ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা ঘটনায় বাবার বিরুদ্ধে ছেলের মামলা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:০১:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩
  • / ২৯ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
আলমডাঙ্গার পোলবাগুন্দা গ্রামে ডালিয়া খাতুনকে হত্যার পর লাশ গভীর নলকূপে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় ছেলে জামিরুল ইসলাম বাদী হয়ে পিতা ফাণ্টুকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল শুক্রবার জামিরুল ইসলাম আলমডাঙ্গা থানায় উপস্থিত হয়ে হত্যা ও লাশ গুমের অপরাধে দণ্ডবিধির ৩০২/২০১ ধারায় মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর ১৪, তারিখ: ১৭/০৩/২০২৩। গতকাল শুক্রবার দুপুরে পুলিশ অভিযুক্ত ফাণ্টুকে আদালতে প্রেরণ করলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। এদিকে, গতকাল দুপুরেই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড ডালিয়ার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে।

এরপূর্বে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে স্ত্রীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার পর লাশ গুম করার ঘটনায় নিহতের স্বামী ফাণ্টুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল দুপুরে ছেলের করা মামলায় পুলিশ ফাণ্টুকে সিনিয়র জুডিসিয়াল দ্বিতীয় আদালতে হাজির করে। এসময় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জহুরা বেগমের নিকট স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ নলকূপের ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন ফাণ্টু। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফাণ্টু তার স্ত্রীকে পেঁয়াজ তোলার কথা বলে মাঠে নিয়ে যায়। রাত ১০টায় ফাণ্টু বাড়িতে ফিরে এলেও তার স্ত্রী বাড়িতে ফেরেন না। এসময় তাদের ছেলে জামিরুল মায়ের খবর জনতে চাইলে ফাণ্টু জামিরুলকে জানায় তার মা দাদীর বাড়িতে গিয়েছে এবং সকালে ফিরে আসবে। স্বাভাবিকভাবেই বাড়িতে রাত কাটান ফাণ্টু। কিন্তু বৃহস্পতিবার ভোরে কোদাল নিয়ে মাঠে যান তিনি। নিজের জমিজমা না থাকলেও ভোরে মাঠে যাওয়া নিয়ে অনেকেই সন্দেহ করেন। সকালে ফাণ্টুকে মাঠ থেকে ফিরতে দেখে জামিরুল। কোথা থেকে ফিরছে জানতে চাইলে ছেলের প্রশ্নের সঠিক কোনো উত্তর দেননি তিনি। এরই মধ্যে দুপুরে ফাণ্টু গা-ঢাকা দেয়। এতে পিতার প্রতি সন্দেহ হলে জামিরুল গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে মায়ের খোঁজ করতে মাঠের দিকে যায়। একপর্যায়ে লক্ষ্মীপুর গ্রামের গাবতলার মাঠের একটি ভুট্টাখেতে রক্ত ও চুল দেখতে পায় গ্রামবাসী। এসময় সেখানে থাকা গভীর নলকূপের মধ্যে মানুষের শরীর দেখতে পায় জামিরুলসহ স্থানীয়রা। এদিকে, ফাণ্টু তার স্ত্রীর গহনা বিক্রি করতে সরোজগঞ্জ বাজারে গেলে নিহত ডালিয়ার কয়েকজন নিকট আত্মীয় ফাণ্টুকে দেখে আটকে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ফাণ্টুকে সেখান থেকে আটক করে।

আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এ হত্যার ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামি একজনই। তাকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে তোলা হলে বিজ্ঞ বিচারকের সম্মুখে ফাণ্টু নিজ স্ত্রীকে হত্যার বিষয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন। নিহতের মরদেহ মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকালই গ্রাম্য কবরস্থানে তার দাফনকার্য সম্পন্ন হয়েছে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

আলমডাঙ্গায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা ঘটনায় বাবার বিরুদ্ধে ছেলের মামলা

আপলোড টাইম : ০৭:০১:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩

সমীকরণ প্রতিবেদন:
আলমডাঙ্গার পোলবাগুন্দা গ্রামে ডালিয়া খাতুনকে হত্যার পর লাশ গভীর নলকূপে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় ছেলে জামিরুল ইসলাম বাদী হয়ে পিতা ফাণ্টুকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল শুক্রবার জামিরুল ইসলাম আলমডাঙ্গা থানায় উপস্থিত হয়ে হত্যা ও লাশ গুমের অপরাধে দণ্ডবিধির ৩০২/২০১ ধারায় মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর ১৪, তারিখ: ১৭/০৩/২০২৩। গতকাল শুক্রবার দুপুরে পুলিশ অভিযুক্ত ফাণ্টুকে আদালতে প্রেরণ করলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। এদিকে, গতকাল দুপুরেই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড ডালিয়ার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে।

এরপূর্বে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে স্ত্রীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার পর লাশ গুম করার ঘটনায় নিহতের স্বামী ফাণ্টুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল দুপুরে ছেলের করা মামলায় পুলিশ ফাণ্টুকে সিনিয়র জুডিসিয়াল দ্বিতীয় আদালতে হাজির করে। এসময় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জহুরা বেগমের নিকট স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ নলকূপের ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন ফাণ্টু। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফাণ্টু তার স্ত্রীকে পেঁয়াজ তোলার কথা বলে মাঠে নিয়ে যায়। রাত ১০টায় ফাণ্টু বাড়িতে ফিরে এলেও তার স্ত্রী বাড়িতে ফেরেন না। এসময় তাদের ছেলে জামিরুল মায়ের খবর জনতে চাইলে ফাণ্টু জামিরুলকে জানায় তার মা দাদীর বাড়িতে গিয়েছে এবং সকালে ফিরে আসবে। স্বাভাবিকভাবেই বাড়িতে রাত কাটান ফাণ্টু। কিন্তু বৃহস্পতিবার ভোরে কোদাল নিয়ে মাঠে যান তিনি। নিজের জমিজমা না থাকলেও ভোরে মাঠে যাওয়া নিয়ে অনেকেই সন্দেহ করেন। সকালে ফাণ্টুকে মাঠ থেকে ফিরতে দেখে জামিরুল। কোথা থেকে ফিরছে জানতে চাইলে ছেলের প্রশ্নের সঠিক কোনো উত্তর দেননি তিনি। এরই মধ্যে দুপুরে ফাণ্টু গা-ঢাকা দেয়। এতে পিতার প্রতি সন্দেহ হলে জামিরুল গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে মায়ের খোঁজ করতে মাঠের দিকে যায়। একপর্যায়ে লক্ষ্মীপুর গ্রামের গাবতলার মাঠের একটি ভুট্টাখেতে রক্ত ও চুল দেখতে পায় গ্রামবাসী। এসময় সেখানে থাকা গভীর নলকূপের মধ্যে মানুষের শরীর দেখতে পায় জামিরুলসহ স্থানীয়রা। এদিকে, ফাণ্টু তার স্ত্রীর গহনা বিক্রি করতে সরোজগঞ্জ বাজারে গেলে নিহত ডালিয়ার কয়েকজন নিকট আত্মীয় ফাণ্টুকে দেখে আটকে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ফাণ্টুকে সেখান থেকে আটক করে।

আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এ হত্যার ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামি একজনই। তাকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে তোলা হলে বিজ্ঞ বিচারকের সম্মুখে ফাণ্টু নিজ স্ত্রীকে হত্যার বিষয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন। নিহতের মরদেহ মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকালই গ্রাম্য কবরস্থানে তার দাফনকার্য সম্পন্ন হয়েছে।’