ইপেপার । আজ শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে ২৪ রাজাকার এখনো মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় ভাতা পাচ্ছেন!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই ২০২৩
  • / ২৯ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহের বিভিন্ন উপজেলায় ২৪ জন রাজাকার মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম লিখিয়ে নিয়মিত ভাতা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ডা. মেহের আলী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের দপ্তরে গিয়ে লিখিতভাবে এই অভিযোগ করেন। মন্ত্রীর দপ্তরে অভিযোগ করার ৯ বছর পার হলেও এর কোনো সুরাহা হয়নি। রাজাকাররা সরকারি ভাতা উত্তোলন করে আয়েশি জীবন-যাপন করছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মেহের আলী লিখিত অভিযোগের বিষয়ে গতকাল বুধবার বিকেলে বলেন, ২০১৪ সালের ২২ নভেম্বর তিনি ঝিনাইদহের ৬ উপজেলার ২৪ জন রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে ভাতা প্রদানের অভিযোগ করেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ওই বছরের ২৬ নভেম্বর বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের। কিন্তু ৯ বছরেও এই অভিযোগের সুরাহা করতে পারেনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। অভিযোগটি গুরুতর হওয়ায় তিন মাস আগে তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে গিয়ে অভিযোগটি আবারও জমা দেন। মন্ত্রী ‘ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ বলে তাকে আশ^াস করেন।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, একটি অশুভ মহল রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম লিখিয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের কপালে কলঙ্কের তিলক লেপন করেছে। যারা এই তালিকায় যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে তিনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। তালিকায় রাজাকার ও অমুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যাদের নাম উল্লেখ আছে, তারা হলেন- ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পাঁচটিকারী দেবতলা গ্রামের আবু তালেব, একই গ্রামের আব্দুল গণি, কালুহাটি গ্রামের আবুল কাসেম, কাঞ্চননগরের মোশাররফ হোসেন, কালীকাপুরের আব্দুর রাজ্জাক, শৈলকুপার বৃত্তিদেবী রাজনগর গ্রামের ফিরোজার রহমান, একই গ্রামের ফজলে ইলাহি মানিক, হারুনদিয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তার, শিতালী গ্রামের নুরুন্নবী খান, গোয়ালপাড়ার মকবুল হোসেন, সদরের পানামী গ্রামের গুলজার উদ্দীন, কালুহাটি গ্রামের তৈয়ব আলী, রাজধারপুর গ্রামের সাবদার আলী, একই গ্রামের আব্দুল ওহাব, খোর্দ্দ ঝিনাইদহের চৌধুরী আলী, মাগুরাপাড়ার জহুরুল হক, পানামী গ্রামের মতিয়ার রহমান, ব্যাপারীপাড়া ঢাকালে পট্টির আবু বকর সিদ্দিক, আর্য্যনারায়ণপুর গ্রামের আনসার উদ্দীন, কালীগঞ্জ শহরের মুজিরুচ্ছোবাহান, বাকুলিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম, হরিণাকুণ্ডু শ্রীপুর গ্রামের হাফিজুর রহমান, মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন ও কোটচাঁদপুর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের ফজলুল হক।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মেহের আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যারা দেশ স্বাধীনে বিরোধিতা করেছে, আজ তারাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে বিভিন্ন যাচাই-বাছাইয়ের সময় রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম ওঠানো হয়েছে। মৃত্যুর আগে তিনি এই ২৪ রাজাকারের ভাতা বন্ধের দাবি জানান।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ঝিনাইদহে ২৪ রাজাকার এখনো মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় ভাতা পাচ্ছেন!

আপলোড টাইম : ০৮:৪৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই ২০২৩

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহের বিভিন্ন উপজেলায় ২৪ জন রাজাকার মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম লিখিয়ে নিয়মিত ভাতা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ডা. মেহের আলী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের দপ্তরে গিয়ে লিখিতভাবে এই অভিযোগ করেন। মন্ত্রীর দপ্তরে অভিযোগ করার ৯ বছর পার হলেও এর কোনো সুরাহা হয়নি। রাজাকাররা সরকারি ভাতা উত্তোলন করে আয়েশি জীবন-যাপন করছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মেহের আলী লিখিত অভিযোগের বিষয়ে গতকাল বুধবার বিকেলে বলেন, ২০১৪ সালের ২২ নভেম্বর তিনি ঝিনাইদহের ৬ উপজেলার ২৪ জন রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে ভাতা প্রদানের অভিযোগ করেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ওই বছরের ২৬ নভেম্বর বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের। কিন্তু ৯ বছরেও এই অভিযোগের সুরাহা করতে পারেনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। অভিযোগটি গুরুতর হওয়ায় তিন মাস আগে তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে গিয়ে অভিযোগটি আবারও জমা দেন। মন্ত্রী ‘ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ বলে তাকে আশ^াস করেন।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, একটি অশুভ মহল রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম লিখিয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের কপালে কলঙ্কের তিলক লেপন করেছে। যারা এই তালিকায় যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে তিনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। তালিকায় রাজাকার ও অমুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যাদের নাম উল্লেখ আছে, তারা হলেন- ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পাঁচটিকারী দেবতলা গ্রামের আবু তালেব, একই গ্রামের আব্দুল গণি, কালুহাটি গ্রামের আবুল কাসেম, কাঞ্চননগরের মোশাররফ হোসেন, কালীকাপুরের আব্দুর রাজ্জাক, শৈলকুপার বৃত্তিদেবী রাজনগর গ্রামের ফিরোজার রহমান, একই গ্রামের ফজলে ইলাহি মানিক, হারুনদিয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তার, শিতালী গ্রামের নুরুন্নবী খান, গোয়ালপাড়ার মকবুল হোসেন, সদরের পানামী গ্রামের গুলজার উদ্দীন, কালুহাটি গ্রামের তৈয়ব আলী, রাজধারপুর গ্রামের সাবদার আলী, একই গ্রামের আব্দুল ওহাব, খোর্দ্দ ঝিনাইদহের চৌধুরী আলী, মাগুরাপাড়ার জহুরুল হক, পানামী গ্রামের মতিয়ার রহমান, ব্যাপারীপাড়া ঢাকালে পট্টির আবু বকর সিদ্দিক, আর্য্যনারায়ণপুর গ্রামের আনসার উদ্দীন, কালীগঞ্জ শহরের মুজিরুচ্ছোবাহান, বাকুলিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম, হরিণাকুণ্ডু শ্রীপুর গ্রামের হাফিজুর রহমান, মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন ও কোটচাঁদপুর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের ফজলুল হক।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মেহের আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যারা দেশ স্বাধীনে বিরোধিতা করেছে, আজ তারাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে বিভিন্ন যাচাই-বাছাইয়ের সময় রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম ওঠানো হয়েছে। মৃত্যুর আগে তিনি এই ২৪ রাজাকারের ভাতা বন্ধের দাবি জানান।