুন (২৫) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার কলেজপাড়ায় একটি ভাড়া বাসা থেকে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের দাবি, গৃহবধূর স্বামী তাকে নির্যাতন করে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী আলম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। নিহত খাদিজা খাতুন আলমডাঙ্গার হারদী ইউনিয়নের কৃষি-ক্লাব পাড়ার ভিকু মিয়ার মেয়ে এবং একই উপজেলার কালিদাসপুর ইউনিয়নের মোনাকষা গ্রামের স্বামী আলম হোসেনের স্ত্রী।

জানা গেছে, গতকাল সকালে খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানার এক দল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে খাদিজা খাতুনের লাশ উদ্ধার করে। এসময় ওই গৃহবধূর পিতার পরিবারের সাথে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে। আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ গনি মিয়া অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।

যে বাড়িতে লাশটি পাওয়া গেছে, ওই বাড়ির মালিক মানোয়ার হোসেন বলেন, ‘খাদিজা তার স্বামীর সঙ্গে পৌর এলাকার কলেজপাড়ায় আমার এই বাড়িতে গত তিন মাস যাবৎ ভাড়ায় বসবাস করতেন। প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি লেগে থাকত। আজ ভোরে নিহতের স্বামী আলম আমাদের জানান তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে।’

স্থানীয়রা জানান, এক বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেন খাদিজা ও আলম। এটা দুজনেরই তৃতীয় বিয়ে। বিয়ের পর খাদিজা তার স্বামীর সঙ্গে পৌর এলাকার কলেজপাড়ার একটি ভাড়া থাকতেন। নিহত খাদিজার ভাই আব্দুস সামাদ অভিযোগ করে বলেন, এর আগেও আলম ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুকের জন্য তার বোনকে নির্যাতন করেছিল। এমন ঘটনার পর গত দুই মাস ধরে আলমডাঙ্গা কলেজপাড়ায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে দুজনে বসবাস করত। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বোনকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে।

নিহতের মা আশুরা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। এক বছর আগে আলমের সঙ্গে বিবাহ হয় খাদিজার। বিয়ের পর থেকে ছোটখাটো বিষয়ে মেয়েকে মারধর করতো স্বামী আলম ও তার পরিবারের সদস্যরা। আজ রাতে তাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখেছে তারা। আমি বিচার চাই।’

আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ গনি মিয়া বলেন, সকালে খবর পেয়ে নিহতের মরদেহ ঘরের মেঝে থেকে উদ্ধার করি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। নিহতের স্বামী নিজেই ঝুলন্ত মরদেহ নিচে নামিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। নিহতের পরিবারের দাবি এটা আত্মহত্যা না, তাকে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে। সন্দেহজনকভাবে নিহতের স্বামীকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

আলমডাঙ্গায় গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, স্বামী আটক

আপলোড টাইম : ১০:১৫:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় খাদিজা খাতুন (২৫) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার কলেজপাড়ায় একটি ভাড়া বাসা থেকে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের দাবি, গৃহবধূর স্বামী তাকে নির্যাতন করে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী আলম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। নিহত খাদিজা খাতুন আলমডাঙ্গার হারদী ইউনিয়নের কৃষি-ক্লাব পাড়ার ভিকু মিয়ার মেয়ে এবং একই উপজেলার কালিদাসপুর ইউনিয়নের মোনাকষা গ্রামের স্বামী আলম হোসেনের স্ত্রী।

জানা গেছে, গতকাল সকালে খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানার এক দল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে খাদিজা খাতুনের লাশ উদ্ধার করে। এসময় ওই গৃহবধূর পিতার পরিবারের সাথে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে। আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ গনি মিয়া অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।

যে বাড়িতে লাশটি পাওয়া গেছে, ওই বাড়ির মালিক মানোয়ার হোসেন বলেন, ‘খাদিজা তার স্বামীর সঙ্গে পৌর এলাকার কলেজপাড়ায় আমার এই বাড়িতে গত তিন মাস যাবৎ ভাড়ায় বসবাস করতেন। প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি লেগে থাকত। আজ ভোরে নিহতের স্বামী আলম আমাদের জানান তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে।’

স্থানীয়রা জানান, এক বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেন খাদিজা ও আলম। এটা দুজনেরই তৃতীয় বিয়ে। বিয়ের পর খাদিজা তার স্বামীর সঙ্গে পৌর এলাকার কলেজপাড়ার একটি ভাড়া থাকতেন। নিহত খাদিজার ভাই আব্দুস সামাদ অভিযোগ করে বলেন, এর আগেও আলম ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুকের জন্য তার বোনকে নির্যাতন করেছিল। এমন ঘটনার পর গত দুই মাস ধরে আলমডাঙ্গা কলেজপাড়ায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে দুজনে বসবাস করত। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বোনকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে।

নিহতের মা আশুরা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। এক বছর আগে আলমের সঙ্গে বিবাহ হয় খাদিজার। বিয়ের পর থেকে ছোটখাটো বিষয়ে মেয়েকে মারধর করতো স্বামী আলম ও তার পরিবারের সদস্যরা। আজ রাতে তাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখেছে তারা। আমি বিচার চাই।’

আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ গনি মিয়া বলেন, সকালে খবর পেয়ে নিহতের মরদেহ ঘরের মেঝে থেকে উদ্ধার করি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। নিহতের স্বামী নিজেই ঝুলন্ত মরদেহ নিচে নামিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। নিহতের পরিবারের দাবি এটা আত্মহত্যা না, তাকে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে। সন্দেহজনকভাবে নিহতের স্বামীকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।