ইপেপার । আজ শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হরিণাকুণ্ডুতে রবিউল ইসলাম হত্যার নেপথ্যে পুরোনো বিরোধ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৩১:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ এপ্রিল ২০২৩
  • / ১৭ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:

আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জেরে খুন হয়েছে ইজিবাইক চালক রবিউল ইসলাম। গত শুক্রবার বিকেলে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুর একতারা মোড়ে তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে রাত ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিউলের মৃত্যু হয়। তিনি হরিণাকুণ্ডু পৌর এলাকার জোড়াপুকুরিয়া গ্রামের মিনহাজ উদ্দিনের ছেলে। এদিকে, রবিউল হত্যার পর প্রতিপক্ষের বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ঘরবাড়ি ছাড়া প্রতিপক্ষ আক্কাচ আলী গ্রুপের সমর্থকেরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

জানা গেছে, জোড়াপুকুরিয়া গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সাইফুল কমিশনার ও আক্কাচ আলীর নেতৃত্বে দুটি গ্রুপ রয়েছে। গ্রামবাসীর ভাষ্যমতে, ২০২১ সালে হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ নেতা আক্কাচ আলীকে কুপিয়ে জখম করে সাইফুল কমিশনার গ্রুপের লোকজন। এই হামলায় আক্কাচ আলী চিরতরে পঙ্গু ও বধির হয়ে যান। ওই সময় হামলার নেতৃত্ব দেন গত শুক্রবার রাতে খুন হওয়া রবিউল ইসলাম। তিনি আক্কাচ আলীকে কোপানো মামলার প্রধান আসামি। এদিকে, আক্কাচ আলীর ছেলে পলাশ এখন হরিণাকুণ্ডুু পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি। অনেকের ধারণা, বাবার ওপর হামলার প্রতিশোধ নিতেই রবিউলকে খুন করা হয়েছে। তবে হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন পলাশ।

প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্যমতে, গত শুক্রবারের হরিণাকুণ্ডু শহরের একতারা মোড়ে হামলার সময় কিশোর গ্যাং ও বেশির ভাগ স্কুল-কলেজে পড়ুয়ারা অংশ নেয়। হামলাকারীরা সবাই ছাত্রলীগ নেতা পলাশের সঙ্গে থাকেন বলে অভিযোগ। এদিকে সাইফুল কমিশনার গ্রুপের সমর্থক রবিউল ইসলাম নিহত হওয়ার খবরে জোড়াপুকুরিয়া গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাইফুল সমর্থকেরা আক্কাচ আলী, কবির উদ্দীন, হাসেম আলীম, মাছেম আলী, সদর উদ্দীন, কদর আলী, উজ্জল, আব্দুল কদ্দুস, সুজন, রাজন ও হায়বার আলীর বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। লুট করা হয়েছে আক্কাচ আলী, সুজন, রাজন ও আব্দুল কুদ্দুসসহ একাধিক ব্যক্তির গরু-ছাগল। গতকাল শনিবার সকালেও লুটপাট অব্যাহত ছিল।

ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুস সালাম বলেন, গত শুক্রবার রাতের আগুনে ৬টি বাড়ির কিছু ঘর পুড়ে গেছে। বিচুলি গাদায়ও আগুন লাগানো হয়েছিল। সরেজমিনে দেখা যায়, আক্কাচ আলী গ্রুপের সমর্থকেরা ঘরবাড়ি ছাড়া। বাড়িতে শুধু মহিলারা রয়েছে। এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন হরিণাকুণ্ডু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আক্তারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘জোড়াপুকুরিয়া গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করায় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে আতঙ্ক থাকলেও এখন পরিবেশ শান্ত। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ নিয়মিত টহল দিচ্ছে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

হরিণাকুণ্ডুতে রবিউল ইসলাম হত্যার নেপথ্যে পুরোনো বিরোধ

আপলোড টাইম : ১১:৩১:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ এপ্রিল ২০২৩

ঝিনাইদহ অফিস:

আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জেরে খুন হয়েছে ইজিবাইক চালক রবিউল ইসলাম। গত শুক্রবার বিকেলে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুর একতারা মোড়ে তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে রাত ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিউলের মৃত্যু হয়। তিনি হরিণাকুণ্ডু পৌর এলাকার জোড়াপুকুরিয়া গ্রামের মিনহাজ উদ্দিনের ছেলে। এদিকে, রবিউল হত্যার পর প্রতিপক্ষের বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ঘরবাড়ি ছাড়া প্রতিপক্ষ আক্কাচ আলী গ্রুপের সমর্থকেরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

জানা গেছে, জোড়াপুকুরিয়া গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সাইফুল কমিশনার ও আক্কাচ আলীর নেতৃত্বে দুটি গ্রুপ রয়েছে। গ্রামবাসীর ভাষ্যমতে, ২০২১ সালে হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ নেতা আক্কাচ আলীকে কুপিয়ে জখম করে সাইফুল কমিশনার গ্রুপের লোকজন। এই হামলায় আক্কাচ আলী চিরতরে পঙ্গু ও বধির হয়ে যান। ওই সময় হামলার নেতৃত্ব দেন গত শুক্রবার রাতে খুন হওয়া রবিউল ইসলাম। তিনি আক্কাচ আলীকে কোপানো মামলার প্রধান আসামি। এদিকে, আক্কাচ আলীর ছেলে পলাশ এখন হরিণাকুণ্ডুু পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি। অনেকের ধারণা, বাবার ওপর হামলার প্রতিশোধ নিতেই রবিউলকে খুন করা হয়েছে। তবে হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন পলাশ।

প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্যমতে, গত শুক্রবারের হরিণাকুণ্ডু শহরের একতারা মোড়ে হামলার সময় কিশোর গ্যাং ও বেশির ভাগ স্কুল-কলেজে পড়ুয়ারা অংশ নেয়। হামলাকারীরা সবাই ছাত্রলীগ নেতা পলাশের সঙ্গে থাকেন বলে অভিযোগ। এদিকে সাইফুল কমিশনার গ্রুপের সমর্থক রবিউল ইসলাম নিহত হওয়ার খবরে জোড়াপুকুরিয়া গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাইফুল সমর্থকেরা আক্কাচ আলী, কবির উদ্দীন, হাসেম আলীম, মাছেম আলী, সদর উদ্দীন, কদর আলী, উজ্জল, আব্দুল কদ্দুস, সুজন, রাজন ও হায়বার আলীর বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। লুট করা হয়েছে আক্কাচ আলী, সুজন, রাজন ও আব্দুল কুদ্দুসসহ একাধিক ব্যক্তির গরু-ছাগল। গতকাল শনিবার সকালেও লুটপাট অব্যাহত ছিল।

ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুস সালাম বলেন, গত শুক্রবার রাতের আগুনে ৬টি বাড়ির কিছু ঘর পুড়ে গেছে। বিচুলি গাদায়ও আগুন লাগানো হয়েছিল। সরেজমিনে দেখা যায়, আক্কাচ আলী গ্রুপের সমর্থকেরা ঘরবাড়ি ছাড়া। বাড়িতে শুধু মহিলারা রয়েছে। এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন হরিণাকুণ্ডু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আক্তারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘জোড়াপুকুরিয়া গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করায় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে আতঙ্ক থাকলেও এখন পরিবেশ শান্ত। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ নিয়মিত টহল দিচ্ছে।’