ইপেপার । আজ শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চলাচলের রাস্তায় বাধা, বিপাকে ১০টি পরিবার

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫০:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ মে ২০২৩
  • / ২২ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, হলিধানী:

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী গ্রামের ১০টি পরিবারের একমাত্র চলাচলের রাস্তায় বাধা ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি পরিবারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দুপক্ষই আদালতে পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে হলিধানী গ্রামের মৃত নূর মোহাম্মদের ছেলে ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলাম ঝিনাইদহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত সদর কোর্টে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, হলিধানী গ্রামের অন্তত ১০টি পরিবারের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ করাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন ওই এলাকার মৃত সাদেক আলীর ছেলে আবুল কাশেম (৫৫), তাঁর স্ত্রী নাজমা খাতুন (৫০) ও তাঁদের জামাই নুরুজ্জামান (৩৮)। রফিকুল ইসলাম ২০২০ সালে আবুল কাশেমের জামাই নুরুজ্জামানের নিকট থেকে একটি জমি ক্রয় করেন। তবে চলাচলের পথ না থাকায় আবুল কাশেম তাঁর বাড়ির ৫৩০ ও ৫৩১ নম্বর দাগের জমির ভেতর দিয়ে ১০ ফুট চলাচলের রাস্তা দেওয়ার অঙ্গিকার করে ৩ শ টাকার নন জুডিশিয়াল স্টাম্পে চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন। সেখানে উল্লেখ থাকে বংশপরম্পরায় ওই ১০ ফুট রাস্তা চলাচলের জন্য আজীবন ব্যবহার করতে পারবে ওখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ। কিন্তু কিছুদিন যাবত ১০টি পরিবারের একমাত্র চলাচলের রাস্তাটি বন্ধ করাসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে নুরুজ্জামান ও তার স্বজনেরা।

এ ঘটনায় গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করে ভুক্তভোগী পরিবার। সেখানেও আবুল কাশেম রাস্তা দিতে অস্বীকার করেন। পরে তিনি উক্ত রাস্তা ১০ লাখ টাকায় ক্রয় করে নেওয়ার প্রস্তাব দেয়। পরে গত এপ্রিল মাসে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হয়ে আবুল কাশেমের বাড়িতে ১০ লাখ টাকা হস্তান্তর করেন। কথা থাকে এক মাসের মধ্যে উক্ত রাস্তার জমি রেজিস্ট্রি করে দিবে। কিন্তু এক মাস অতিবাহিত হলেও শুরু করে নানান টালবাহানা।

অপর এক ভুক্তভোগী জাকির হোসেন মিণ্টু বলেন, ‘আমাদের কাছে রাস্তা দেখিয়ে জমি বিক্রি করেন আবুল কাশেম। এখন রাস্তা দিচ্ছে না, স্টাম্পে পাকা রাস্তা থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবুল হাশেমের কবর পর্যন্ত ১০টি পরিবার চলাচলের জন্য রাস্তার ম্যাপ করে দিয়েছিল এখন অস্বীকার করছে। আমরা সঠিক বিচার চাই।’ হলিধানী গ্রামের আফিল উদ্দিন জানান, রাস্তাটি দিয়ে অনেক আগে থেকে মানুষ চলাচল করে আসছে। কোনো দিন সেটি নিয়ে সমস্যা হয়নি। কিন্তু আবুল কাশেম ও তার পরিবারের লোকজন পূর্ব শত্রুতার কারণে রাস্তাটি ঘিরে বাধা সৃষ্টি করছে।

২ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার তাইজুল ইসলাম জানান, পাকা রাস্তা থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেমের কবর পর্যন্ত চলাচলের জন্য উল্লেখ ছিল। তবে এখন অস্বীকার করছেন আবুল কাশেম। এই বিষয়টির সমাধান হওয়া উচিত। অভিযোগ অস্বীকার করে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমি চলাচলের জন্য রাস্তা দিয়েছিলাম মানবতার খাতিরে। ওরা আমাকে সাদা স্টাম্পে সই করিয়ে নিয়ে সেটি নোটারি পাবলিক করেছে। পরে জালিয়াতি করে ১০ ফুট রাস্তা দাবি করছে। তারা আমার বাড়িতে ভাঙচুরসহ আমার স্ত্রীকে মারধর করেছে। আমি থানায় এবং আদালতে মামলা করেছি। আগে রাস্তা দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু এখন এক ফুট রাস্তাও দিব না।’

এ বিষয়ে কাতলামারি পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই বনি আমিন বলেন, দু-পক্ষেই মামলা করেছে। আবুল কাশেম ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ইটের দেওয়াল নির্মাণ করছিলেন, সেটা বন্ধ করে দিয়েছি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চলাচলের রাস্তায় বাধা, বিপাকে ১০টি পরিবার

