ইপেপার । আজ বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় তিন দিনব্যাপী কৃষি মেলার উদ্বোধনকালে এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:২৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩
  • / ৩৩ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবার একই কৃষক সুবিধা পাওয়ায় বঞ্চিত নতুন কৃষকরা, ক্ষোভ প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বুহত্তর কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চল কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় কৃষি মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ মেলার উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। তিন দিনব্যাপী কৃষি মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভূঁইয়া, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গরিব রুহানি মাসুম ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহাজাদী মিলি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি বলেন, ‘আমি বাঙালি, বাংলা আমার ভাষা। এই বাঙালিদের বেঁচে থাকার মূল ভরসা হলো কৃষি। তাই কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। দেশ বাঁচলে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি বৃদ্ধি পাবে। এ দেশের কৃষকরা এখন বিনামূল্যে সার-বীজ পেয়ে অধিক হারে কৃষির ফলন বাড়াচ্ছে। এখন তাদের আর সার-বীজের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হয় না। মরতে হয় না গুলি খেয়ে।’

আলোচনা সভা শেষে অতিথিরা কৃষি মেলার ২০টি স্টল পরিদর্শন করেন। এরপর তাঁরা কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে পাটবীজ, আউশধান বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এ বছর সদর উপজেলায় ১ হাজার ৩৪০ জন কৃষককে ১ কেজি করে পাট বীজ, ৬ হাজার ৫৫০ জন কৃষককে ৫ কেজি করে আউশ ধানের বীজ, ১০ কেজি করে ডিএপি এবং ১০ কেজি করে এমওপি সার বিতরণ করা হয়।

তবে গত বছর যেসব কৃষককে বিনামূল্যে সার বীজ প্রদান কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছিল, এ বছরও তাদেরকেই সেই সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমিরুল রাসেল বলেন, ‘গতবার যে সকল কৃষক এই সুবিধা পেয়েছিলেন, এ বছর তারা পাচ্ছেন না। নতুন কৃষকদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।’ তবে এই সুবিধার আওতায় না আসা অনেক কৃষক বলছেন, যাদের যোগাযোগ সদর উপজেলা কৃষি অফিস বা কৃষি অফিসের রাসেলের সঙ্গে যত বেশি, তারা এসব সুবিধা বারবারই পেয়ে থাকেন। তারা আরও বলেন যে, ‘আমরা বাংলার খেটে খাওয়া সাধারণ কৃষক। আমরা কোনো দল-মত বুঝি না। আমরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কৃষিকাজ করি। কিন্তু সকলেই যদি পর্যায়ক্রমে এ সুবিধা পেয়ে থাকে, তাহলে কৃষকদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে স্বপ্ন দেখছেন, তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হবে।’

এদিকে জেলা সার বীজ মনিটরিং কমিটিতে একাধিকবার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে কোনো কৃষক প্রতিবার যেন একই রকম সুবিধা না পেয়ে থাকে, সেদিকে নজর রাখতে হবে। পর্যায়ক্রমে সকল কৃষকরাই যেন সরকারের সুবিধা ভোগ করতে পারে। তবে এ ধরনের সিদ্ধান্তকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নীতিনির্ধারক কর্মকর্তারা বারবারই বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে তাদের পছন্দমতো কৃষকদের নামে সরকারের এসব ভর্তুকির সার-বীজ প্রদান করে। বিষয়টি খতিয়ে দেখলে এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা মিলবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন অনেক কৃষক।

কৃষি মেলা ও সার-বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রাজীব হাসান কচি, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সভাপতি ও দৈনিক সময়ের সমীকরণ প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন, সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ, সাংবাদিক রিফাত রহমান, মফিজ জোয়ার্দ্দার, মাহফুজ মামুন, রুবায়েত বিন আজাদ সুস্থির প্রমুখ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় তিন দিনব্যাপী কৃষি মেলার উদ্বোধনকালে এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার

আপলোড টাইম : ১১:২৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩

প্রতিবার একই কৃষক সুবিধা পাওয়ায় বঞ্চিত নতুন কৃষকরা, ক্ষোভ প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বুহত্তর কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চল কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় কৃষি মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ মেলার উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। তিন দিনব্যাপী কৃষি মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভূঁইয়া, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গরিব রুহানি মাসুম ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহাজাদী মিলি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি বলেন, ‘আমি বাঙালি, বাংলা আমার ভাষা। এই বাঙালিদের বেঁচে থাকার মূল ভরসা হলো কৃষি। তাই কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। দেশ বাঁচলে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি বৃদ্ধি পাবে। এ দেশের কৃষকরা এখন বিনামূল্যে সার-বীজ পেয়ে অধিক হারে কৃষির ফলন বাড়াচ্ছে। এখন তাদের আর সার-বীজের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হয় না। মরতে হয় না গুলি খেয়ে।’

আলোচনা সভা শেষে অতিথিরা কৃষি মেলার ২০টি স্টল পরিদর্শন করেন। এরপর তাঁরা কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে পাটবীজ, আউশধান বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এ বছর সদর উপজেলায় ১ হাজার ৩৪০ জন কৃষককে ১ কেজি করে পাট বীজ, ৬ হাজার ৫৫০ জন কৃষককে ৫ কেজি করে আউশ ধানের বীজ, ১০ কেজি করে ডিএপি এবং ১০ কেজি করে এমওপি সার বিতরণ করা হয়।

তবে গত বছর যেসব কৃষককে বিনামূল্যে সার বীজ প্রদান কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছিল, এ বছরও তাদেরকেই সেই সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমিরুল রাসেল বলেন, ‘গতবার যে সকল কৃষক এই সুবিধা পেয়েছিলেন, এ বছর তারা পাচ্ছেন না। নতুন কৃষকদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।’ তবে এই সুবিধার আওতায় না আসা অনেক কৃষক বলছেন, যাদের যোগাযোগ সদর উপজেলা কৃষি অফিস বা কৃষি অফিসের রাসেলের সঙ্গে যত বেশি, তারা এসব সুবিধা বারবারই পেয়ে থাকেন। তারা আরও বলেন যে, ‘আমরা বাংলার খেটে খাওয়া সাধারণ কৃষক। আমরা কোনো দল-মত বুঝি না। আমরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কৃষিকাজ করি। কিন্তু সকলেই যদি পর্যায়ক্রমে এ সুবিধা পেয়ে থাকে, তাহলে কৃষকদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে স্বপ্ন দেখছেন, তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হবে।’

এদিকে জেলা সার বীজ মনিটরিং কমিটিতে একাধিকবার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে কোনো কৃষক প্রতিবার যেন একই রকম সুবিধা না পেয়ে থাকে, সেদিকে নজর রাখতে হবে। পর্যায়ক্রমে সকল কৃষকরাই যেন সরকারের সুবিধা ভোগ করতে পারে। তবে এ ধরনের সিদ্ধান্তকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নীতিনির্ধারক কর্মকর্তারা বারবারই বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে তাদের পছন্দমতো কৃষকদের নামে সরকারের এসব ভর্তুকির সার-বীজ প্রদান করে। বিষয়টি খতিয়ে দেখলে এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা মিলবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন অনেক কৃষক।

কৃষি মেলা ও সার-বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রাজীব হাসান কচি, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সভাপতি ও দৈনিক সময়ের সমীকরণ প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন, সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ, সাংবাদিক রিফাত রহমান, মফিজ জোয়ার্দ্দার, মাহফুজ মামুন, রুবায়েত বিন আজাদ সুস্থির প্রমুখ।