ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোটের দিন সহিংসতার আশঙ্কায় চাপা আতঙ্কে ভোটাররা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:১৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩
  • / ৩২ বার পড়া হয়েছে

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ থাকবে ৬ স্তরের নিরাপত্তা : রিটার্নিং অফিসার

 

সমীকরণ প্রতিবেদন:

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা, নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর, হুমকি-ধমকি, প্রচারণায় বাধাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মধ্যদিয়ে গতকাল মধ্যরাতে শেষ হলো ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সকল প্রকার প্রচার-প্রচারণা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার আলমডাঙ্গা উপজেলার দুটি ও জীবননগর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। আজ কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে নির্বাচনী সরঞ্জাম। নির্বাচনে সার্বিক নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে, নির্বাচনে কে জিতবে তা নিয়ে এখন চলছে নানা সমীকরণ।

গতকাল প্রচার-প্রচারণার শেষ দিনে নির্বাচনী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শেষ মুহূর্তে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীরা। জয়ের জন্য নিজেদের মতো করে কৌশল নিয়ে এগোচ্ছেন তাঁরা। ভোটারদের সমর্থন আদায়ে দিয়েছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। তবে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি নয়, অতীত কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করেই জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের কথা জানিয়েছেন ভোটাররা। তবে কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা, নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর, প্রচারণায় বাধাসহ বিভিন্ন অভিযোগের পরেও মাঠে ভোটারদের কাছে ভোট চাইছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ চেয়ারম্যান প্রার্থী এজাজ ইমতিয়াজ জোয়ার্দ্দার বিপুল বলেন, ‘ওরা হুমকি-ধামকি দিচ্ছে, ভোট কেন্দ্রে যাওয়া যাবে না। গেলে নৌকায় ভোট দিতে হবে। আমার কর্মীরা বাড়ি ছাড়া। চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার কর্মীরা এই হুমকি দিচ্ছে। আমার এখানকার চারটি কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ।’ এসময় তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।

একই অভিযোগ করে জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহাবুদ্দিন মালিতা। তিনি বলেন, ‘প্রতিনিয়ত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। শুধু দিনের বেলায় প্রচারণা চালাচ্ছি। ভোটারদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, যদি ভোট দিতে যায়, তাহলে আগে নৌকায় সিল মারতে হবে।’ তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী।

হাসাদাহ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. ইসরাইল হুসাইন বলেন, ‘শ্রীরামপুরে প্রচারে গিয়েছিলাম। নৌকার লোকজন ৫০-৬০টা মোটরসাইকেল নিয়ে আমাদের ধাওয়া করেছে। এখন লুকিয়ে বেড়াচ্ছি। হাসাদাহে আসলে পরিস্থিতি দেখতে পাবেন।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও কর্মীরা ভোটের দিন জামায়াত-বিএনপির লোকজনকে কেন্দ্র না যেতে হুমকি দিচ্ছে।’

একই অভিযোগ করেন রায়পুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়াম্যান প্রার্থী মো. আব্দুল হান্নান, উথলী ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়াম্যান প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ, আবজালুর রহমান ধীরু, মনোহরপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়াম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামানসহ ৮ ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাঁরা বলছেন, বহিরাগতদের এনে হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। তবে সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ৮ ইউপির আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বলছেন, অন্যরা সুবিধা নিতে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ করছেন। ভোটের পরিবেশ শান্ত আছে। সুষ্ঠু ভোট হবে। এতে নৌকার জয় হবে।

গত কয়েকদিন সরেজমিন দেখা যায়, চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের ৬ ও আলমডাঙ্গার ২ ইউপি নির্বাচন নিয়ে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রচার মাইক ছাড়া প্রার্থীদের প্রচার তেমন চোখে পড়েনি। আর আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীদের অফিসে লোকজন চোখে পড়েনি। ভোটাররা বলছেন, ভোটের দিন যতই এগিয়ে আসছে, জীবননগর ও আলমডাঙ্গার ৮ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন নিয়ে সহিংসতার আশঙ্কা ততই বাড়ছে। আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠছে আওয়ামী লীগ। এ জন্য নাশকতার মামলায় ধরা হচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের। মারমুখী আচরণসহ করা হচ্ছে হামলা। ইতিমধ্যে নির্বাচন নিয়ে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ২০ জনের মতো। করা হয়েছে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন ও মামলা। ভোটাররা বলছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

