ইপেপার । আজ বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুদের টাকা নিয়ে ছিন্নভিন্ন ব্যবসায়ীর পরিবার

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:১৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩
  • / ৪১ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:

সুদ কারবারির কাছ থেকে নিয়েছিলেন এক লাখ টাকা। এ পর্যন্ত দিয়েছেন ৫ লাখ টাকা। তারপরও কারবারি টাকা পান দাবি করে নিজের কাছে রাখা ব্লাঙ্ক চেকে ১৪ লাখ টাকা বসিয়ে মামলা করেছেন। সেই মামলায় ১০ মাস ধরে জেল খাটছেন এক ব্যবসায়ী। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার নিত্যানন্দনপুর ইউনিয়নের কাকুড়িয়াডাংগা গ্রামে।

গ্রামবাসী জানায়, অভাবের সংসার হলেও দুই ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী ও মাকে নিয়ে সুখেই ছিলেন কাকুড়িয়াডাংগা গ্রামের আলউদ্দিন বিশ^াসের ছেলে শহিদুল। সম্প্রতি ব্যবসা বড় করার জন্য শহিদুল স্থানীয় সুদখোর ওলিয়ার রহমানের কাছ থেকে ব্লাঙ্ক চেক দিয়ে এক লাখ টাকা নেন। সুদাসলসহ এ পর্যন্ত শহিদুল পরিশোধ করেছেন ৫ লাখ টাকা। কিন্তু খাতায় তার জের এখনো রয়েছে। সময়মতো সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ওলিয়ার সেই ব্লাঙ্ক চেকে ১৪ লাখ টাকা বসিয়ে ঠুকে দেয় মামলা। সেই মামলায় এখন জেলের ঘানি টানছেন শহিদুল। সুদখোর ওলিয়ার রহমান শৈলকুপা উপজেলার পাচপাখিয়া গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে। শহিদুল জেলে থাকায় তার কলেজ পড়ুয়া দুই ছেলে-মেয়ে বাড়ি ছেড়ে এক আত্মীয়ের ঘরে উঠেছে। সুদখোরের কাছ থেকে টাকা নিয়ে শহিদুলের পরিবার এখন ছিন্নভিন্ন।

শহিদুলের স্ত্রী সীমা ইসলাম বলেন, ‘পাচপাখিয়া গ্রামের ওলিয়ারের কাছ থেকে দুই বছর আগে আমার স্বামী দুটি ফাঁকা চেক দিয়ে এক লাখ টাকা নেন। পরবর্তীতে সুদাসলসহ ৫ লাখ টাকা পরিশোধও করেন। কিছুদিন পর ওলিয়ার আরও ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। আমার স্বামী টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ফাঁকা চেকের ওপর ১৪ লাখ টাকা বসিয়ে ঝিনাইদহের আদালতে চেকের মামলা করেন। আদালতের আদেশে আমার স্বামীকে গ্রেপ্তার করে ১০ মাস আটকে রাখা হয়েছে।’ সীমা ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘বিভিন্ন সময় সুদখোর ওলিয়ার হুমকি দিচ্ছেন। ফলে আমিসহ আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ভয়ে আমার কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়ে অন্যের বাড়িতে চলে গেছে।’

সুদখোর ওলিয়ার রহমান দাবি করছেন, ‘তার কাছে সুদে টাকা নয়, জমি বিক্রির টাকা নিয়ে অন্য লোকের কাছে বিক্রি করেছেন শহিদুল। এ জন্য মামলা করেছি। আমি কোনো সুদ কারবারি না। এলাকায় আমি একজন সৎ মানুষ। আমি এ বছর হজে যাব।’ এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় আমার কাছে একটা অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

সুদের টাকা নিয়ে ছিন্নভিন্ন ব্যবসায়ীর পরিবার

আপলোড টাইম : ০৮:১৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩

ঝিনাইদহ অফিস:

সুদ কারবারির কাছ থেকে নিয়েছিলেন এক লাখ টাকা। এ পর্যন্ত দিয়েছেন ৫ লাখ টাকা। তারপরও কারবারি টাকা পান দাবি করে নিজের কাছে রাখা ব্লাঙ্ক চেকে ১৪ লাখ টাকা বসিয়ে মামলা করেছেন। সেই মামলায় ১০ মাস ধরে জেল খাটছেন এক ব্যবসায়ী। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার নিত্যানন্দনপুর ইউনিয়নের কাকুড়িয়াডাংগা গ্রামে।

গ্রামবাসী জানায়, অভাবের সংসার হলেও দুই ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী ও মাকে নিয়ে সুখেই ছিলেন কাকুড়িয়াডাংগা গ্রামের আলউদ্দিন বিশ^াসের ছেলে শহিদুল। সম্প্রতি ব্যবসা বড় করার জন্য শহিদুল স্থানীয় সুদখোর ওলিয়ার রহমানের কাছ থেকে ব্লাঙ্ক চেক দিয়ে এক লাখ টাকা নেন। সুদাসলসহ এ পর্যন্ত শহিদুল পরিশোধ করেছেন ৫ লাখ টাকা। কিন্তু খাতায় তার জের এখনো রয়েছে। সময়মতো সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ওলিয়ার সেই ব্লাঙ্ক চেকে ১৪ লাখ টাকা বসিয়ে ঠুকে দেয় মামলা। সেই মামলায় এখন জেলের ঘানি টানছেন শহিদুল। সুদখোর ওলিয়ার রহমান শৈলকুপা উপজেলার পাচপাখিয়া গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে। শহিদুল জেলে থাকায় তার কলেজ পড়ুয়া দুই ছেলে-মেয়ে বাড়ি ছেড়ে এক আত্মীয়ের ঘরে উঠেছে। সুদখোরের কাছ থেকে টাকা নিয়ে শহিদুলের পরিবার এখন ছিন্নভিন্ন।

শহিদুলের স্ত্রী সীমা ইসলাম বলেন, ‘পাচপাখিয়া গ্রামের ওলিয়ারের কাছ থেকে দুই বছর আগে আমার স্বামী দুটি ফাঁকা চেক দিয়ে এক লাখ টাকা নেন। পরবর্তীতে সুদাসলসহ ৫ লাখ টাকা পরিশোধও করেন। কিছুদিন পর ওলিয়ার আরও ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। আমার স্বামী টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ফাঁকা চেকের ওপর ১৪ লাখ টাকা বসিয়ে ঝিনাইদহের আদালতে চেকের মামলা করেন। আদালতের আদেশে আমার স্বামীকে গ্রেপ্তার করে ১০ মাস আটকে রাখা হয়েছে।’ সীমা ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘বিভিন্ন সময় সুদখোর ওলিয়ার হুমকি দিচ্ছেন। ফলে আমিসহ আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ভয়ে আমার কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়ে অন্যের বাড়িতে চলে গেছে।’

সুদখোর ওলিয়ার রহমান দাবি করছেন, ‘তার কাছে সুদে টাকা নয়, জমি বিক্রির টাকা নিয়ে অন্য লোকের কাছে বিক্রি করেছেন শহিদুল। এ জন্য মামলা করেছি। আমি কোনো সুদ কারবারি না। এলাকায় আমি একজন সৎ মানুষ। আমি এ বছর হজে যাব।’ এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় আমার কাছে একটা অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’