ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জীবননগর ও আলমডাঙ্গার ৮ ইউনিয়নে ভোটের লড়াই আজ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:০৯:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩
  • / ৯৯ বার পড়া হয়েছে

অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মাঠে থাকবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা

 

সমীকরণ প্রতিবেদন:
অপেক্ষার প্রহর শেষ। জীবননগর উপজেলার ছয়টি ও আলমডাঙ্গা উপজেলার দুটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আজ বৃহস্পতিবার। জীবননগরের উথলী, কেডিকে, মনোহরপুর, বাঁকা, হাসাদাহ ও রায়পুর এবং আলমডাঙ্গার নাগদাহ ও আইলহাঁস ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এসব ইউনিয়নে প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট হবে। এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতঃমধ্যে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)সহ নির্বাচনী সামগ্রী। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নির্বাচনী এলাকায় থাকবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার সহযোগিতা চেয়েছে ইসি। একইসঙ্গে ভোটারদের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগেরও অনুরোধ করেছে ইসি। এদিকে, জীবননগর উপজেলার ইউনিয়নসমূহের ভোট পর্যবেক্ষণ করবেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান। গতকাল তিনি চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছান।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, আলমডাঙ্গা উপজেলার ২টি ইউনিয়নে ১৮টি কেন্দ্রে এবং জীবননগর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ৫৪টি ভোটকেন্দ্রের ২৬১টি ভোটকক্ষে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। নির্বাচনে ৫৪টি কেন্দ্রে ১ জন প্রিজাইডিং অফিসার ও ২ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতিকেন্দ্রে ২ জন করে মোট ৫২২ জন পোলিং অফিসার থাকবেন। প্রতিটি ভোটকক্ষে ১টি করে ২৬১টি ইভিএম মেশিন থাকবে। এছাড়াও প্রতিটি কেন্দ্রে ১টি করে মোট ১৩০টি অতিরিক্ত ইভিএম মেশিন থাকবে বলেও জানান উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মেজর আহাম্মেদ। তিনি আরও জানান, কোনো কারণে ইভিএম মেশিনে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে বিকল্প ইভিএম মেশিনে ভোট হবে।

এদিকে, চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা ছিল প্রতিটি ইউনিয়নের হাট-বাজার থেকে শুরু করে এলাকার অলিগলি। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় বাধা দেওয়া ও কর্মীদের ওপর হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় সুষ্ঠ নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণ হবে কিনা, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশসহ নানা হুমকি ও প্রাণনাশের অভিযোগে জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। গত মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় রায়পুর গ্রামের নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই ইউনিয়ন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রশীদ শাহ্। এর আগে ১১ মার্চ একই অভিযোগে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন উথলী ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবজালুর রহমান ধীরু। ৯ মার্চ হাসাদহ ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইসরাইল হোসেন জীবননগর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সুষ্ঠু নির্বাচন ও কর্মীদের জীবন ও পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করেন। একই চিত্র আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ও আইলহাঁস ইউনিয়নে।

আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ইউপিতে মোট ভোটার ১০ হাজার ৩৫৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬ হাজার ৭৮১ এবং নারী ৩ হাজার ৫৭৬ জন। নাগদাহ ইউপিতে মোট ৯ চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. হায়াত আলী (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী দারুস সালাম (মোটরসাইকেল), আলমগীর হোসেন (রজনীগন্ধা), মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ (আনারস), মোহাম্মদ আতিকুর রহমান (ঘোড়া), আওয়ালুজ্জামান (অটোরিকশা), মো. মিশর আলী (টেলিফোন), মোহাম্মদ এজাজ ইমতিয়াজ বিপুল (চশমা) এবং মোহাম্মদ আবুল হোসেন (টেবিল ফ্যান)। আইলহাঁস ইউপিতে মোট ভোটার ১২ হাজার ৪৫৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬ হাজার ৩১০ এবং নারী ৬ হাজার ১৪৮ জন। দুটি ইউনিয়নের মোট ১৮টি ভোট কেন্দ্র। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. জাহিদুল ইসলাম বাদল (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ বিল্লাল গনি (আনারস) ও মিনাজ উদ্দিন বিশ্বাস (চশমা)।

জীবননগর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ৮৩ হাজার ৭৮৫ জন। এর মধ্যে উথলী ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৫ হাজার ১৫৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৬১৪ জন এবং নারী ভোটার ৭ হাজার ৫৩৯ জন। উথলী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচজন। এরা হলেন- নৌকা প্রতীকের মো. আব্দুল হান্নান, মো. আফজালুর রহমান ধীরু (আনারস), মো. আবুল কালাম আজাদ (মোটরসাইকেল), মো. আব্বাস আলী (চশমা) ও মো. শাখাওয়াত হোসেন (ঘোড়া)। কেডিকে ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৮৯৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৬৯২ জন এবং নারী ভোটার ৬ হাজার ৯০২ জন। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা করছেন তিনজন। এরা হলেন- নৌকা প্রতীকের মো. খাইরুল বাশার শিপলু, তানভির হোসেন রাজিব (আনারস) ও মো. মহিবুল ইসলাম ছোবদুল (মোটরসাইকেল)। মনোহরপুর ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৩ হাজার ৪৬১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৭৮৩ জন ও নারী ভোটার ৬ হাজার ৬৭৮ জন। মনোহরপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. সোহরাব হোসেন খান (নৌকা), মো. কামরুজ্জামান (আনারস) ও মো. আব্দুল নাঈম (হাতপাখা)।