জীবননগর উপজেলার ৩ ইউপিতে দায়িত্ব থাকা রিটার্নিং অফিসার কামরুল হাসান বলেন, ৬ ইউপিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৬ স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। থাকবে দুই প্লাটুন বিজিবি। এর সঙ্গে থাকবে ৬টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের দল।

রিটার্নিং অফিসার মেজর আহমেদ বলেন, প্রতিটি কেন্দই্র তাঁদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কোনো কেন্দ্র নেই। আর কয়েকটি ইউনিয়নে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষকে তিনি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেন। তিনি আরও বলেন, কোনো অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। নির্বাচন অফিস ভোটের দিন কঠোর ভূমিকা পালন করবে।

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রোকুনুজ্জামান বলেন, নির্বাচন বিধি অনুযায়ী সকল নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা হুমকি দিচ্ছে, তাদের তালিকা দেওয়ার জন্য প্রার্থীদের বলা হয়েছে।’ আর এ বিষয়ে জানতে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রনি আলম নূরকে ফোন করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন জানিয়ে পরে কথা বলতে বলেন। পরে তাঁকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি।

জীবননগর ও আলমডাঙ্গা উপজলো নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ৮ ইউনিয়নে ৭২টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা র্পযন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। প্রথমবাররে মতো জীবননগর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ইলকেট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হবে। ৬ ইউনিয়নে ৮৩ হাজার ৭৮৫ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪২ হাজার ১৩১ জন ও নারী ভোটার ৪১ হাজার ৬৫৪ জন। নির্বাচনে ৫৪টি কেন্দ্রে ৫৪ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ২৬১ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ৫২২ জন পোলিং এজেন্ট দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া ৩৯৫ জন পুলিশ সদস্য, আনসার ১ হাজার ২২৪ জন, দুই প্লাটুন বিজিবি, ডিবি, র‌্যাব, ডিএসবসিহ প্রশাসনকি কর্মকর্তারা নির্বাচনী মাঠে থাকবেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ভোটের দিন সহিংসতার আশঙ্কায় চাপা আতঙ্কে ভোটাররা

আপলোড টাইম : ০৮:১৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ থাকবে ৬ স্তরের নিরাপত্তা : রিটার্নিং অফিসার

 

সমীকরণ প্রতিবেদন:

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা, নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর, হুমকি-ধমকি, প্রচারণায় বাধাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মধ্যদিয়ে গতকাল মধ্যরাতে শেষ হলো ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সকল প্রকার প্রচার-প্রচারণা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার আলমডাঙ্গা উপজেলার দুটি ও জীবননগর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। আজ কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে নির্বাচনী সরঞ্জাম। নির্বাচনে সার্বিক নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে, নির্বাচনে কে জিতবে তা নিয়ে এখন চলছে নানা সমীকরণ।

গতকাল প্রচার-প্রচারণার শেষ দিনে নির্বাচনী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শেষ মুহূর্তে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীরা। জয়ের জন্য নিজেদের মতো করে কৌশল নিয়ে এগোচ্ছেন তাঁরা। ভোটারদের সমর্থন আদায়ে দিয়েছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। তবে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি নয়, অতীত কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করেই জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের কথা জানিয়েছেন ভোটাররা। তবে কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা, নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর, প্রচারণায় বাধাসহ বিভিন্ন অভিযোগের পরেও মাঠে ভোটারদের কাছে ভোট চাইছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ চেয়ারম্যান প্রার্থী এজাজ ইমতিয়াজ জোয়ার্দ্দার বিপুল বলেন, ‘ওরা হুমকি-ধামকি দিচ্ছে, ভোট কেন্দ্রে যাওয়া যাবে না। গেলে নৌকায় ভোট দিতে হবে। আমার কর্মীরা বাড়ি ছাড়া। চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার কর্মীরা এই হুমকি দিচ্ছে। আমার এখানকার চারটি কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ।’ এসময় তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।

