ইপেপার । আজ শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৫৮ বছর আগে নির্মিত ঝিনাইদহ পাউবোর দুই শতাধিক ব্রিজের ভগ্নদশা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:৪১:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩
  • / ১৫ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেল ও খালের প্রায় দুই শতাধিক ব্রিজ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নির্মাণের পর আর কখনও সংস্কার না করায় এখন ব্রিজগুলো মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। বেহাল ও ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজগুলো দিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হতে হচ্ছে ছোট-বড় যানবাহন, স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকদের। এতে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। দ্রুত এসব ব্রিজ সংস্কারের দাবি করছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার বেলতলা, হরিশপুর, কালাপাহাড়ীয়া, শ্রীপুর, ধুলিয়া, রামনগর, কুলবাড়ীয়া, সাতব্রিজ আন্দুলিয়া, পোলতাডাঙ্গা, চটকাবাড়ীয়া, পার্বতীপুর ও শুড়া গ্রামসহ অনেক এলাকায় ব্রিজ ভেঙে গেছে প্রায় ১৫ বছর আগে। স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকেরা কাঠ ও বাঁশ দিয়ে মেরামত করে কোনো মতে চলাচল করে ব্রিজগুলো দিয়ে। তবে মাঠ থেকে ফসল আনতে হলে ঘুরতে হয় প্রায় ৫ কিলোমিটার পথ। জোড়াদহ, ফসলি, রঘুথানপুর তাহেরহুদা ইউনিয়নের হাজারো মানুষ এদিক দিয়ে চলাচল করলেও ব্রিজটি সংস্কারে নেই কোনো উদ্যোগ। পাশের ফুলবাড়িয়া গ্রামের ব্রিজটি ভেঙেছে দেড় বছর আগে। ব্রিজের মাঝখানে বড় ছিদ্র হওয়ায় পারাপার হচ্ছে না বড় কোনো যানবাহন। কোনো মতে ভ্যান, মোটরসাইকেল পার হলেও প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা

হরিণাকুণ্ডুর মতো পার্শ্ববর্তী উপজেলা শৈলকুপা ও সদরের অধিকাংশ ব্রিজের একই দশা। ব্রিজগুলো ভেঙে যাওয়ায় স্থানীয়দের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত এগুলো সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

বেলতলা গ্রামের মোহাম্মাদ আলী জানান, ‘এই ব্রিজটি ১৪ থেকে ১৫ বছর ধরে ভেঙে পড়ে আছে। এটা মেরামতের জন্য কেউ তদারকি করে না। মাঝে মধ্যে কিছু লোকজন এসে আমাদের আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না। এ ব্রিজটির কারণে আমাদের এলাকার সাধারণ মানুষের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আমাদের এখনে মান্দিয়ার একটা বড় বাজার আছে। এখানে ধান-পাটসহ বিভিন্ন ফসল বিক্রি করার জন্য প্রায় দুই থেকে তিন কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হয়।’

মান্দিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমাদের এখানের এই ভাঙা ব্রিজটি আমি দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি। এখানে এসে বিভিন্ন গাড়ি আটকে থাকে। এছাড়া প্রতিনিয়তই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। এছাড়াও আশপাশের প্রায় প্রতিটি ব্রিজই ভাঙা। এলাকার মানুষের আর কোনো উপায় না থাকায় ঝুকিপূর্ণ এসব ব্রিজ দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। কয়েকদিন আগে ব্রিজে একটি গাড়ি উল্টে একজন গুরুতর আহত হয়েছিল।’
ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রধান সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালেব বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের আওতায় ঝিনাইদহে প্রধান, সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি ৫২০ কিলোমিটার খালের ওপর ১৯৬৫ সালে ব্রিজগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। এ সমস্যা সমাধানের জন্য উপর মহলে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করছি অচিরেই ব্রিজগুলোর নির্মাণকাজ শুরু হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

৫৮ বছর আগে নির্মিত ঝিনাইদহ পাউবোর দুই শতাধিক ব্রিজের ভগ্নদশা

আপলোড টাইম : ০৭:৪১:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেল ও খালের প্রায় দুই শতাধিক ব্রিজ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নির্মাণের পর আর কখনও সংস্কার না করায় এখন ব্রিজগুলো মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। বেহাল ও ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজগুলো দিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হতে হচ্ছে ছোট-বড় যানবাহন, স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকদের। এতে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। দ্রুত এসব ব্রিজ সংস্কারের দাবি করছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার বেলতলা, হরিশপুর, কালাপাহাড়ীয়া, শ্রীপুর, ধুলিয়া, রামনগর, কুলবাড়ীয়া, সাতব্রিজ আন্দুলিয়া, পোলতাডাঙ্গা, চটকাবাড়ীয়া, পার্বতীপুর ও শুড়া গ্রামসহ অনেক এলাকায় ব্রিজ ভেঙে গেছে প্রায় ১৫ বছর আগে। স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকেরা কাঠ ও বাঁশ দিয়ে মেরামত করে কোনো মতে চলাচল করে ব্রিজগুলো দিয়ে। তবে মাঠ থেকে ফসল আনতে হলে ঘুরতে হয় প্রায় ৫ কিলোমিটার পথ। জোড়াদহ, ফসলি, রঘুথানপুর তাহেরহুদা ইউনিয়নের হাজারো মানুষ এদিক দিয়ে চলাচল করলেও ব্রিজটি সংস্কারে নেই কোনো উদ্যোগ। পাশের ফুলবাড়িয়া গ্রামের ব্রিজটি ভেঙেছে দেড় বছর আগে। ব্রিজের মাঝখানে বড় ছিদ্র হওয়ায় পারাপার হচ্ছে না বড় কোনো যানবাহন। কোনো মতে ভ্যান, মোটরসাইকেল পার হলেও প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা

হরিণাকুণ্ডুর মতো পার্শ্ববর্তী উপজেলা শৈলকুপা ও সদরের অধিকাংশ ব্রিজের একই দশা। ব্রিজগুলো ভেঙে যাওয়ায় স্থানীয়দের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত এগুলো সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

বেলতলা গ্রামের মোহাম্মাদ আলী জানান, ‘এই ব্রিজটি ১৪ থেকে ১৫ বছর ধরে ভেঙে পড়ে আছে। এটা মেরামতের জন্য কেউ তদারকি করে না। মাঝে মধ্যে কিছু লোকজন এসে আমাদের আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না। এ ব্রিজটির কারণে আমাদের এলাকার সাধারণ মানুষের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আমাদের এখনে মান্দিয়ার একটা বড় বাজার আছে। এখানে ধান-পাটসহ বিভিন্ন ফসল বিক্রি করার জন্য প্রায় দুই থেকে তিন কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হয়।’

মান্দিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমাদের এখানের এই ভাঙা ব্রিজটি আমি দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি। এখানে এসে বিভিন্ন গাড়ি আটকে থাকে। এছাড়া প্রতিনিয়তই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। এছাড়াও আশপাশের প্রায় প্রতিটি ব্রিজই ভাঙা। এলাকার মানুষের আর কোনো উপায় না থাকায় ঝুকিপূর্ণ এসব ব্রিজ দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। কয়েকদিন আগে ব্রিজে একটি গাড়ি উল্টে একজন গুরুতর আহত হয়েছিল।’
ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রধান সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালেব বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের আওতায় ঝিনাইদহে প্রধান, সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি ৫২০ কিলোমিটার খালের ওপর ১৯৬৫ সালে ব্রিজগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। এ সমস্যা সমাধানের জন্য উপর মহলে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করছি অচিরেই ব্রিজগুলোর নির্মাণকাজ শুরু হবে।’