আপলোড টাইম : ০৮:৫০:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ মে ২০২৩

প্রতিবেদক, হলিধানী:

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী গ্রামের ১০টি পরিবারের একমাত্র চলাচলের রাস্তায় বাধা ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি পরিবারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দুপক্ষই আদালতে পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে হলিধানী গ্রামের মৃত নূর মোহাম্মদের ছেলে ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলাম ঝিনাইদহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত সদর কোর্টে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, হলিধানী গ্রামের অন্তত ১০টি পরিবারের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ করাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন ওই এলাকার মৃত সাদেক আলীর ছেলে আবুল কাশেম (৫৫), তাঁর স্ত্রী নাজমা খাতুন (৫০) ও তাঁদের জামাই নুরুজ্জামান (৩৮)। রফিকুল ইসলাম ২০২০ সালে আবুল কাশেমের জামাই নুরুজ্জামানের নিকট থেকে একটি জমি ক্রয় করেন। তবে চলাচলের পথ না থাকায় আবুল কাশেম তাঁর বাড়ির ৫৩০ ও ৫৩১ নম্বর দাগের জমির ভেতর দিয়ে ১০ ফুট চলাচলের রাস্তা দেওয়ার অঙ্গিকার করে ৩ শ টাকার নন জুডিশিয়াল স্টাম্পে চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন। সেখানে উল্লেখ থাকে বংশপরম্পরায় ওই ১০ ফুট রাস্তা চলাচলের জন্য আজীবন ব্যবহার করতে পারবে ওখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ। কিন্তু কিছুদিন যাবত ১০টি পরিবারের একমাত্র চলাচলের রাস্তাটি বন্ধ করাসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে নুরুজ্জামান ও তার স্বজনেরা।

এ ঘটনায় গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করে ভুক্তভোগী পরিবার। সেখানেও আবুল কাশেম রাস্তা দিতে অস্বীকার করেন। পরে তিনি উক্ত রাস্তা ১০ লাখ টাকায় ক্রয় করে নেওয়ার প্রস্তাব দেয়। পরে গত এপ্রিল মাসে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হয়ে আবুল কাশেমের বাড়িতে ১০ লাখ টাকা হস্তান্তর করেন। কথা থাকে এক মাসের মধ্যে উক্ত রাস্তার জমি রেজিস্ট্রি করে দিবে। কিন্তু এক মাস অতিবাহিত হলেও শুরু করে নানান টালবাহানা।

অপর এক ভুক্তভোগী জাকির হোসেন মিণ্টু বলেন, ‘আমাদের কাছে রাস্তা দেখিয়ে জমি বিক্রি করেন আবুল কাশেম। এখন রাস্তা দিচ্ছে না, স্টাম্পে পাকা রাস্তা থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবুল হাশেমের কবর পর্যন্ত ১০টি পরিবার চলাচলের জন্য রাস্তার ম্যাপ করে দিয়েছিল এখন অস্বীকার করছে। আমরা সঠিক বিচার চাই।’ হলিধানী গ্রামের আফিল উদ্দিন জানান, রাস্তাটি দিয়ে অনেক আগে থেকে মানুষ চলাচল করে আসছে। কোনো দিন সেটি নিয়ে সমস্যা হয়নি। কিন্তু আবুল কাশেম ও তার পরিবারের লোকজন পূর্ব শত্রুতার কারণে রাস্তাটি ঘিরে বাধা সৃষ্টি করছে।

২ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার তাইজুল ইসলাম জানান, পাকা রাস্তা থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেমের কবর পর্যন্ত চলাচলের জন্য উল্লেখ ছিল। তবে এখন অস্বীকার করছেন আবুল কাশেম। এই বিষয়টির সমাধান হওয়া উচিত। অভিযোগ অস্বীকার করে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমি চলাচলের জন্য রাস্তা দিয়েছিলাম মানবতার খাতিরে। ওরা আমাকে সাদা স্টাম্পে সই করিয়ে নিয়ে সেটি নোটারি পাবলিক করেছে। পরে জালিয়াতি করে ১০ ফুট রাস্তা দাবি করছে। তারা আমার বাড়িতে ভাঙচুরসহ আমার স্ত্রীকে মারধর করেছে। আমি থানায় এবং আদালতে মামলা করেছি। আগে রাস্তা দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু এখন এক ফুট রাস্তাও দিব না।’

এ বিষয়ে কাতলামারি পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই বনি আমিন বলেন, দু-পক্ষেই মামলা করেছে। আবুল কাশেম ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ইটের দেওয়াল নির্মাণ করছিলেন, সেটা বন্ধ করে দিয়েছি।