একই অভিযোগ করে জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহাবুদ্দিন মালিতা। তিনি বলেন, ‘প্রতিনিয়ত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। শুধু দিনের বেলায় প্রচারণা চালাচ্ছি। ভোটারদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, যদি ভোট দিতে যায়, তাহলে আগে নৌকায় সিল মারতে হবে।’ তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী।

হাসাদাহ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. ইসরাইল হুসাইন বলেন, ‘শ্রীরামপুরে প্রচারে গিয়েছিলাম। নৌকার লোকজন ৫০-৬০টা মোটরসাইকেল নিয়ে আমাদের ধাওয়া করেছে। এখন লুকিয়ে বেড়াচ্ছি। হাসাদাহে আসলে পরিস্থিতি দেখতে পাবেন।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও কর্মীরা ভোটের দিন জামায়াত-বিএনপির লোকজনকে কেন্দ্র না যেতে হুমকি দিচ্ছে।’

একই অভিযোগ করেন রায়পুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়াম্যান প্রার্থী মো. আব্দুল হান্নান, উথলী ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়াম্যান প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ, আবজালুর রহমান ধীরু, মনোহরপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়াম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামানসহ ৮ ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাঁরা বলছেন, বহিরাগতদের এনে হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। তবে সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ৮ ইউপির আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বলছেন, অন্যরা সুবিধা নিতে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ করছেন। ভোটের পরিবেশ শান্ত আছে। সুষ্ঠু ভোট হবে। এতে নৌকার জয় হবে।

গত কয়েকদিন সরেজমিন দেখা যায়, চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের ৬ ও আলমডাঙ্গার ২ ইউপি নির্বাচন নিয়ে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রচার মাইক ছাড়া প্রার্থীদের প্রচার তেমন চোখে পড়েনি। আর আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীদের অফিসে লোকজন চোখে পড়েনি। ভোটাররা বলছেন, ভোটের দিন যতই এগিয়ে আসছে, জীবননগর ও আলমডাঙ্গার ৮ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন নিয়ে সহিংসতার আশঙ্কা ততই বাড়ছে। আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠছে আওয়ামী লীগ। এ জন্য নাশকতার মামলায় ধরা হচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের। মারমুখী আচরণসহ করা হচ্ছে হামলা। ইতিমধ্যে নির্বাচন নিয়ে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ২০ জনের মতো। করা হয়েছে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন ও মামলা। ভোটাররা বলছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

জীবননগর উপজেলার ৩ ইউপিতে দায়িত্ব থাকা রিটার্নিং অফিসার কামরুল হাসান বলেন, ৬ ইউপিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৬ স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। থাকবে দুই প্লাটুন বিজিবি। এর সঙ্গে থাকবে ৬টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের দল।

রিটার্নিং অফিসার মেজর আহমেদ বলেন, প্রতিটি কেন্দই্র তাঁদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কোনো কেন্দ্র নেই। আর কয়েকটি ইউনিয়নে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষকে তিনি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেন। তিনি আরও বলেন, কোনো অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। নির্বাচন অফিস ভোটের দিন কঠোর ভূমিকা পালন করবে।

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রোকুনুজ্জামান বলেন, নির্বাচন বিধি অনুযায়ী সকল নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা হুমকি দিচ্ছে, তাদের তালিকা দেওয়ার জন্য প্রার্থীদের বলা হয়েছে।’ আর এ বিষয়ে জানতে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রনি আলম নূরকে ফোন করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন জানিয়ে পরে কথা বলতে বলেন। পরে তাঁকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি।

জীবননগর ও আলমডাঙ্গা উপজলো নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ৮ ইউনিয়নে ৭২টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা র্পযন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। প্রথমবাররে মতো জীবননগর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ইলকেট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হবে। ৬ ইউনিয়নে ৮৩ হাজার ৭৮৫ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪২ হাজার ১৩১ জন ও নারী ভোটার ৪১ হাজার ৬৫৪ জন। নির্বাচনে ৫৪টি কেন্দ্রে ৫৪ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ২৬১ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ৫২২ জন পোলিং এজেন্ট দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া ৩৯৫ জন পুলিশ সদস্য, আনসার ১ হাজার ২২৪ জন, দুই প্লাটুন বিজিবি, ডিবি, র‌্যাব, ডিএসবসিহ প্রশাসনকি কর্মকর্তারা নির্বাচনী মাঠে থাকবেন।