ইপেপার । আজ শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রস সংগ্রহে খেজুর গাছ কাটায় ব্যস্ত মহেশপুরের গাছিরা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৩:৩৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৫৭ বার পড়া হয়েছে

মহেশপুর থেকে আব্দুর রহিমের প্রতিবেদন:
দেশের ঋতু বৈচিত্রে ঝিনাইদহের মহেশপুরে এখন রাতের শেষে কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। মহেশপুর উপজেলার প্রতিটি গ্রামে গ্রামে খেজুর রস সংগ্রহে গাছ কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। এরই মধ্যে সীমান্তবর্তী এই উপজেলার প্রান্তিক জনপদের গ্রামে গ্রামে সকালের শিশিরের সঙ্গে অনুভূত হচ্ছে মৃদু শীত। গাছ পরিচর্যার পালা শেষে মাত্র কয়েক দিন পর থেকেই রস সংগ্রহ ও নলি গুড় তৈরির পর্ব শুরু হবে। যা চলবে প্রায় মাঘ মাস পর্যন্ত।

জানা গেছে, খেজুর রস ও গুড়ের জন্য এক সময় খ্যাতি ছিল সীমান্তবর্তী এই উপজেলার। সুঘ্রান নলের গুড় উপজেলার নির্দিষ্ট কয়েকটি গ্রাম ছাড়া পাওয়া যায় না। তা আবার চাহিদা তুলনায় অত্যন্ত কম। এর পরেও যে রস, গুড় ও পাটালী তৈরি হয় তা দিয়ে শীত মৌসুমে রীতিমত কাড়াকাড়ি শুরু হয়। সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গুড়। কয়েক বছর পূর্বেও এ অঞ্চলের বিভিন্ন ক্ষেতের আইলে, রাস্তার দুই ধারে ও ঝোপ-ঝাড়ে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ। কোন পরিচর্যা ছাড়াই অনেকটা প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠতো এসব খেজুর গাছ। প্রতিটি পরিবারের চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত রস দিয়ে তৈরি করা হতো সুস্বাদু খেজুর গুড়। কিন্তুু মানুষের সচেতনতা ও রক্ষনা-বেক্ষনের অভাবে পরিবেশ বান্ধব খেজুর গাছ এখন আর চোখে পড়ে না। অপরদিকে ইট ভাটার রাহু গ্রাসে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার বেশি হওয়ার কারণে যে পরিমান গাছ চোখে পড়ে তা নির্বিচারে নিধন করায় দিনদিন খেজুর গাছ কমছেই। জলবায়ু পরিবর্তন, বন বিভাগের নজরদারী না থাকায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ এখন বিলুপ্তির পথে।

উপজেলার গোপালপুর গ্রামের গাছি মনির উদ্দীন ও ফরজ আলী বলেন, এবছর একটু আগে ভাগেই গাছ ঝোড়া (রস সংগ্রহের পূর্বে পরিচর্যা) শুরু করেছি। কয়েক দিনের মধ্যেই রস সংগ্রহের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। তারা আরও বলেন ভাটার কারণে অনেক খেজুর গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এখন তেমন একটা বেশি খেজুর গাছ না থাকায় গাছিরাও খেজুর রস সংগ্রহের জন্য তেমন আগ্রহ দেখান না।

এ ব্যাপারে মহেশপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আসাদুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। গাছিদের খেজুর গাছ কাটার কাজটি শিল্প আর দক্ষতায় ভরা। ডাল কেটে গাছের শুভ্র বক বের করার মধ্যে রয়েছে কৌশল, রয়েছে ধৈর্য আর অপেক্ষার পালা। এ জন্য শীত মৌসুম আসার সাথে সাথে গাছিদের কদর বেড়ে যায়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

রস সংগ্রহে খেজুর গাছ কাটায় ব্যস্ত মহেশপুরের গাছিরা

আপলোড টাইম : ০৩:৩৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৩

মহেশপুর থেকে আব্দুর রহিমের প্রতিবেদন:
দেশের ঋতু বৈচিত্রে ঝিনাইদহের মহেশপুরে এখন রাতের শেষে কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। মহেশপুর উপজেলার প্রতিটি গ্রামে গ্রামে খেজুর রস সংগ্রহে গাছ কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। এরই মধ্যে সীমান্তবর্তী এই উপজেলার প্রান্তিক জনপদের গ্রামে গ্রামে সকালের শিশিরের সঙ্গে অনুভূত হচ্ছে মৃদু শীত। গাছ পরিচর্যার পালা শেষে মাত্র কয়েক দিন পর থেকেই রস সংগ্রহ ও নলি গুড় তৈরির পর্ব শুরু হবে। যা চলবে প্রায় মাঘ মাস পর্যন্ত।

জানা গেছে, খেজুর রস ও গুড়ের জন্য এক সময় খ্যাতি ছিল সীমান্তবর্তী এই উপজেলার। সুঘ্রান নলের গুড় উপজেলার নির্দিষ্ট কয়েকটি গ্রাম ছাড়া পাওয়া যায় না। তা আবার চাহিদা তুলনায় অত্যন্ত কম। এর পরেও যে রস, গুড় ও পাটালী তৈরি হয় তা দিয়ে শীত মৌসুমে রীতিমত কাড়াকাড়ি শুরু হয়। সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গুড়। কয়েক বছর পূর্বেও এ অঞ্চলের বিভিন্ন ক্ষেতের আইলে, রাস্তার দুই ধারে ও ঝোপ-ঝাড়ে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ। কোন পরিচর্যা ছাড়াই অনেকটা প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠতো এসব খেজুর গাছ। প্রতিটি পরিবারের চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত রস দিয়ে তৈরি করা হতো সুস্বাদু খেজুর গুড়। কিন্তুু মানুষের সচেতনতা ও রক্ষনা-বেক্ষনের অভাবে পরিবেশ বান্ধব খেজুর গাছ এখন আর চোখে পড়ে না। অপরদিকে ইট ভাটার রাহু গ্রাসে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার বেশি হওয়ার কারণে যে পরিমান গাছ চোখে পড়ে তা নির্বিচারে নিধন করায় দিনদিন খেজুর গাছ কমছেই। জলবায়ু পরিবর্তন, বন বিভাগের নজরদারী না থাকায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ এখন বিলুপ্তির পথে।

উপজেলার গোপালপুর গ্রামের গাছি মনির উদ্দীন ও ফরজ আলী বলেন, এবছর একটু আগে ভাগেই গাছ ঝোড়া (রস সংগ্রহের পূর্বে পরিচর্যা) শুরু করেছি। কয়েক দিনের মধ্যেই রস সংগ্রহের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। তারা আরও বলেন ভাটার কারণে অনেক খেজুর গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এখন তেমন একটা বেশি খেজুর গাছ না থাকায় গাছিরাও খেজুর রস সংগ্রহের জন্য তেমন আগ্রহ দেখান না।

এ ব্যাপারে মহেশপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আসাদুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। গাছিদের খেজুর গাছ কাটার কাজটি শিল্প আর দক্ষতায় ভরা। ডাল কেটে গাছের শুভ্র বক বের করার মধ্যে রয়েছে কৌশল, রয়েছে ধৈর্য আর অপেক্ষার পালা। এ জন্য শীত মৌসুম আসার সাথে সাথে গাছিদের কদর বেড়ে যায়।