বাঁকা ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১৫ হাজার ১৪৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৫৮৪ জন ও নারী ভোটার ৭ হাজার ৫৬১ জন। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয়জন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. আব্দুল কাদের প্রধান (নৌকা), শাহাবুদ্দিন মালিতা (চশমা), আবুল কাশেম মুন্সী (ঘোড়া), রাজা আহম্মেদ (আনারস), মাওলানা হাফিজুর রহমান (মোটরসাইকেল) এবং তরিকুল ইসলাম (লাঙল)। হাসাদাহ ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৫ হাজার ৮৫৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৯০১ জন ও নারী ভোটার ৭ হাজার ৯৫৫ জন। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয়জন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. রবিউল ইসলাম বিশ্বাস (নৌকা), সোহরাব বিশ্বাস (চশমা), মো. ইসরাইল হুসাইন (মোটরসাইকেল), মো. শামসুল আলম (আনারস), মো. মতিয়ার রহমান (টেবিল ফ্যান) ও মো. বাবুল আক্তার ঘোড়া। রায়পুর ইউনিয়নে মোট ভোটার ১০ হাজার ২৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ হাজার ২৫৭ জন এবং নারী ভোটার ৫ হাজার ১৯ জন। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচজন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. তাহাজ্জাৎ হোসেন মির্জা (নৌকা), আব্দুর রশিদ শাহ (টেবিল ফ্যান), মো. আব্দুল হান্নান (মোটরসাইকেল), মো. সাজ্জাদ হোসেন (আনারস) ও মো. সাজ্জাদ বিশ্বাস (চশমা)।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও ইউপি নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার কামরুল হাসান বলেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি শেষ। কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী সামগ্রীও পৌঁছে গেছে। প্রিজাইডিং অফিসারসহ সবাই যার যার দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। নির্বাচনের বিষয়ে কোনো ধরনের আশঙ্কার কিছু নেই। ভোটাররা অবাধ ও নির্বিঘ্নে নির্বাচনে অংশ নেবেন। তাদের কোনো অসুবিধা হবে না। এছাড়াও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ৬ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ৬টি ম্যাজিস্ট্রেট টিম ও ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। সবার সহযোগিতা পেলে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব হবে।

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

জীবননগর ও আলমডাঙ্গার ৮ ইউনিয়নে ভোটের লড়াই আজ

আপলোড টাইম : ০৪:০৯:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩

অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মাঠে থাকবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা

 

সমীকরণ প্রতিবেদন:
অপেক্ষার প্রহর শেষ। জীবননগর উপজেলার ছয়টি ও আলমডাঙ্গা উপজেলার দুটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আজ বৃহস্পতিবার। জীবননগরের উথলী, কেডিকে, মনোহরপুর, বাঁকা, হাসাদাহ ও রায়পুর এবং আলমডাঙ্গার নাগদাহ ও আইলহাঁস ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এসব ইউনিয়নে প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট হবে। এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতঃমধ্যে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)সহ নির্বাচনী সামগ্রী। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নির্বাচনী এলাকায় থাকবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার সহযোগিতা চেয়েছে ইসি। একইসঙ্গে ভোটারদের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগেরও অনুরোধ করেছে ইসি। এদিকে, জীবননগর উপজেলার ইউনিয়নসমূহের ভোট পর্যবেক্ষণ করবেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান। গতকাল তিনি চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছান।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, আলমডাঙ্গা উপজেলার ২টি ইউনিয়নে ১৮টি কেন্দ্রে এবং জীবননগর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ৫৪টি ভোটকেন্দ্রের ২৬১টি ভোটকক্ষে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। নির্বাচনে ৫৪টি কেন্দ্রে ১ জন প্রিজাইডিং অফিসার ও ২ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতিকেন্দ্রে ২ জন করে মোট ৫২২ জন পোলিং অফিসার থাকবেন। প্রতিটি ভোটকক্ষে ১টি করে ২৬১টি ইভিএম মেশিন থাকবে। এছাড়াও প্রতিটি কেন্দ্রে ১টি করে মোট ১৩০টি অতিরিক্ত ইভিএম মেশিন থাকবে বলেও জানান উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মেজর আহাম্মেদ। তিনি আরও জানান, কোনো কারণে ইভিএম মেশিনে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে বিকল্প ইভিএম মেশিনে ভোট হবে।

এদিকে, চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা ছিল প্রতিটি ইউনিয়নের হাট-বাজার থেকে শুরু করে এলাকার অলিগলি। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় বাধা দেওয়া ও কর্মীদের ওপর হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় সুষ্ঠ নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণ হবে কিনা, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশসহ নানা হুমকি ও প্রাণনাশের অভিযোগে জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। গত মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় রায়পুর গ্রামের নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই ইউনিয়ন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রশীদ শাহ্। এর আগে ১১ মার্চ একই অভিযোগে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন উথলী ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবজালুর রহমান ধীরু। ৯ মার্চ হাসাদহ ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইসরাইল হোসেন জীবননগর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সুষ্ঠু নির্বাচন ও কর্মীদের জীবন ও পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করেন। একই চিত্র আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ও আইলহাঁস ইউনিয়নে।

আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ইউপিতে মোট ভোটার ১০ হাজার ৩৫৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬ হাজার ৭৮১ এবং নারী ৩ হাজার ৫৭৬ জন। নাগদাহ ইউপিতে মোট ৯ চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. হায়াত আলী (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী দারুস সালাম (মোটরসাইকেল), আলমগীর হোসেন (রজনীগন্ধা), মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ (আনারস), মোহাম্মদ আতিকুর রহমান (ঘোড়া), আওয়ালুজ্জামান (অটোরিকশা), মো. মিশর আলী (টেলিফোন), মোহাম্মদ এজাজ ইমতিয়াজ বিপুল (চশমা) এবং মোহাম্মদ আবুল হোসেন (টেবিল ফ্যান)। আইলহাঁস ইউপিতে মোট ভোটার ১২ হাজার ৪৫৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬ হাজার ৩১০ এবং নারী ৬ হাজার ১৪৮ জন। দুটি ইউনিয়নের মোট ১৮টি ভোট কেন্দ্র। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. জাহিদুল ইসলাম বাদল (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ বিল্লাল গনি (আনারস) ও মিনাজ উদ্দিন বিশ্বাস (চশমা)।

জীবননগর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ৮৩ হাজার ৭৮৫ জন। এর মধ্যে উথলী ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৫ হাজার ১৫৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৬১৪ জন এবং নারী ভোটার ৭ হাজার ৫৩৯ জন। উথলী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচজন। এরা হলেন- নৌকা প্রতীকের মো. আব্দুল হান্নান, মো. আফজালুর রহমান ধীরু (আনারস), মো. আবুল কালাম আজাদ (মোটরসাইকেল), মো. আব্বাস আলী (চশমা) ও মো. শাখাওয়াত হোসেন (ঘোড়া)। কেডিকে ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৮৯৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৬৯২ জন এবং নারী ভোটার ৬ হাজার ৯০২ জন। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা করছেন তিনজন। এরা হলেন- নৌকা প্রতীকের মো. খাইরুল বাশার শিপলু, তানভির হোসেন রাজিব (আনারস) ও মো. মহিবুল ইসলাম ছোবদুল (মোটরসাইকেল)। মনোহরপুর ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৩ হাজার ৪৬১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৭৮৩ জন ও নারী ভোটার ৬ হাজার ৬৭৮ জন। মনোহরপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. সোহরাব হোসেন খান (নৌকা), মো. কামরুজ্জামান (আনারস) ও মো. আব্দুল নাঈম (হাতপাখা)।

বাঁকা ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১৫ হাজার ১৪৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৫৮৪ জন ও নারী ভোটার ৭ হাজার ৫৬১ জন। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয়জন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. আব্দুল কাদের প্রধান (নৌকা), শাহাবুদ্দিন মালিতা (চশমা), আবুল কাশেম মুন্সী (ঘোড়া), রাজা আহম্মেদ (আনারস), মাওলানা হাফিজুর রহমান (মোটরসাইকেল) এবং তরিকুল ইসলাম (লাঙল)। হাসাদাহ ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৫ হাজার ৮৫৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৯০১ জন ও নারী ভোটার ৭ হাজার ৯৫৫ জন। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয়জন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. রবিউল ইসলাম বিশ্বাস (নৌকা), সোহরাব বিশ্বাস (চশমা), মো. ইসরাইল হুসাইন (মোটরসাইকেল), মো. শামসুল আলম (আনারস), মো. মতিয়ার রহমান (টেবিল ফ্যান) ও মো. বাবুল আক্তার ঘোড়া। রায়পুর ইউনিয়নে মোট ভোটার ১০ হাজার ২৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ হাজার ২৫৭ জন এবং নারী ভোটার ৫ হাজার ১৯ জন। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচজন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. তাহাজ্জাৎ হোসেন মির্জা (নৌকা), আব্দুর রশিদ শাহ (টেবিল ফ্যান), মো. আব্দুল হান্নান (মোটরসাইকেল), মো. সাজ্জাদ হোসেন (আনারস) ও মো. সাজ্জাদ বিশ্বাস (চশমা)।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও ইউপি নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার কামরুল হাসান বলেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি শেষ। কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী সামগ্রীও পৌঁছে গেছে। প্রিজাইডিং অফিসারসহ সবাই যার যার দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। নির্বাচনের বিষয়ে কোনো ধরনের আশঙ্কার কিছু নেই। ভোটাররা অবাধ ও নির্বিঘ্নে নির্বাচনে অংশ নেবেন। তাদের কোনো অসুবিধা হবে না। এছাড়াও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ৬ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ৬টি ম্যাজিস্ট্রেট টিম ও ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। সবার সহযোগিতা পেলে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব হবে।