ইপেপার । আজ শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহের সড়ক-মহাসড়কে তরুণদের মৃত্যুর পাল্লা ভারি হচ্ছে

গতির কাছে হার মানছে জীবন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:২৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৩৩ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহে অল্প বয়সী তরুণদের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পাল্লা দিনকে দিন ভারি হচ্ছে। বিশ^বিদ্যালয়, কলেজ এমনকি স্কুলের ছাত্রদের আবদার পূরণ করতে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে নতুন নতুন ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল। আর এসব দ্রুতগতির মোটরসাইকেলের তীব্র গতির কাছে হেরে যাচ্ছে তরুণ বয়সীরা। অহরহ সড়কে মারা যাচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। এমন একজন সুদর্শন কলেজ ছাত্র তামিম প্রধান। ঝিনাইদহ সিটি কলেজে অনার্স থার্ড ইয়ারের ছাত্র তামিম প্রধান হলিধানী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউনুস প্রধানের ছেলে। তিনি মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে কোমায় রয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তামিম ও তার বন্ধু মারুফ মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। দ্রুতগতির কারণে তাদের মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নগরবাথান বাজার নামক স্থানে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে গুরুতর আহত হন তামিম ও মারুফ। তামিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে ঠিকমতো চিকিৎসা না পেয়ে গতকাল শনিবার বিকেলে স্কয়ার হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ক্ষণে ক্ষণে তার মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় পৌঁছালেও এখনো তার দেহে প্রাণ আছে বলে প্রতিবেশী শাহনেওয়াজ সুমন জানান।

এদিকে, ঝিনাইদহের বিভিন্ন সড়কে অল্পবয়সী তরুণদের মোটরসাইকেল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের না আছে ড্রাইভিং লাইসেন্স, না আছে মোটরবাইকের কাগজপত্র। বিকেল হলে এবং কলেজ টাইমে সড়ক-মহাসড়কে দ্রুতগতিতে ছুটে চলছে তারা। সম্প্রতি ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন সড়কে এমন অন্তত ৭ জন তরুণ নিহত হয়েছেন।
হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে, গত বুধবার শৈলকুপার বড়দাহ নামক স্থানে রণি নামে এক তরুণ দ্রুতগতিতে চলার সময় নিহত হন। সদর উপজেলার চুটলিয়া মোড়ে সুমন, ভাটই বাজারে মাহিন, কোদালিয়া গ্রামে কলেজছাত্র মিজানুরসহ একাধিক যুবক ও কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে আব্দুল ওহাব নামে এক অভিভাবক জানান, কলেজ বা ভার্সিটিতে উঠলেই ছেলেরা বায়না ধরে। নাওয়া-খাওয়া বন্ধ করে এমনকি আত্মহত্যারও হুমকি দেয়। তখন বাধ্য হয়ে ছেলের বায়না পূরণ করতে মোটরসাইকেল কিনে দিচ্ছে অসহায় পিতারা। ফলে মোটরসাইকেলের গতির কাছে জীবন প্রদীপ নিভে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে একজন পিতার স্বপ্নসাধ ধুলিষ্যাৎ হয়ে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ হাইওয়ে থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, ‘অনেক সময় আমরা তরুণদের হেলমেট ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া রাস্তায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণে রেখে চালানোর কথাও বলছি। কিন্তু তারা কিছুই মানে না। যে কারণে সড়কে অল্প বয়সী তরুণদের মৃত্যু হচ্ছে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ঝিনাইদহের সড়ক-মহাসড়কে তরুণদের মৃত্যুর পাল্লা ভারি হচ্ছে

গতির কাছে হার মানছে জীবন

আপলোড টাইম : ১১:২৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহে অল্প বয়সী তরুণদের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পাল্লা দিনকে দিন ভারি হচ্ছে। বিশ^বিদ্যালয়, কলেজ এমনকি স্কুলের ছাত্রদের আবদার পূরণ করতে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে নতুন নতুন ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল। আর এসব দ্রুতগতির মোটরসাইকেলের তীব্র গতির কাছে হেরে যাচ্ছে তরুণ বয়সীরা। অহরহ সড়কে মারা যাচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। এমন একজন সুদর্শন কলেজ ছাত্র তামিম প্রধান। ঝিনাইদহ সিটি কলেজে অনার্স থার্ড ইয়ারের ছাত্র তামিম প্রধান হলিধানী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউনুস প্রধানের ছেলে। তিনি মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে কোমায় রয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তামিম ও তার বন্ধু মারুফ মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। দ্রুতগতির কারণে তাদের মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নগরবাথান বাজার নামক স্থানে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে গুরুতর আহত হন তামিম ও মারুফ। তামিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে ঠিকমতো চিকিৎসা না পেয়ে গতকাল শনিবার বিকেলে স্কয়ার হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ক্ষণে ক্ষণে তার মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় পৌঁছালেও এখনো তার দেহে প্রাণ আছে বলে প্রতিবেশী শাহনেওয়াজ সুমন জানান।

এদিকে, ঝিনাইদহের বিভিন্ন সড়কে অল্পবয়সী তরুণদের মোটরসাইকেল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের না আছে ড্রাইভিং লাইসেন্স, না আছে মোটরবাইকের কাগজপত্র। বিকেল হলে এবং কলেজ টাইমে সড়ক-মহাসড়কে দ্রুতগতিতে ছুটে চলছে তারা। সম্প্রতি ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন সড়কে এমন অন্তত ৭ জন তরুণ নিহত হয়েছেন।
হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে, গত বুধবার শৈলকুপার বড়দাহ নামক স্থানে রণি নামে এক তরুণ দ্রুতগতিতে চলার সময় নিহত হন। সদর উপজেলার চুটলিয়া মোড়ে সুমন, ভাটই বাজারে মাহিন, কোদালিয়া গ্রামে কলেজছাত্র মিজানুরসহ একাধিক যুবক ও কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে আব্দুল ওহাব নামে এক অভিভাবক জানান, কলেজ বা ভার্সিটিতে উঠলেই ছেলেরা বায়না ধরে। নাওয়া-খাওয়া বন্ধ করে এমনকি আত্মহত্যারও হুমকি দেয়। তখন বাধ্য হয়ে ছেলের বায়না পূরণ করতে মোটরসাইকেল কিনে দিচ্ছে অসহায় পিতারা। ফলে মোটরসাইকেলের গতির কাছে জীবন প্রদীপ নিভে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে একজন পিতার স্বপ্নসাধ ধুলিষ্যাৎ হয়ে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ হাইওয়ে থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, ‘অনেক সময় আমরা তরুণদের হেলমেট ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া রাস্তায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণে রেখে চালানোর কথাও বলছি। কিন্তু তারা কিছুই মানে না। যে কারণে সড়কে অল্প বয়সী তরুণদের মৃত্যু হচ্ছে।’