ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কার্পাসডাঙ্গায় সড়ক সংস্কারকাজে অনিয়মের অভিযোগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৩:৫৮:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩
  • / ২৭ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, দামুড়হুদা:
দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়ক সংস্কারকাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কাজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই উপজেলার কোমরপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা এম মফিজুর রহমান সড়ক থেকে উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শুরু থেকেই সড়কে নিম্নমানের কাজ হচ্ছিল। বাধা উপেক্ষা করে ঠিকাদার কাজ অব্যহত রেখেছিল। তবে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বলছে, কার্যাদেশ অনুযায়ীই ঠিকাদার কাজ করেছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সড়কের বিটুমিন ও কার্পেটিং তুলে ল্যাবে পরীক্ষা করা হবে।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের কোমরপুর সড়কের ৯১৪ মিটার পুনরায় সংস্কারের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এ কাজের ঠিকাদারি পায় চুয়াডাঙ্গার শেখ ট্রেডার্স। ২০২৩ সালের প্রথম দিকে কাজ শুরু হয়ে শেষ হয়েছে চলতি মাসের ১০ তারিখে। এলজিইডি কার্যাদেশ অনুযায়ী শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের জুনে। গ্রামীণ সড়ক নির্মাণের আওতায় এ সংস্কারকাজের দেখভালের দায়িত্বে ছিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি দামুড়হুদা)। সংস্কারকাজ শুরুর পর থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় লোকজন একাধিকার উপজেলা প্রকৌশলীকে জানালেও কোনো প্রতিকার মেলেনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের পাথর, ইট, বালু, খোয়া ও ম্যাকাডম দিয়ে কাজ করছিলেন ঠিকাদার। এর ফলে কাজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের পরই হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে আসছে সড়কের পিচ। নিম্নমানের এই কাজ দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় লোকজন বলেন, নতুন সড়কের বিভিন্ন স্থানের কিছু অংশে পাতলা পিচ উঠে যাচ্ছে।

কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মনিরুজ্জামান মণ্টু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,‘ যখন এই সড়কের খোড়াখুড়ির কাজ চলছিল, তখন আমি কাজের অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে তদারকি করতে আসি। এসে নিম্নমানের ইট-পাথর বিটুমিন ব্যবহারের সত্যতা পাই। পরে বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদার ও সংশিষ্টদের সঙ্গে কথা বলি। পরে তারা জানায়- এখনো কাজ শেষ হয়নি। সঠিক মানের কাজ তারা বুঝিয়ে দেবে।’ কোমরপুর গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, সরকার এতো টাকা খরচ করে রাস্তা নির্মাণ করেছে, সেখানে ঠিকাদারদের দুর্নীতির কারণে সব টাকা জলে গেল। হাত দিয়ে রাস্তার কার্পেটিং তোলা যাচ্ছে, সেখানে ভারি যানবাহন কীভাবে চলাচল করবে? সব ঠিকাদার খেয়ে ফেলেছে। ঠিকাদারের জন্য সরকারের বদনাম হয়। নিম্নমানের পাথর, ইট, বালু, খোয়া ব্যবহার করে আমাদের এই রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী করে ঠিকাদার চলে গেছে। আমরা সরকারের কাছে এতো বড় অনিয়মের বিচার চাই।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, এই সড়কের দেখভালের দায়িত্বে আমার না। এই সড়কের দায়িত্বে ছিলেন উপসহকারী প্রকৌশলী আক্তারুল ইসলাম। আমরা সরেজমিনে দেখব, দেখার পর ব্যবস্থা নেব। ঠিকাদার হাফিজুর রহমান হাপু বলেন ‘আমাদের কাছ থেকে দামুড়হুদা উপজেলা এলজিইডি কাজ বুঝে নিয়েছে।’ দামুড়হুদা উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রশীদ জানান, সড়কটি পরিদর্শন করার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোকসানা মিতা জানান, সরেজমিনে দেখার পর যদি অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে কাজের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

