ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কালীগঞ্জে সরকারি হচ্ছে ৭৮ শিক্ষক-কর্মচারীর চাকরি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৩৫:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৩৫ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ সরকারি মাহতাব উদ্দীন কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের চাকরি সরকারি হচ্ছে। ইতঃমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এখন বাকি আনুষ্ঠানিকতা। সেই মহেন্দ্রক্ষ হচ্ছে আগামীকাল রোববার। এদিন প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে এই প্রস্তাব উঠতে যাচ্ছে। এরপর প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলে শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি সরকারি হয়ে যাবে।

সরকারি মাহতাব উদ্দীন কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান জানান, কলেজের ৭৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীর চাকরি সরকারি হচ্ছে। তবে জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া ২২ জনের নাম এই তালিকায় নেই। তাদের ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা রয়েছে অনেকটা ধোঁয়াশায়। সূত্রমতে, একমাত্র অধ্যক্ষের সহায়তা ছাড়া তাদের চাকরি সরকারিকরণের পথ দীর্ঘ হবে। কিন্তু অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমানকে পদে পদে হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়ে তার সুপারিশ অর্জন কতটা সহজ হবে, তা ভবিষ্যৎ বলে দিবে বলে অনেকে মনে করছেন।

এদিকে দীর্ঘদিন পর মাহতাব উদ্দীন কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি সরকারি হওয়ায় স্টাফদের মাঝে আনন্দ-উল্লাস ছড়িয়ে পড়েছে। তারা দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘একমাত্র তাঁর সাহসিকতা ও দৃঢ়তায় দেশের ৪৮টি কলেজের ২ হাজার ৬৮৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীর পরিবারের উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে।’ এদিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ৪৮টি কলেজ ও দুটি স্কুলের মোট দুই হাজার ৬৮৮টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব সচিব কমিটির বৈঠকে উঠছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

সচিব কমিটির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এসব পদ সৃষ্টিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগ সম্মতি দিয়েছে। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন পেলেই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালে বিভিন্ন পর্যায়ে ৬৮০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (৩২৫ কলেজ ও ৩৫৫ স্কুল) সরকারি করা হয়। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। এর মধ্যে ৬৭৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীর চাকরি আত্তীকরণের লক্ষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (সরকারি মাধ্যমিক-১ অধিশাখা) আব্দুল মতিন বলেন, এরই মধ্যে ১৫০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (১০০ স্কুল ও ৫০ কলেজ) প্রায় ছয় হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর চাকরি সরকারীকরণ হয়ে গেছে। বাকি ৫২৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীর চাকরি সরকারি করার বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ চলছে। মামলাজনিত জটিলতায় একটি কলেজ ও একটি স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের বিষয়টি স্থগিত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৫২৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে গত ৫ ফেব্রয়ারি আরও ১০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী আত্তীকরণের লক্ষ্যে তিন হাজার ৯১১টি পদ সৃষ্টির অনুমোদন দেয় সচিব কমিটি। আর আগামী রোববার ৫০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুই হাজার ৬৮৮টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব সচিব কমিটির বৈঠকে উঠছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি হওয়ার পর শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে একাধিকবার নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। এদিকে জনপ্রশাসন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, সরকারি হওয়া দেশের বেসরকারি স্কুল ও কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি সরকারি হতে দেরি হলেও যেদিন থেকে প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের গেজেট হয়েছে সেদিন থেকেই তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

কালীগঞ্জে সরকারি হচ্ছে ৭৮ শিক্ষক-কর্মচারীর চাকরি

আপলোড টাইম : ০৮:৩৫:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

ঝিনাইদহ অফিস:

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ সরকারি মাহতাব উদ্দীন কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের চাকরি সরকারি হচ্ছে। ইতঃমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এখন বাকি আনুষ্ঠানিকতা। সেই মহেন্দ্রক্ষ হচ্ছে আগামীকাল রোববার। এদিন প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে এই প্রস্তাব উঠতে যাচ্ছে। এরপর প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলে শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি সরকারি হয়ে যাবে।

সরকারি মাহতাব উদ্দীন কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান জানান, কলেজের ৭৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীর চাকরি সরকারি হচ্ছে। তবে জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া ২২ জনের নাম এই তালিকায় নেই। তাদের ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা রয়েছে অনেকটা ধোঁয়াশায়। সূত্রমতে, একমাত্র অধ্যক্ষের সহায়তা ছাড়া তাদের চাকরি সরকারিকরণের পথ দীর্ঘ হবে। কিন্তু অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমানকে পদে পদে হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়ে তার সুপারিশ অর্জন কতটা সহজ হবে, তা ভবিষ্যৎ বলে দিবে বলে অনেকে মনে করছেন।

এদিকে দীর্ঘদিন পর মাহতাব উদ্দীন কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি সরকারি হওয়ায় স্টাফদের মাঝে আনন্দ-উল্লাস ছড়িয়ে পড়েছে। তারা দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘একমাত্র তাঁর সাহসিকতা ও দৃঢ়তায় দেশের ৪৮টি কলেজের ২ হাজার ৬৮৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীর পরিবারের উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে।’ এদিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ৪৮টি কলেজ ও দুটি স্কুলের মোট দুই হাজার ৬৮৮টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব সচিব কমিটির বৈঠকে উঠছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

সচিব কমিটির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এসব পদ সৃষ্টিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগ সম্মতি দিয়েছে। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন পেলেই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালে বিভিন্ন পর্যায়ে ৬৮০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (৩২৫ কলেজ ও ৩৫৫ স্কুল) সরকারি করা হয়। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। এর মধ্যে ৬৭৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীর চাকরি আত্তীকরণের লক্ষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (সরকারি মাধ্যমিক-১ অধিশাখা) আব্দুল মতিন বলেন, এরই মধ্যে ১৫০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (১০০ স্কুল ও ৫০ কলেজ) প্রায় ছয় হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর চাকরি সরকারীকরণ হয়ে গেছে। বাকি ৫২৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীর চাকরি সরকারি করার বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ চলছে। মামলাজনিত জটিলতায় একটি কলেজ ও একটি স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের বিষয়টি স্থগিত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৫২৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে গত ৫ ফেব্রয়ারি আরও ১০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী আত্তীকরণের লক্ষ্যে তিন হাজার ৯১১টি পদ সৃষ্টির অনুমোদন দেয় সচিব কমিটি। আর আগামী রোববার ৫০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুই হাজার ৬৮৮টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব সচিব কমিটির বৈঠকে উঠছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি হওয়ার পর শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে একাধিকবার নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। এদিকে জনপ্রশাসন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, সরকারি হওয়া দেশের বেসরকারি স্কুল ও কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি সরকারি হতে দেরি হলেও যেদিন থেকে প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের গেজেট হয়েছে সেদিন থেকেই তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন।