ইপেপার । আজ শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাক বাহিনীর সঙ্গে প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ দিবস আজ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৩:৩৮:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ এপ্রিল ২০২৩
  • / ২৫ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:

আজ পহেলা এপ্রিল। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক—হানাদার বাহিনীদের সঙ্গে ঝিনাইদহ জেলার বিষয়খালীতে মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ সংগঠিত হয়। দখলদার বাহিনী সংবাদ পায় ঝিনাইদহের মুক্তিযোদ্ধারা তাদেরকে আক্রমণ করার জন্য বিষয়খালী বাজারের বেগবতী নদীর তীরে জড় হচ্ছে। পহেলা এপ্রিলের এই দিনে পাক—বাহিনী যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে ভারি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝিনাইদহ দখলের উদ্দেশ্যে এগিয়ে আসতে থাকে। এ আক্রমণের খবর জেলার মুক্তিযোদ্ধারা পেয়ে যান। তারা যুদ্ধের অন্যতম স্থান হিসেবে বেছে নেন বিষয়খালীর বেগবতী নদীর তীর। পাক—বাহিনীকে রুখতে নদীর তীরের সেতু ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয় মুক্তিযোদ্ধারা। প্রায় ৮ ঘণ্টা তুমুল যুদ্ধ হয়। নদীর তীরের সম্মুখ যুদ্ধে ব্যর্থ হয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ফিরে যায় যশোর ক্যান্টনমেন্ট অভিমুখে। যাবার পথে পাক—হানাদার বাহিনী চালায় দেশের ইতিহাসে প্রথম ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ। আর সেই হত্যাযজ্ঞে শহিদ হন বিষয়খালী হাইস্কুলের ৭ম শ্রেণির তরুণ ছাত্র গোলাম মোস্তফা। এছাড়াও যারা সেদিন শহিদ হয়েছিলেন, তারা হলেন— বুদ্ধিজীবী মায়াময় ব্যানাজীর্, নূরুল ইসলাম মুন্সী, কাশেম আলী, শামছদ্দীন, জাহানারা বেগম, সিরাজ মিয়া, সদর উদ্দীন, দুখী মাহমুদ, আব্দুল কুদ্দুস, খলিলুর রহমান, কাজী নজির উদ্দিন, শমসের আলী ও বিষয়খালী গ্রামের কৃতী সন্তান মাহাতাব মুনিরসহ অসংখ্যা মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে পাক—বাহিনীকে রুখে দিতে তারা উৎসর্গ করে নিজেদের প্রাণ। তাইতো ঝিনাইদহের দামাল ছেলেরা দেশের ইতিহাসের যুদ্ধ বিজয়ের গৌরবের প্রথম মাইলফলক স্থাপন করেন এই বিষয়খালী যুদ্ধে।

এই যুদ্ধের কাহিনী প্রথমে বিবিসি, ফরাসী বার্তা সংস্থা ও অস্ট্রেলিয়া রেডিও এবিসিতে প্রচারিত হয়। এ সম্মুখ যুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন যশোর সেনানিবাসের বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক এবং ইপিআর—এর জোয়ানরা, ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের হাবিলদারাসহ স্থানীয় বিষয়খালী গ্রামের সংগ্রামী জনতা। এই দিনটি প্রতিবছর বিষয়খালী তথা ঝিনাইদহবাসী পালন করে আসছেন। শহিদদের স্মরণে নির্মিত হয়েছে বিষয়খালী বাজারে স্মৃতিসৌধ ও ‘প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ’ নামের মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কার্য। অভিযোগ আছে বিষয়খালী যুদ্ধে যারা শহিদ হয়েছিলেন, তাদের অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পান না। তালিকায়ও তাদের নাম নেই।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

পাক বাহিনীর সঙ্গে প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ দিবস আজ

আপলোড টাইম : ০৩:৩৮:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ এপ্রিল ২০২৩

ঝিনাইদহ অফিস:

আজ পহেলা এপ্রিল। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক—হানাদার বাহিনীদের সঙ্গে ঝিনাইদহ জেলার বিষয়খালীতে মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ সংগঠিত হয়। দখলদার বাহিনী সংবাদ পায় ঝিনাইদহের মুক্তিযোদ্ধারা তাদেরকে আক্রমণ করার জন্য বিষয়খালী বাজারের বেগবতী নদীর তীরে জড় হচ্ছে। পহেলা এপ্রিলের এই দিনে পাক—বাহিনী যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে ভারি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝিনাইদহ দখলের উদ্দেশ্যে এগিয়ে আসতে থাকে। এ আক্রমণের খবর জেলার মুক্তিযোদ্ধারা পেয়ে যান। তারা যুদ্ধের অন্যতম স্থান হিসেবে বেছে নেন বিষয়খালীর বেগবতী নদীর তীর। পাক—বাহিনীকে রুখতে নদীর তীরের সেতু ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয় মুক্তিযোদ্ধারা। প্রায় ৮ ঘণ্টা তুমুল যুদ্ধ হয়। নদীর তীরের সম্মুখ যুদ্ধে ব্যর্থ হয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ফিরে যায় যশোর ক্যান্টনমেন্ট অভিমুখে। যাবার পথে পাক—হানাদার বাহিনী চালায় দেশের ইতিহাসে প্রথম ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ। আর সেই হত্যাযজ্ঞে শহিদ হন বিষয়খালী হাইস্কুলের ৭ম শ্রেণির তরুণ ছাত্র গোলাম মোস্তফা। এছাড়াও যারা সেদিন শহিদ হয়েছিলেন, তারা হলেন— বুদ্ধিজীবী মায়াময় ব্যানাজীর্, নূরুল ইসলাম মুন্সী, কাশেম আলী, শামছদ্দীন, জাহানারা বেগম, সিরাজ মিয়া, সদর উদ্দীন, দুখী মাহমুদ, আব্দুল কুদ্দুস, খলিলুর রহমান, কাজী নজির উদ্দিন, শমসের আলী ও বিষয়খালী গ্রামের কৃতী সন্তান মাহাতাব মুনিরসহ অসংখ্যা মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে পাক—বাহিনীকে রুখে দিতে তারা উৎসর্গ করে নিজেদের প্রাণ। তাইতো ঝিনাইদহের দামাল ছেলেরা দেশের ইতিহাসের যুদ্ধ বিজয়ের গৌরবের প্রথম মাইলফলক স্থাপন করেন এই বিষয়খালী যুদ্ধে।

এই যুদ্ধের কাহিনী প্রথমে বিবিসি, ফরাসী বার্তা সংস্থা ও অস্ট্রেলিয়া রেডিও এবিসিতে প্রচারিত হয়। এ সম্মুখ যুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন যশোর সেনানিবাসের বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক এবং ইপিআর—এর জোয়ানরা, ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের হাবিলদারাসহ স্থানীয় বিষয়খালী গ্রামের সংগ্রামী জনতা। এই দিনটি প্রতিবছর বিষয়খালী তথা ঝিনাইদহবাসী পালন করে আসছেন। শহিদদের স্মরণে নির্মিত হয়েছে বিষয়খালী বাজারে স্মৃতিসৌধ ও ‘প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ’ নামের মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কার্য। অভিযোগ আছে বিষয়খালী যুদ্ধে যারা শহিদ হয়েছিলেন, তাদের অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পান না। তালিকায়ও তাদের নাম নেই।