ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাদ্রাসার ছাদে হাত-পা, মুখ বাঁধা অবস্থায় পড়েছিল ছাত্র

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১৭:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৪২ বার পড়া হয়েছে

গাংনী অফিস:
১৪ বয়সী কিশোরকে দেওয়া হয় ১০ হাজার টাকার প্রস্তাব। প্রস্তাব অনুসারে সাত বছরী এক শিশুকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে রাখা হয় মাদ্রাসার ছাদে। মৃত্যুর মুখে পড়ে ওই ছাত্র বাঁচার আকুতি জানাতে থাকে। ছাদে কয়েক ঘণ্টা গড়াগড়ির পর টের পান প্রতিবেশী কয়েকজন মহিলা। তারা ওই শিশুকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করলেও মৃত্যু ভয় কাটছে না ওই শিশুর মন থেকে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার টেঙ্গামারী গ্রামে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনার সাথে জড়িত কয়েক ছাত্রকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, টেঙ্গামারী মাদ্রাসায় হেফজখানায় লেখাপড়া করে ছাত্ররা। সেখানে তারা রাত্রীযাপন করে একসাথে। গত বুধবার রাতে মাদ্রাসাছাত্র সাব্বির হোসেন তোতাকে (১৪) অজ্ঞাত এক ব্যক্তি টাকার লোভ দেখায়। ওই মাদ্রাসার শিশু ছাত্র ওয়ালিদ হাসানকে (৭) হাত-পা ও মুখ বেঁধে মাদ্রাসার ছাদে ফেলে রাখার প্রস্তাব দেয় ওই ব্যক্তি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফেলে রাখতে পারলে দেওয়া হবে ১০ হাজার টাকা। অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি প্রস্তাব দিয়ে তোতার হাতে ১ শ টাকা ধরিয়ে দিয়ে স্কচটেপ কিনতে বলে চলে যায়।

সাবির হোসেন তোতা স্বীকার করে জানায়, ওই ব্যক্তির দেওয়া ১০০ টাকা দিয়ে সে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে স্কচটেপ কেনে। ছাত্র ও শিক্ষকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে যায় ওয়ালিদ হাসানকে। আরেকজন ছাত্রের সাহায্য নিয়ে কৌশলে ওয়ালিদের দুই হাত-পা বাঁধা হয়। মুখে স্কচটেপ দিয়ে আটকে ছাদে ফেলে রেখে তারা সটকে পড়ে।

এদিকে এ ঘটনায় মাদ্রাসা ও এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি কোন স্বার্থে কীসের জন্য শিশু-কিশোর ছাত্রদের এমন প্রাণঘাতি প্রস্তাব দিয়েছে, সে প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিয়ে বেশ বিব্রত।

এ বিষয়ে মাদ্রাসা সুপার ফিরোজুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ পাঁচ বছর প্রতিষ্ঠানটি সুনামের সাথে চলছে। এ ঘটনায় তারা খুবই মর্মাহত। যে ব্যক্তি এমন জঘন্য প্রস্তাব দিয়ে ছাত্রদের বিপথে নামিয়েছে, তাকে খুঁজে বের করে শাস্তি দাবি করেন ওই শিক্ষক।

এদিকে খবর পেয়ে গতকাল রাতে মাদ্রাসায় যায় গাংনী থানা-পুলিশের একটি দল। ঘটনার সত্যতা যাচাই ও দুস্কৃতিকারীকে খুঁজে বের করার জন্য মাদ্রাসার দুই ছাত্রকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন গাংনী থানার ওসি। তিনি বলেন, ঘটনার রহস্য উন্মোচনে কাজ করছে পুলিশ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

মাদ্রাসার ছাদে হাত-পা, মুখ বাঁধা অবস্থায় পড়েছিল ছাত্র

আপলোড টাইম : ১০:১৭:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩

গাংনী অফিস:
১৪ বয়সী কিশোরকে দেওয়া হয় ১০ হাজার টাকার প্রস্তাব। প্রস্তাব অনুসারে সাত বছরী এক শিশুকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে রাখা হয় মাদ্রাসার ছাদে। মৃত্যুর মুখে পড়ে ওই ছাত্র বাঁচার আকুতি জানাতে থাকে। ছাদে কয়েক ঘণ্টা গড়াগড়ির পর টের পান প্রতিবেশী কয়েকজন মহিলা। তারা ওই শিশুকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করলেও মৃত্যু ভয় কাটছে না ওই শিশুর মন থেকে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার টেঙ্গামারী গ্রামে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনার সাথে জড়িত কয়েক ছাত্রকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, টেঙ্গামারী মাদ্রাসায় হেফজখানায় লেখাপড়া করে ছাত্ররা। সেখানে তারা রাত্রীযাপন করে একসাথে। গত বুধবার রাতে মাদ্রাসাছাত্র সাব্বির হোসেন তোতাকে (১৪) অজ্ঞাত এক ব্যক্তি টাকার লোভ দেখায়। ওই মাদ্রাসার শিশু ছাত্র ওয়ালিদ হাসানকে (৭) হাত-পা ও মুখ বেঁধে মাদ্রাসার ছাদে ফেলে রাখার প্রস্তাব দেয় ওই ব্যক্তি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফেলে রাখতে পারলে দেওয়া হবে ১০ হাজার টাকা। অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি প্রস্তাব দিয়ে তোতার হাতে ১ শ টাকা ধরিয়ে দিয়ে স্কচটেপ কিনতে বলে চলে যায়।

সাবির হোসেন তোতা স্বীকার করে জানায়, ওই ব্যক্তির দেওয়া ১০০ টাকা দিয়ে সে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে স্কচটেপ কেনে। ছাত্র ও শিক্ষকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে যায় ওয়ালিদ হাসানকে। আরেকজন ছাত্রের সাহায্য নিয়ে কৌশলে ওয়ালিদের দুই হাত-পা বাঁধা হয়। মুখে স্কচটেপ দিয়ে আটকে ছাদে ফেলে রেখে তারা সটকে পড়ে।

এদিকে এ ঘটনায় মাদ্রাসা ও এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি কোন স্বার্থে কীসের জন্য শিশু-কিশোর ছাত্রদের এমন প্রাণঘাতি প্রস্তাব দিয়েছে, সে প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিয়ে বেশ বিব্রত।

এ বিষয়ে মাদ্রাসা সুপার ফিরোজুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ পাঁচ বছর প্রতিষ্ঠানটি সুনামের সাথে চলছে। এ ঘটনায় তারা খুবই মর্মাহত। যে ব্যক্তি এমন জঘন্য প্রস্তাব দিয়ে ছাত্রদের বিপথে নামিয়েছে, তাকে খুঁজে বের করে শাস্তি দাবি করেন ওই শিক্ষক।

এদিকে খবর পেয়ে গতকাল রাতে মাদ্রাসায় যায় গাংনী থানা-পুলিশের একটি দল। ঘটনার সত্যতা যাচাই ও দুস্কৃতিকারীকে খুঁজে বের করার জন্য মাদ্রাসার দুই ছাত্রকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন গাংনী থানার ওসি। তিনি বলেন, ঘটনার রহস্য উন্মোচনে কাজ করছে পুলিশ।