কার্পাসডাঙ্গায় সড়ক সংস্কারকাজে অনিয়মের অভিযোগ

আপলোড টাইম : ০৩:৫৮:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩

প্রতিবেদক, দামুড়হুদা:
দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়ক সংস্কারকাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কাজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই উপজেলার কোমরপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা এম মফিজুর রহমান সড়ক থেকে উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শুরু থেকেই সড়কে নিম্নমানের কাজ হচ্ছিল। বাধা উপেক্ষা করে ঠিকাদার কাজ অব্যহত রেখেছিল। তবে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বলছে, কার্যাদেশ অনুযায়ীই ঠিকাদার কাজ করেছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সড়কের বিটুমিন ও কার্পেটিং তুলে ল্যাবে পরীক্ষা করা হবে।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের কোমরপুর সড়কের ৯১৪ মিটার পুনরায় সংস্কারের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এ কাজের ঠিকাদারি পায় চুয়াডাঙ্গার শেখ ট্রেডার্স। ২০২৩ সালের প্রথম দিকে কাজ শুরু হয়ে শেষ হয়েছে চলতি মাসের ১০ তারিখে। এলজিইডি কার্যাদেশ অনুযায়ী শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের জুনে। গ্রামীণ সড়ক নির্মাণের আওতায় এ সংস্কারকাজের দেখভালের দায়িত্বে ছিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি দামুড়হুদা)। সংস্কারকাজ শুরুর পর থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় লোকজন একাধিকার উপজেলা প্রকৌশলীকে জানালেও কোনো প্রতিকার মেলেনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের পাথর, ইট, বালু, খোয়া ও ম্যাকাডম দিয়ে কাজ করছিলেন ঠিকাদার। এর ফলে কাজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের পরই হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে আসছে সড়কের পিচ। নিম্নমানের এই কাজ দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় লোকজন বলেন, নতুন সড়কের বিভিন্ন স্থানের কিছু অংশে পাতলা পিচ উঠে যাচ্ছে।

কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মনিরুজ্জামান মণ্টু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,‘ যখন এই সড়কের খোড়াখুড়ির কাজ চলছিল, তখন আমি কাজের অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে তদারকি করতে আসি। এসে নিম্নমানের ইট-পাথর বিটুমিন ব্যবহারের সত্যতা পাই। পরে বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদার ও সংশিষ্টদের সঙ্গে কথা বলি। পরে তারা জানায়- এখনো কাজ শেষ হয়নি। সঠিক মানের কাজ তারা বুঝিয়ে দেবে।’ কোমরপুর গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, সরকার এতো টাকা খরচ করে রাস্তা নির্মাণ করেছে, সেখানে ঠিকাদারদের দুর্নীতির কারণে সব টাকা জলে গেল। হাত দিয়ে রাস্তার কার্পেটিং তোলা যাচ্ছে, সেখানে ভারি যানবাহন কীভাবে চলাচল করবে? সব ঠিকাদার খেয়ে ফেলেছে। ঠিকাদারের জন্য সরকারের বদনাম হয়। নিম্নমানের পাথর, ইট, বালু, খোয়া ব্যবহার করে আমাদের এই রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী করে ঠিকাদার চলে গেছে। আমরা সরকারের কাছে এতো বড় অনিয়মের বিচার চাই।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, এই সড়কের দেখভালের দায়িত্বে আমার না। এই সড়কের দায়িত্বে ছিলেন উপসহকারী প্রকৌশলী আক্তারুল ইসলাম। আমরা সরেজমিনে দেখব, দেখার পর ব্যবস্থা নেব। ঠিকাদার হাফিজুর রহমান হাপু বলেন ‘আমাদের কাছ থেকে দামুড়হুদা উপজেলা এলজিইডি কাজ বুঝে নিয়েছে।’ দামুড়হুদা উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রশীদ জানান, সড়কটি পরিদর্শন করার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোকসানা মিতা জানান, সরেজমিনে দেখার পর যদি অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে কাজের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।